বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
সরল-সাধাসিধে মানসিকতার ছেলে তাপস রাজনীতির পাকেচক্রে বেফাঁস কথা বলে প্রচুর নিন্দা কুড়োলেও বাল্যবন্ধুর আবেদন কখনও বদলে যায়নি শান্তনুবাবুর কাছে। ক্ষণিকের উত্তেজনায় নিন্দাজনক কথা বলে ফেলাটা অনভিপ্রেত হলেও তার শাস্তি একটু বেশিই পেলেন বলে খেদ প্রকাশ করেন ধাড়াপাড়া তথা চন্দননগরবাসীর অনেকে। সাতসকালে তাপস পালের মৃত্যুর খবর চাউর হয়ে যায়। তারপর থেকে পাড়ার মোড়ের জল্পনা, চায়ের দোকানের আড্ডায় রাজনীতিবিদ তাপস নয়, বারবার উঠে এসেছে ‘দাদার কীর্তি’র সেই সারল্য মাখা তরুণের প্রসঙ্গ। তাঁর অভিনীত ছবির নাম ঘুরেছে মানুষের মুখে মুখে।
পুরানো দিনের কথা স্মরণ করছিলেন শান্তনুবাবু। তিনি বলেন, ‘দাদার কীর্তি’ মুক্তি পাওয়ার পর ও তো সুপারস্টার হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, তখনও চন্দননগরে আমরা সাইকেল চালিয়ে ঘুরে বেরিয়েছি। শেষবার যখন এল, আমাকে বলেছিল, মার্চ মাসে এখানে শ্যুটিং করবে। সে আর হল না! বিকেল হলে মোগলাই আর সকালের জলখাবারে লুচি, আলু-কুমড়োর তরকারি তাঁর অন্যতম পছন্দ ছিল বলে জানান শান্তনুবাবু। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট থেকে জন্মস্থান ধাড়াপাড়াতে বড় হয়েছেন তাপস। স্থানীয় স্কুলে পড়াশুনো শেষ করার পর হুগলির মহসিন কলেজ থেকে কলা বিভাগে স্নাতক হন তিনি। বাবা ছিলেন চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক জি সি পাল। বাবা প্রয়াত হওয়ার পর সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে বোনদের সঙ্গে সমস্যা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। তা মিটে যাওয়ার পর চন্দননগর আসা খুবই কমিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বছরখানেক আগে এসেছিলেন শান্তনুবাবুর কাছে। কিছুক্ষণ থেকে ফিরে গিয়েছিলেন কলকাতায়।
রাজনৈতিক জীবন ও তাঁর কিছু মন্তব্য নিয়ে মানুষের ঘোর আপত্তি থাকলেও অভিনেতা, নায়ক তাপস পালের মৃত্যুতে চন্দননগরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পারিবারিক বিবাদের কারণে বোনেদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল না তাপসবাবুর। তবে এদিন মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েন চন্দননগরের পালপাড়া আবাসনের বাসিন্দা তাঁর দিদি পাপিয়া বাইন। তাপস পালের বাবার সূত্রে তাঁদের পারিবারিক বন্ধু তথা চুঁচুড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অমিত রায় বলেন, ওর সারল্য ভরা মুখের জন্যই ‘দাদার কীর্তি’র কেদারের চরিত্রে পছন্দ করা হয়েছিল তাঁকে। মানুষটাও ততটাই সরল ও সাধাসিধে। কিন্তু, রাজনীতি করতে এসে তাঁর সেই সরল ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনটা হওয়া অনভিপ্রেত ছিল আমাদের কাছে। ধাড়াপাড়া এলাকার একাধিক বাসিন্দার মতে, মানুষমাত্রেই ভুল করে। তাপসও সেরকম কোনও ভুল করেছিল। কিন্তু, এক বছরের বেশি জেল খাটা এবং তাঁর নিজের মন্তব্য নিয়ে তিনি এতটা মর্মাহত ছিলেন যে, আর ফিরে আসতে পারলেন না। ঘরের ছেলে তাপস পালের জন্য এমন মৃত্যু অনভিপ্রেত ছিল বলে খেদ প্রকাশ করেন অনেকে।