কর্মে ও ব্যবসায়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য। কৃষিপন্ন বিক্রেতা ও ডাক্তারদের অর্থকড়ি প্রাপ্তি হবে সর্বাধিক। বন্ধুকে টাকা ... বিশদ
কিন্তু শোরগোল ফেলে দেওয়া গবেষণার ফলের পরও হতাশার সুর বিজ্ঞানীর গলায়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের কাছে দরবার করেও তাদের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ভারত প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার হিলিয়াম আমেরিকার কাছ থেকে আমদানি করে। অথচ ভারতে যা সঞ্চিত রয়েছে, তা ঠিক মতো ব্যবহার করলে হিলিয়াম রপ্তানির পাশাপাশি বিদ্যুতের ঘাটতিও মিটবে। কিন্তু এখনও একটি অংশ বিকল্প শক্তি বলতে সৌরশক্তিকেই বোঝে। এই ধারণা অচিরে বদলানো প্রয়োজন।
বীরভূমের বক্রেশ্বরে উষ্ণপ্রস্রবণ নিয়ে বহু বছর ধরে গবেষণা করছেন হীরকবাবু। এনআইটির ওই অধ্যাপক নানা দেশের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে এনেছেন। হিলিয়াম নিয়েও তাঁর নানা গবেষণার ফল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে তা উৎপাদনের পথে এগয়নি মোদি সরকার। এই অবস্থায় তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল বক্রেশ্বরের উষ্ণপ্রস্রবণে জিওথার্মাল এনার্জি কী পরিমাণ পাওয়া যেতে পারে, তা তথ্য সহ তুলে ধরা। যাতে টনক নড়ে। এনিয়ে গবেষণা চালিয়ে তিনটি পয়েন্টে ড্রিলিংয়ের মাধ্যমে সেখান থেকে পাওয়া তথ্য হিসেবে করে এই সিদ্ধান্তে আসেন যে, ১১০০ মিটার গভীর পর্যন্ত ড্রিল করলেই বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হবে। যা দিয়ে ডিরেক্ট হিট পরিবর্তিত করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া বিদ্যুৎও উৎপাদন করা যাবে। দেশে এমনই ৩৪০টি উষ্ণপ্রস্রবণ রয়েছে। তাই সেগুলিতে এই প্রকল্প চালু হলে বিপুল শক্তি পাওয়া যাবে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা, একবার প্ল্যান্ট প্রস্তুত করে নিলে আর কাঁচামালের কোনও খরচ নেই। পাশাপাশি এখান থেকে উপজাত হিসেবে পাওয়া যাবে নিষ্ক্রিয় গ্যাস হিলিয়াম ও আর্গন। এমআরআই সহ বিভিন্ন চিকিৎসায়, ইসরোর গবেষণা, ডিআরডিওর মিশাইল সহ নানা জায়গায় হিলিয়াম প্রয়োজন হয়। শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার রয়েছে আর্গনের। কিন্তু বিজ্ঞানীর কথা মতো হাতের লক্ষ্মী পায়ে ফেলছে কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলার বক্রেশ্বরের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের তালসারিতেও এনিয়ে কাজ হয়েছিল। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কিছু তৎপরতা থাকলেও বাংলার বক্রেশ্বরের জন্য কোনও উদ্যোগ নেই। আত্মনির্ভর ভারতের বুলি আওড়ানো কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকায় আশাহত হয়ে এবার বিজ্ঞানীরা চান রাজ্য নিজেই যেন বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয়। হীরক চৌধুরী।