বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর নিউটাউনের নিজস্ব ফ্ল্যাট থেকে আইনজীবী রজত দে’র (৩৪) মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতের বাবা সমীর কুমার দে পুত্রবধূ অনিন্দিতা পাল দে সহ অন্যান্যদের নামে খুনের মামলা দায়ের করেছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিস ১লা ডিসেম্বর অনিন্দিতাদেবীকে গ্রেপ্তার করেছিল। প্রথমে অনিন্দিতাদেবী দাবি করেন, তাঁর স্বামী আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু লাগাতার জেরায় তাঁর বয়ান একাধিকবার পরিবর্তন হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার দশ মাসের মাথায় অনিন্দিতাদেবী সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান। ফেসবুক,হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল সার্চের মতো নানান তথ্য প্রমাণ দেখার পর বিচারক অভিযুক্ত অনিন্দিতাদেবীকে সোমবার ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২(খুন) ও ২০১(তথ্য প্রমাণ লোপাট) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। এদিন সকাল ১১টা ২০মিনিট নাগাদ আসামীকে বারাসত আদালতের কোর্ট লকআপে আনা হয়। দুপুরে বিচারকের সামনে অনিন্দিতাদেবী বলেন,আমার তিন বছরের ছেলে রয়েছে। আমি জেলে গেলে সে অনাথ হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, ভগবানই শেষ বিচার করবেন। আমি ভগবানের কাছে ঠিক আছি। এরপর মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, মৃত রজতের বোন রয়েছে। সে তাঁর দাদাকে হারিয়েছে। মৃতের বাবা ও মা ছেলেকে হারিয়েছেন। স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরের বিশ্বাস নিয়ে রাতে ঘুমাতে যান। কিন্তু এইভাবে স্ত্রীর হাতে স্বামীর খুন হওয়া সমাজের কাছে বড় ধাক্কা। তাই অভিযুক্তের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হোক। বিচারক দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রায়দান স্থগিত রাখেন। বিকেল সাড়ে ৩টা নাগাদ এজলাস শুরু হওয়ার পর অনিন্দিতাদেবীকে যাবজ্জীবর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। রায় ঘোষণা হওয়া মাত্রই কান্নায় ভেঙে পড়া আসামী বার বার বলেন, আমি নির্দোষ, আমি নির্দোষ। নিজের আইনজীবী ও বাবাকে আঁকড়ে ধরে কাঁদতে থাকেন। উচ্চ আদালতে গিয়ে তাঁকে দ্রুত ছাড়িয়ে আনার আশ্বাস দিয়ে তাঁরা কোনওমতে পরিস্থিতি সামাল দেন।
আইনজীবী বিভাসবাবু বলেন, আমরা সর্বোচ্চ সাজা চাইলেও, বিচারক ৩০২ ধারায় আসামীকে যাবজ্জীবনের সাজা ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। অনাদায়ে আরও ছমাসের কারাদণ্ড। পাশাপাশি ২০১ ধারায় এক বছরের জেল ও দু’হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। আসামীর আইনজীবী সোহিনী অধিকারী বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব। মৃত রজতবাবুর বাবা সমীরকুমার দে বলেন, আমরা অনিন্দিতার আরও কঠোর সাজা চেয়েছিলাম। তাসত্ত্বেও বিচারকের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।