বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
এদিন শুক্রবার থাকায় বাড়ির বড় ছেলে মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। ছিলেন না হারুনও। শুধু ছোট ছেলে এবং দুই মেয়ে সগুফতা ও তইবাকে নিয়ে ঘরে ছিলেন স্ত্রী আকিদা খাতুন। দুপুর ১২টা নাগাদ সেখানে হাজির হয় হারুনের তুতো ভাই সুলতান আনসারি। হামলা চালায় আকিদা ও তাঁর দুই মেয়ের উপর। ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় তিন জনকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে আকিদাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা। গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন বছর কুড়ির সগুফতা এবং সতেরো বছরের তইবা। তবে তইবার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
হঠাৎ কেন এই হামলা চালাতে গেল সুলতান? জানা গিয়েছে, মেটিয়াবুরুজের বাসিন্দা বছর পঁচিশের সুলতান কোনও কাজ করে না। প্রাইভেট টিউশনি করে হাতখরচ চালায় সে। এই সুলতানের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল আকিদার বড় মেয়ে সগুফতার। কিন্তু, নিজের তুতো ভাইয়ের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি হননি হারুন ও আকিদা। সুলতানের বাবা-মা একাধিকবার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তাঁদের বাড়িতে এলেও কার্যত তাঁদের অপমান করে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন আকিদা।
সম্ভবত সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই এদিন দুপুরে হারুনের বাড়িতে আসে সুলতান। ফের সগুফতাকে বিয়ে করার প্রস্তাবও দেয়। যা শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন আকিদা। সুলতানকে বেরিয়ে যেতে বলেন তিনি। পুলিসকে আকিদার ছোট ছেলে জানিয়েছে, সুলতান যেতে চাইছে না দেখে, চিত্কার করে লোক জড়ো করার এবং ধর্ষণের অভিযোগে তাকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন আকিদা। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সুলতান। পাশেই পড়ে থাকা নোড়াজাতীয় ভারী বস্তু দিয়ে মা ও দুই মেয়ের মাথায় পর পর আঘাত করে সে। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে রান্নাঘর থেকে ছুরি এনে এলোপাথারি কোপও মারে।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনজনই নেতিয়ে পড়েন। তাঁরা মারা গিয়েছেন ভেবে সুলতান সটান চলে আসে একবালপুর থানায়। পুলিসকে বলে, ‘আমি তিনজনকে খুন করে এসেছি। আমায় গ্রেপ্তার করুন।’ স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল পড়ে যায় থানায়। সুলতানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন পুলিসকর্মীরা। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি, ঘটনাস্থলেও পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। একবালপুর থানার পুলিসকর্মীদের সঙ্গে তদন্তে নামেন লালবাজারের হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারাও। পরে সেখানে আসেন কলকাতা পুলিসের ডিসি পোর্ট ওয়াকার রাজা এবং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দোষীর কঠোরতম শাস্তির আশ্বাস দেন মন্ত্রী।