নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নিউটাউনে স্কুল করার জন্য সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রায় দুই একর জমি দিয়েছিল রাজ্য সরকার তথা হিডকো। বিতর্ক দেখা দেওয়ায় তিনি জমি ফিরিয়ে দেন। রাজ্যও তাঁর জমা দেওয়া জমির দাম ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু, ২০১৬ সালের এই সম্পর্কিত জনস্বার্থ মামলার নিষ্পত্তি করে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকার ও হিডকোকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করল। সুপ্রিম কোর্টের বিধি অনুসরণ না করে ক্ষমতার প্রয়োগের দায়েই এই জরিমানা। অন্যদিকে সৌরভ ও তাঁর সংস্থাকে প্রতীকি ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আগে অন্য একটি জমি বরাদ্দের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসরণে তিনি এই জমি ফেরত দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই এই প্রতীকি নির্দেশ। জরিমানার অর্থ রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাওয়ার পর রাজ্যের লিগাল সার্ভিসেস অথরিটির জিম্মায় চার সপ্তাহের মধ্যে জমা করতে হবে। যে বা যাঁদের জন্য এই বিতর্ক, তাঁদের হেফাজত থেকে রাজ্য জরিমানার অর্থ আদায় করতে পারবে বলেও জানানো হয়েছে। 
বেঞ্চ বলেছে, যে বা যাঁরা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, তাঁদের ব্যক্তিগতভাবে তার জন্য দায়ী করা যেতে পারে। বেঞ্চ বলেছে, সমাজ যাতে সর্বাধিক উপকৃত হয়, সেই দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে সরকারি সম্পত্তির ব্যবহার করতে হবে। যদি কোনও ব্যক্তিকে ব্যবসায়িক দরকারে জমি দিতে হয় (লিজ বা ভাড়ায়), তা টেন্ডার ডেকে হওয়া দরকার। যে আগ্রহী সর্বাধিক দর দেবে, তাকেই তা দেওয়াটাই দেশের আইন। কিন্ত, এক্ষেত্রে স্বচ্ছতার অভাব ছিল। অনুসরিত পদ্ধতি মানুষের মনে ভরসা যোগাবে না। এমনকী লিজ ভাড়াও আগ্রহীর অনুরোধ মেনে ৫০ শতাংশ কার্যত কোনও কারণ ছাড়াই কমানো হয়। এক্ষেত্রে জমি ফেরত এসেছে বলে আদালতের তা খারিজ করার দরকার হয়নি। কিন্তু, ভবিষ্যতে এমন জমি লেনদেনে রাজ্যকে আইন মেনেই এগতে হবে। কারণ, মানুষের বিশ্বাসের জেরেই সরকার জমির মালিক। সেই জমি থেকে সর্বাধিক সুবিধা পাবে সাধারণ নাগরিক। এই সাধারণ নীতি সরকার পক্ষ মনে রাখবে বলেই আশা করা হচ্ছে।