বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
অষ্টমীর সন্ধ্যা। ই এম বাইপাসে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে, কেউ আবার বন্ধুদের নিয়ে মেতেছে জয় রাইডে। রাত সাড়ে ৯টা, নবমী। বেহালার নূতন দলের পুজো সংলগ্ন ক্রসিংয়ে তীব্র যানজট। কেপার মাঠের পুজোর সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি সারি বাইক। ঠিক তার পিছনে রয়েছে পুলিসের নো পার্কিং বোর্ড। পুলিস থাকা সত্ত্বেও বেআইনি পার্কিংয়ের জেরে সমস্যায় পড়েন জেমস লং সরণির যাত্রীরা।
দশমীর রাতে ঘড়িতে তখন ১টা। পিজির সামনে ডিএল খান রোডের ক্রসিংয়ে একদল হেলমেটহীন তরুণের বাইক রেস। কোনও বাইকে তিনজন, কোনওটায় দু’জন।
পুলিস তৎপরতা দেখালেও পুজোর ক’দিন বাইক বাহিনীর দৌরাত্ম্য দেখল এই শহর। হেলমেট ছাড়াই ঊর্ধ্বগতি, ট্রিপল রাইডিং থেকে বেআইনি পার্কিং— সবই চাক্ষুষ করল মহানগর। শহরের ১৬টি জায়গায় বিশেষ নাকা চেকিংয়ের ব্যবস্থা করেছিল ট্রাফিক পুলিস। সেই সব এলাকায় অবশ্য বাইক বাহিনীর দাপাদাপি নিয়ন্ত্রণে ছিল। লালবাজার সূত্রে খবর, চতুর্থী থেকে নবমী পর্যন্ত ট্রাফিক বিধি লঙ্ঘন করে বাইক চালানোর অভিযোগে ৪,২০২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এক কথায়, একে বেনজির বলেই দাবি করেছে লালবাজার।
ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে খবর, এবার পুজোয় বাইক বাহিনীর দৌরাত্ম্য রুখতে ১৬টি বিশেষ নাকা চেকিং টিম তৈরি করা হয়। যাদের কাজ ছিল শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে সারপ্রাইজড নাকা চেকিং। মূলত বেপরোয়া বাইকের দাপাদাপি রুখতেই এই প্রথম এমন উদ্যোগ নিয়েছিল কলকাতা পুলিস। লালবাজারের এক পদস্থ কর্তা জানান, চতুর্থী থেকে নবমী পর্যন্ত নাকা চেকিং চলেছে। এই অভিযানে প্রায় তিন হাজার ব্যক্তিকে হেলমেটহীন অবস্থায় পাকড়াও করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ধারায় মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিস। করা হয়েছে জরিমানাও। এছাড়াও বেপরোয়াভাবে বাইক চালানোর অভিযোগে এই ছ’দিনে ৫৪৫ জনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করেছে কলকাতা পুলিস। মদ্যপ অবস্থায় বাইক চালানোর অভিযোগে মোট ৪৮৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ট্রাফিক বিভাগ। অষ্টমীর দিন অতিরিক্ত গতিতে বাইক চালানোর জন্য দুই বাইক চালককে জরিমানা করেছে পুলিস।
লালবাজারের পরিসংখ্যান বলছে, পুজো যত এগিয়েছে, বাইক বাহিনীর বেপরোয়াভাব ততই বেড়েছে। চতুর্থীতে বিভিন্ন ট্রাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে ১৬টি নাকা মিলিয়ে মোট ২৯৭টি কেস করেছে পুলিস। প্রতিদিন এই সংখ্যা বেড়েছে। অষ্টমী এবং নবমীতে এই সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। অষ্টমীতে হেলমেট ছাড়া, মদ্যপ অবস্থায় বাইক চালানো, ওভার স্পিড ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন অভিযোগে ১,১৪১টি মামলা রুজু হয়েছে। পরের দিন সংখ্যাটা বেড়ে হয় ১,১৭৬।