সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, সজনেখালি: গাঙ্গেয় উপকূল ও সুন্দরবনের নদ-নদীতে লুপ্তপ্রায় বাটাগুর বাসকা বা সোনাকাঠা কচ্ছপের সংখ্যা বাড়াতে আগামী দশবছরের জন্য একটি পাইলট প্রজেক্ট নিয়েছে সরকার। প্রকল্পটি যৌথভাবে রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এবং টার্টল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স। আন্তর্জাতিক কচ্ছপ দিবস উপলক্ষে সোমবার সজনেখালিতে একটি বিশেষ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা হয় লুপ্তপ্রায় এই কচ্ছপ সংরক্ষণ নিয়ে। এদিন ট্রান্সমিটার বসানো একটি স্ত্রী কচ্ছপ নদীতে ছাড়া হয়। তার নাম দেওয়া হয়েছে নাম ‘অন্তিমা’। বাটাগুর বাসকার প্রজাতির কচ্ছপের চলাফেরা, পছন্দের পরিবেশ ও যাত্রাপথ, বাসস্থান প্রভৃতি তথ্য জানতে ১৯ জানুয়ারি ন’টি কচ্ছপের দেহে ট্রান্সমিটার বসিয়ে নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুটি চলে গিয়েছিল বাংলাদেশে। সে-দেশের বনবিভাগ তাদের উদ্ধার করে। কচ্ছপ দু’টিকে নদীতে ফের ছেড়ে দেওয়া হবে ২৫ মে। ট্রান্সমিটার লাগানো কচ্ছপগুলি থেকে বহু তথ্য পেয়েছেন সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ও টার্টল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স গবেষকরা। কর্মশালায় সেইসব তথ্যই প্রকাশ্যে আনা হয়।
২০১২ সালের তথ্য অনুযায়ী সুন্দরবনের এই কচ্ছপের সংখ্যা ছিল ১২। এখন চারশোর বেশি। লুপ্তপ্রায় কচ্ছপদের বাঁচাতে সুন্দরবনের স্কুলপড়ুয়া এবং স্থানীয় মৎস্যজীবীদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এদিন কচ্ছপদের উপর একটি পোস্টার প্রকাশ করা হয়। তার মধ্যে গাঙ্গেয় কাছিম, (নিলসনিয়া গ্যাঞ্জেটিকা), ময়ুরপঙ্খী (নিলসনিয়া হুরাম) প্রভৃতি ১৪টি লুপ্তপ্রায় প্রজাতির।
কর্মশালায় ছিলেন দু’জন প্রধান মুখ্য বনপাল জে টি ম্যাথিউ ও দেবল রায়, ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা তাপস দাস, টার্টল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স ডিরেক্টর শৈলেন্দ্র সিং প্রমুখ। কর্তৃপক্ষ জানান, সুন্দরবনে কতরকম ব্যাঙ ও ডলফিন আছে ভবিষ্যতে তাও জানার চেষ্টা হবে।