অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি, প্রিয়জনের বিপথগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা, সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
এতে অবশ্য অনুব্রতবাবুর কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। সাফ জানালেন, ‘আমাকে নজরবন্দি করা হয়েছে, ঘরবন্দি করা হয়নি। আমি আমার মতো ঘুরে বেড়াব। নির্বাচন কমিশনের ভালো লেগেছে, তাই আমাকে নজরবন্দি করেছে। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। কেন করেছে, তাও বলতে পারব না। আমি আমার কাজ করে যাব। নজরবন্দি করলেও খেলা বন্ধ হবে না, খেলা যেমন চলছিল, তেমনই চলবে।’
কয়েকদিন আগেই বোলপুরে গিয়ে এ ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, ‘অনুব্রত আমাদের দলের সভাপতি, ওকে নজরবন্দি করা হবে বলে শুনছি। আমি ওকে বলছি, নজরবন্দি করলে আদালতে দরবার করতে হবে।’ এদিন সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অনুব্রতবাবু বলেন,‘ আমি দলের একজন কর্মী মাত্র। দলের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ বীরভূমের এই ‘দাবাং’ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিজেপির পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে দফায় দফায় দরবার করা হয়। এমনকী, ভোটকর্মী ঐক্যমঞ্চও আবেদন জানিয়েছিল। তাঁকে শোকজও করা হয়। শেষপর্যন্ত ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে তাঁকে নজরবন্দির নির্দেশ জারি করল নির্বাচন কমিশন। এর আগে ২০১৪, ২০১৬ এবং ২০১৯ সালের ভোটেও একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
শুধু কমিশন নয়, ভোটের মুখে গোরু পাচার কাণ্ডেও অনুব্রতবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায় সিবিআই। মঙ্গলবার সকালে তাঁর হাজিরা দেওয়া কথা ছিল। কিন্তু শরীর খারাপ এবং নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য দু’সপ্তাহ সময় চেয়ে চিঠি দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে ওই দাপুটে নেতা যাতে নিজের মতো করে ভোট করতে না পারেন, তার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। তাদের দাবি, বিজেপি যা বলছে, তা-ই করছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে, এদিনই কলকাতা বন্দরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ফিরহাদ হাকিমকে শো কজ করল নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি, ছ’জন অফিসারকে বীরভূমে ভোটের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, করোনার কারণে ভোট পর্যবেক্ষকের অভাব দেখা দিয়েছে। একাধিক পর্যবেক্ষক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে নির্বাচন কমিশনে খবর এসেছে। আগামী রবিবারের গণনায় সব বিধানসভা কেন্দ্রে পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে তাই চিন্তায় রয়েছেন কমিশনের কর্তারা। এর মধ্যে কমিশনের দপ্তরের এক কর্মীর করোনায় মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে করোনা যে কমিশনের অন্যতম মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা পরিষ্কার। ভাইরাস সংক্রমণের ভয়েই সপ্তম দফায় ভোটের হারও কম পড়েছে বলেও ধারণা আধিকারিকদের। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই দফায় ভোটদানের গড় হল ৭৬.৯০ শতাংশ। সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুরে ৮২.৯৪, মালদহে, ৭৯.৫৮, মুর্শিদাবাদে ৮২.১২ এবং পশ্চিম বর্ধমানে ৭২.৪৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। দক্ষিণ কলকাতায় এই হার ৬১.৭০ শতাংশ। কলকাতায় সাধারণত ভোট কম পড়ে। কিন্তু এবার আরও চার-পাঁচ শতাংশ ভোট কম পড়ায় চিন্তিত কমিশন।