ব্যবসার গতি ও বেচাকেনার সঙ্গে লাভও বাড়বে। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। শত্রু সংখ্যা বাড়বে। ... বিশদ
তবে ব্যতিক্রম পুরাণে এবং বাস্তবেও আছে। পুরাণ মতে, একবার ইন্দ্রের বজ্র মহাবলী হনুমানকে প্রায় মেরে ফেলেছিল। কিন্তু তারপরে দেবতারা হনুমানকে বজ্র-প্রতিরোধী করে দেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘হনুমান’ হয়ে উঠেছিল তৃণমূল। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে আরও একবার সেই ভূমিকা নিতে পারলে ‘রাম-বাম’ তত্ত্ব হুগলির মাটিতে অন্তত ধুলোয় মিশে যাবে। হুগলির প্রান্তিক জেলা, পূর্ব বর্ধমান লাগোয়া পাণ্ডুয়া বিধানসভা কেন্দ্রের লড়াই দাঁড়িয়ে আছে ওই ব্যতিক্রমী সমীকরণেই। অন্তত রাজনৈতিক মহল তাই বলছে। পাণ্ডুয়ার প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের আমজাদ হোসেন অবশ্য বলেন, ‘রাম-বাম’-তত্ত্ব বানিয়ে তোলা হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে আমরা অনেক শক্তিশালী হয়েছি। পাণ্ডুয়া সেই প্রমাণ ইভিএমেই দেবে। বিজেপির হুগলির সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, মানুষ আমাদের চাইছে। ২০২৪ সালে পাণ্ডুয়া-বিজয় নিশ্চিত। তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান অসীমা পাত্র বলেন, রাম ও বাম, দুই দলের বোঝাপড়ার গল্প এবার চলবে না। মানুষ সব বুঝে ফেলেছে।
২০১১ সালের তীব্র সবুজ ঝড়েও পাণ্ডুয়ায় লাল পতাকা পতপতিয়ে উড়েছে। পাঁচবছর তৃণমূলের রাজ্য শাসনের পরে ২০১৬-র বিধানসভা ভোটেও বাম প্রার্থীই পাণ্ডুয়ায় জয়ী হন। ফুটবল তারকা রহিম নবীকে প্রার্থী করেও শাসক দল ম্যাচ বের করতে পারেনি। এহেন ‘লাল-গড়’ ২০১৯ সালে আচমকা গেরুয়া হয়ে গিয়েছিল। পরিসংখ্যান বলছে, ৯০ হাজারের মজবুত ভোটব্যাঙ্কের লালপার্টি লোকসভা ভোটে তৃতীয় হয়েছিল। শুধু তাই নয়, ভোট পেয়েছিল মাত্র ২৫,১৪১। সেই নির্বাচনে বিজেপি ৮৯,৮৮৩ ভোট পেয়েছিল। যদিও বিজেপির লিড ছিল সামান্যই। কারণ, তৃণমূল টক্কর দিয়ে ৮৯,১৮১টি ভোট পেয়েছিল।
পৌরাণিক গল্প ও তার ব্যতিক্রম পর্বের শুরুটা হয়েছিল এরপর। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, সেটাই চোখে দেখা যায়। ওই নির্বাচনে ২০১৬ সালের তুলনায় সিপিএমের ভোট কমেছিল প্রায় ২৫ শতাংশ। প্রায় ২৩ শতাংশ ভোট বেড়েছিল বিজেপির। আর ২ শতাংশ ভোট গিয়েছিল তৃণমূলের ঘরে। ওই পরিসংখ্যান চমকে দিয়েছিল বিশেষজ্ঞদেরও। ২০২১ সালে বামেদের উৎখাত করে দিয়ে প্রথমবার বিধানসভায় ঘাসফুল ফুটেছিল। হ্যাঁ, রাজ্যবিজয়ের ১০ বছর পরে।
আরও একটা পরিসংখ্যান আছে। ২০১৯ ও ২০২১—জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় দু’টি নির্বাচন হয়েছে। ২০২১ সালে প্রথমবার প্রায় ২০ হাজার ভোট বাড়িয়ে লাখের সীমানা পেরিয়েছে ঘাসফুল। আর প্রায় ১৮ হাজার ভোট কমেছে বামের সাথী রামের। ফলে, পাণ্ডুয়ার লড়াই চমকপ্রদ হবে, সন্দেহ নেই।