কাজকর্মে আকস্মিক বিঘ্ন ও ভোগান্তি। আইনজীবী ও মুদ্রণ, কাগজ ও কৃষিজ পণ্যের ব্যবসায়ীদের শুভদিন। ... বিশদ
ফের নিট দিতে আমাদের মতো ছাত্রছাত্রীর অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। অসুবিধা অন্যত্র। পরীক্ষার পর দেড় মাস কেটেছে। ফলপ্রকাশ হয়ে গিয়েছে। মানসিকভাবে ডাক্তারি পড়াশোনার জগতে চলে গিয়েছি। ভাবতে শুরু করেছি, পরের দিনগুলির কথা। কেমন হবে কলেজ, সিলেবাস, কীভাবে পড়ব ইত্যাদি। যদি দুর্নীতির অভিযোগে পরীক্ষা নিতেই হতো, তার জন্য বড্ড দেরি হয়ে গিয়েছে। মেধাবী ছেলেমেয়েরা পরের দিনগুলির কথা আগে ভেবে সেইমতো মানসিক প্রস্তুতি নেয়। যদি কঠোরতম পদক্ষেপ নিতেই হতো, প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠার পরই পরীক্ষা বাতিল করে সাত-দশদিনের মধ্যে নিট নিতে হতো। এদিকে অনেকেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন। বহু কোচিং সেন্টার ও প্রস্তুতিতে যুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা দুর্নীতির অভিযোগে হইচই করছেন। পরীক্ষায় বদল এলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়তো তাঁরাই হবেন। মোটা খরচের নতুন কোনও কোর্স হয়তো নিয়ে আসবেন।
জীবনের চার-চারটে বছর চলে গিয়েছে এই পরীক্ষা ক্র্যাক করার প্রস্তুতিতে। সেই নবম শ্রেণি থেকে নিটের পড়া শুরু করেছি। বহরমপুরের শিক্ষক পরিবারের ছেলে আমি। বাবার শিক্ষক বন্ধুরা জানপ্রাণ লড়িয়ে সবটা উজাড় করে পড়িয়েছেন। টাকার কথা ভাবেননি। বইপত্র, অন্যান্য প্রস্তুতি মিলিয়ে শেষ দু’বছর মাসে ৪ হাজার টাকা করে প্রায় লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। বড় শহরে এর খরচ ৪-৫ গুণ বেড়ে যাবে। সেই কষ্টের অর্থ, পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের ফল অনেকে পেয়েছি। স্বপ্নপূরণ হয়েছে। তার মূল্য নেই? আমিও চাই, আরও আঁটসাঁট হোক পরীক্ষা। বিশেষত, পরিদর্শকদের মধ্যে ঢিলেঢালা ভাব আছে, সেটা থাকা উচিত নয়। কিন্তু এমন একটা বছর বলতে পারবেন, যেখানে নিটে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি! পাশাপাশি যে অসংখ্য ছেলেমেয়ে ভবিষ্যৎ চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে দিনরাত এক করে দেশের সুদূরতম প্রান্ত থেকে এই পরীক্ষায় বসেছিল, তারাও যেন সৎ প্রস্তুতির যোগ্য মর্যাদা পায়। কয়েকটি ঘটনার জন্য যেন পরিশ্রমী ও মেধাবীদের স্বপ্ন ভেঙে না যায়। শীর্ষ আদালতের উপর পূর্ণ আস্থা আছে। নিশ্চয়ই বিচক্ষণ রায়দান পাব আমরা।
ঘটনাক্রমের জেরে প্রত্যেকে অস্থির সময় দিয়ে যাচ্ছি। তার প্রভাব পড়ছে অভিভাবকদের ওপরেও। তাও ছাত্রছাত্রীদের বলব, মাথা ঠান্ডা রাখো। সততা ও পরিশ্রম কখনও বৃথা যায় না।