ধনাগম যোগটি অনুকূল। দুপুর থেকে কর্মের বাধা মুক্তি ও উন্নতি। শরীর-স্বাস্থ্য সমস্যার যোগ। ... বিশদ
বেলিয়াতোড়ের বাসিন্দা এই শিক্ষক বিষ্ণুপুর মানিকলাল হাইস্কুলে ইতিহাসের পাস গ্র্যাজুয়েট স্তরের শিক্ষক ছিলেন। ২০০৭ সালে তিনি চাকরি পাওয়ার পর সংসারের হাল ফেরে। নিজের বোন এবং কাকার মেয়েকেও বিয়ে দেন। শেষে বিয়ে করেন নিজেও। মাথার উপর ছাদটাও মজবুত করেন তিনি। এর পাশাপাশি নিজের উদ্যোগে মাস্টার ডিগ্রি এবং বিএড কোর্স করেন সোমনাথবাবু। তবে, তাঁর একমাত্র সমস্যা ছিল স্কুলে যাতায়াত।
এক যুবক অর্থের বিনিময়ে ঝুঁকি নিয়ে পাঁচালের জঙ্গল ধরে তাঁকে স্কুলে পৌঁছে দিতেন। তিনি অনুপস্থিত থাকলে সোমনাথবাবুকে স্কুল যেতে হতো সোনামুখী ঘুরে। এতে দূরত্ব বেড়ে হতো ১০০ কিমি। ২০১৬ সালে এসএলএসটির বিজ্ঞপ্তি বেরতেই মরিয়া হয়ে আবেদন করেন তিনি। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষক হিসেবে বাড়ির অনেকটাই কাছের স্কুলে যোগ দেওয়ার সুযোগ হয় তাঁর।
সোমনাথবাবু বলেন, ‘মজার বিষয় দেখুন, যিনি চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন, সেই বিচারপতি দেবাংশু বসাকের নির্দেশেই আমরা কর্মরত শিক্ষক হিসেবে চাকরিতে যোগদানের অনুমতি পেয়েছিলাম।’ তিনি আরও আক্ষেপ করেন, ‘দৃষ্টিহীন শিক্ষকদের নিয়ে একটা ধারণা থাকে, তাঁরা ঠিকমতো পড়াতে পারেন না। তবে, আমার সম্পর্কে দুটি স্কুলের পড়ুয়াদের কাছে খোঁজ নিয়ে দেখুন—শনিবার করে আমি বাড়তি ক্লাসও নিতাম। আমার এই লড়াই, কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা, সবই
ব্যর্থ হল।’
সোমনাথবাবুর মতো কয়েক হাজার শিক্ষক রয়েছেন যাঁরা বাড়ির কাছে বদলি পেতে অথবা উচ্চতর স্কেলে যাওয়ার জন্য ফের পরীক্ষায় বসেছিলেন। নতুন স্কুলও পেয়েছিলেন তাঁরা। শিক্ষাদপ্তর ইন-সার্ভিস শিক্ষকদের চাকরির কন্টিনিউয়েশন এবং নতুন পে ফিক্সেশনের সুযোগ দিয়েছে।
শিক্ষক সংগঠন এবিটিএর সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন বলেন, অযোগ্যদের জন্যই এই পরীক্ষিত এবং যোগ্য প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে গেল। এঁদের দায় সরকারকেও নিতে হবে।