সংবাদদাতা, কল্যাণী: বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে মতুয়া ভোট বরাবরই অন্যতম নির্ণায়ক শক্তি। এই কেন্দ্রের অন্তর্গত কল্যাণী, হরিণঘাটা সহ সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই বড় সংখ্যায় মতুয়ারা থাকেন। একটা সময় এসব এলাকায় তৃণমূলের দাপট থাকলেও গত লোকসভা নির্বাচন থেকে বিজেপির প্রভাব বাড়তে শুরু করে। গত বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপির রমরমা ছিল।  কল্যাণীতে ২ হাজার ২০৬ ভোটের ব্যবধানে তৃণমূল প্রার্থী অনিরুদ্ধ বিশ্বাসকে পরাজিত করেছিলেন বিজেপির অম্বিকা রায়। হরিণঘাটায় ১৫ হাজার ২০০ ভোটে তৃণমূলের নীলিমা নাগকে পরাজিত করেছিলেন বিজেপি প্রার্থী কবিয়াল অসীম সরকার। গত পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে মতুয়া বলয় হিসেবে পরিচিত এসব অঞ্চলে তৃণমূল হারানো জমি কিছুটা ফিরে পায়। ওই দু’টি নির্বাচনে অবশ্য দেদার ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ রয়েছে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে। এসবের মধ্যেই দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র দখলের অন্যতম দাবিদার জোড়াফুল ও পদ্মফুল শিবির। ইতিমধ্যেই তারা মতুয়া ভোটের অঙ্ক মেলাতে শুরু করে দিয়েছেন। বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী ছাড়াও আইএসএফ, বিএসপি ও এসইউসি’র প্রার্থীও রয়েছেন নির্বাচনের ময়দানে। 
কল্যাণী ও হরিণঘাটা বিধানসভায় মতুয়া ভোটে ধস নামার কারণেই তৃণমূলকে পিছিয়ে পড়তে হয়েছিল বলে মনে করেন অনেকে। এবারও বিজেপি বনগাঁয় ঠাকুরবাড়ির সদস্য শান্তনু ঠাকুরকে প্রার্থী করেছে। তৃণমূলের প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস মতুয়া নন। তবে মতুয়া পরিবারের সদস্যা মমতাবালা ঠাকুরকে আগেই টিকিট দিয়ে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে তৃণমূল। সিএএ কার্যত ব্যুমেরাং হয়ে যাওয়ায় বিজেপি কতটা মতুয়া ভোট ধরে রাখতে পারবে, সেই অঙ্ক মেলাতে শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। এই পরিস্থিতিতে মতুয়া ভোটের সিংগভাগ কোন দিকে যাবে, চলছে তার চুলচেরা বিশ্লেষণ। 
বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুর কোনও একটা পরিবারের হতে পারে না। মতুয়া ধর্মাবলম্বী এবং পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য তাঁরা যে কাজ করেছেন, তা সবাই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। তাই এটা কোনও ফ্যাক্টর হবে না আমার ক্ষেত্রে।’ কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় বলেন, ‘মতুয়ারা বরাবর বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন। আগামী দিনেও থাকবেন। তৃণমূল গোটা রাজ্যে কী করছে, সেটা মানুষ ভালোভাবেই জানেন।’