বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
ইএম বাইপাসের ধারে মেট্রোপলিটনের এক বাসিন্দা এমনই কথা শোনালেন। তাঁর কথায়, ‘করোনা ধরা পড়ার পর থেকে সাফাই কর্মীরা আমাদের বাড়ির পথ ভুলে গিয়েছে। বারবার জানালেও কেউ আসছে না। অবশেষে চার-পাঁচ দিন পর অনেক কসরত করে নোংরা তোলার ব্যবস্থা করা গিয়েছে।’ বেহালার করুণাময়ী ঘাট রোডের আরও এক করোনা আক্রান্ত পরিবারের অভিজ্ঞতাও কার্যত এক। ওই পরিবারের এক সদস্য ফোনে বললেন, ‘১০-১২ দিন ধরে সাফাই কর্মীরা ময়লা তুলতে আসেনি। প্লাস্টিকের প্যাকেটে করে ঘরের বাইরে ফেলে রাখতাম। দুর্গন্ধে ম ম করছে এলাকা।’
শহরজুড়ে একাধিক জায়গায় এই নির্মম অভিজ্ঞতার সাক্ষী কোয়ারেন্টাইনে থাকা করোনা আক্রান্ত পরিবারের সদস্যদের। এমনিতেই আত্মীয়-পরিজন থেকে শুরু করে পাড়া-প্রতিবেশী সকলের কাছেই হঠাৎ যেন অচেনা হয়ে ওঠা। তার উপর জঞ্জাল সাফাই না হওয়া। সব মিলিয়ে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ছে এই পরিবারগুলি। ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর, বরো কো-অর্ডিনেটরদের একাংশ এই সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, সাফাইকর্মী পেতে কখনও কখনও চার-পাঁচ দিন সময় লেগে যাচ্ছে। আবার কখনও কখনও কোয়ারেন্টাইন পর্ব শেষ হওয়ার পর ময়লা তুলতে যাচ্ছেন পুর-কর্মীরা। উত্তর কলকাতার এক বরো কো-অর্ডিনেটরের কথায়, এই ধরনের সমস্যা প্রথম দিন থেকেই হচ্ছে। মানুষের সচেতনতা বাড়াতে না পারলে এই সমস্যার সমাধান হবে না। আরেক ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর জানিয়েছেন, বারবার বলেও জঞ্জাল সাফ করানো যাচ্ছে না। রোজ ফোনের পর ফোন আসছে। অনেক ওয়ার্ডে আবার কো-অর্ডিনেটররা নিজেদের মতো করে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁরা নিজেরাই এইসব পরিবারকে বড় প্লাস্টিকের জোগান দিয়ে যাচ্ছেন। এমনই এক বরো কো-অর্ডিনেটরের কথায়, আমার ওয়ার্ডে এই ধরনের বাড়িগুলিতে প্লাস্টিকের বড় প্যাকেট দিয়ে এসেছি। তাতেই তাঁরা প্রতিদিনের আবর্জনা ফেলছেন।
কলকাতা পুরসভার জঞ্জাল সাফাই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবব্রত মজুমদারের কাছে এমন অভিযোগ এখনও পর্যন্ত আসেনি। এই ধরনের সমস্যা নেই বলে দাবি করে তাঁর বক্তব্য, কোয়ারেন্টাইনে থাকা পরিবারগুলিকে চিকিৎসা-বর্জ্য ফেলার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তর হলুদ রংয়ের প্লাস্টিক বিলি করেছে। বাকি আবর্জনা পুরসভার সাফাইকর্মীরা নিয়মিত পরিষ্কার করছেন। পুরসভার কন্ট্রোল রুমে জুন মাসের শেষ সপ্তাহে এই সমস্যা নিয়ে মোট ৫২টি ফোন এসেছে। সাফাই কর্মীদের বক্তব্য, নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা নেই। পিপিই মেলে না। গ্লাভস-মাস্কও অপর্যাপ্ত। তাই অনেকে করোনা আক্রান্তদের বাড়ি থেকে হয়তো আবর্জনা তুলতে যাচ্ছে না’।