কর্মপ্রার্থীদের বিভিন্ন দিক থেকে শুভ যোগাযোগ ঘটবে। ব্যবসায় যুক্ত হলে ভালোই হবে। প্রেম-প্রণয়ে নতুনত্ব আছে। ... বিশদ
খবর পেয়ে দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, ওই বস্তি দাহ্য পদার্থে ঠাসা ছিল। যার জন্য আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দমকলের আটটি ইঞ্জিন কাজ করে কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বরানগর স্টেশনের দক্ষিণদিকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধারে বিশাল এলাকা জুড়ে বস্তি রয়েছে। ডানলপ পার্কিং নামে বস্তিটি এলাকাবাসীর কাছে পরিচিত। বস্তিতে প্রায় ১২৫টি বাড়ি রয়েছে। কেউ পরিচারিকার কাজ, কেউ রিকশ চালান, কেউ আবার প্লাস্টিকের বোতল কুড়িয়ে তা বিক্রি করে রোজগার করেন। এদিন বেলা ১০টা নাগাদ সেখানে আগুন লাগে। বেলা দুটোর মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। শেখ ইয়াকুব নামে এক বাসিন্দা বলেন, এদিন সকালে আমি কাজে বেরিয়েছিলাম। দুপুরে বাড়ি ফিরে দেখি, সব শেষ। ঘরের কোনও কিছু অবশিষ্ট নেই। এদিন ঘরের ভিতর পোড়া বাক্সের ভিতরে পোড়া কাগজপত্র হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন সারিকুল সর্দার। তিনি বলেন, প্লাস্টিকের বোতল কুড়িয়ে তা বিক্রি করে বেশ কিছু টাকা ওই বাক্সে জমিয়েছিলাম। সব টাকা পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।
সারিকুলসাহেব শুধু নয়, এই বস্তির অনেকে পোড়া বাক্স, বিছানা, আধপোড়া কাপড় নিয়ে বরানগর স্টেশনের প্লাটফর্মের একধারে বসে রয়েছেন। সারাদিন পেটে খাবারও জোটেনি। কেউ রাস্তায় অকাতরে কেঁদেই চলেছেন। এদিন খবর পেয়ে বরানগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক, কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা, স্থানীয় বিধায়ক তাপস রায় ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৪৫ জন ক্ষতিগ্রস্তর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আপাতত অস্থায়ীভাবে তাঁদের থাকার ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরে, তাদের স্থায়ী ব্যবস্থা করার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
রীনা বর নামে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী বলে, এদিন স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলাম। আচমকা চিৎকার শুনে ঘরে থেকে বের হতেই দেখি, সকলে দৌড়াদৌড়ি করছে। দাউদাউ করে আগুন বাড়ির দিকে ধেয়ে আসছে। ঘরের ভিতরে ২ মাসের বাচ্চা ঘুমোচ্ছিল। তাকে কোলে তুলে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় চলে আসি। ঘরের ভিতরে বইপত্র থেকে সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। বস্তির সামনে নর্দার্ন পার্ক এলাকায় একাধিক বহুতল রয়েছে। একটি বহুতলের আবাসিক অরুণকুমার সারঙ্গি বলেন, আমাদের আবাসনের তিনতলায় একটি ফ্ল্যাটে তালা দেওয়া ছিল। কাচের জানালা ভেঙে আগুন ওই ফ্ল্যাটে ঢুকে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। আমরা তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকি। দমকলের কর্মীরা এসে আগুন নেভান। কিন্তু, ফ্ল্যাটের অধিকাংশ জিনিসপত্র পুড়ে যায়। বৃদ্ধ মা, বাবা, ছেলে, মেয়ে সকলকে নিয়ে রাস্তায় নেমে আসি।
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বস্তির একাংশ পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। রাস্তার মধ্যে আলমারি, বিছানা, পোড়া বাক্স নিয়ে আকাশের নীচে বহু পরিবার রয়েছেন। বস্তির পাশে বহুতলের বহু আবাসিক ঘরে ছেড়ে চলে যান। আতঙ্কে এলাকার মানুষ সারাদিন রাস্তায় কাটিয়েছেন।