কাজকর্মে আকস্মিক বিঘ্ন ও ভোগান্তি। আইনজীবী ও মুদ্রণ, কাগজ ও কৃষিজ পণ্যের ব্যবসায়ীদের শুভদিন। ... বিশদ
জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগে অর্থ তছরুপের মামলায় শুক্রবার ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের জামিন মঞ্জুর করে রাজ্যের হাইকোর্ট। গত ১৩ জুন এই মামলায় রায় স্থগিত রাখা হয়েছিল। এদিন বিচারপতি রঙ্গন মুখোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেছে। ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট বলেছে, ‘৫০ হাজার টাকার বন্ড ও সম পরিমাণ অর্থের দু’টি সিওরিটির বিনিময়ে আবেদনকারীকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ জারি করা হচ্ছে।’ আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সোরেনের প্রতিক্রিয়া, সত্য সমস্যায় পড়তে পারে। কিন্তু পরাজিত নয়। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ট্যুইট, সংবিধান রক্ষা করার ভাবনা নিয়ে যাঁরা চলেন, সত্য তাদের সবসময় রক্ষা করে। ঝাড়খণ্ড প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি লিখেছেন, হাসতে হাসতে কাট যায় রাস্তে, জিন্দেগি ইউঁহি চলতে রহে। সোরেনের জামিন পাওয়ার খবর সামনে আসতেই রীতিমতো উৎসব শুরু করে দেন তাঁর দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও জোট শরিক কংগ্রেসের কর্মীরা। শুরু হয় মিষ্টি বিতরণ। সোরেনের আইনজীবী অরুনাভ চৌধুরী বলেন, ‘আদালত বলেছে, আবেদনকারী দোষী নয় বলেই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি কোনও অপরাধ করতে পারেন বলেও মনে হচ্ছে না।’ বিজেপি অবশ্য এদিন বলেছে, এমন উৎসব চলছে যেন মনে হচ্ছে অভিযোগ মুক্ত হয়ে গিয়েছে। তিনি শুধু জামিন পেয়েছেন।
জেএমএম-এর কার্যকরী সভাপতি হেমন্ত সোরেনকে গত ৩১ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। রাঁচির বিরসা মুন্ডা জেলে বন্দি ছিলেন তিনি। গ্রেপ্তারির আগে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন শিবু সোরেনের পুত্র। হাইকোর্টের নির্দেশের পর জামিনের শর্তগুলি পূরণে এদিন সিভিল কোর্টে পৌঁছন হেমন্তের ভাই তথা রাজ্যের মন্ত্রী বসন্ত সোরেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিনোদ পান্ডে। বিশেষ পিএমএলএ বিচারক রাজীব রঞ্জনের এজলাসে জামিনের বন্ড পেশ করা হয়। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর এদিনই বিরসা মুন্ডা জেল থেকে বেরিয়ে আসেন হেমন্ত সোরেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ আদিবাসী নেতা হেমন্ত সোরেনকে একটি মামলার জন্য ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিতে হয়েছিল। কিন্তু আজ মাননীয় হাইকোর্টের নির্দেশে তিনি জামিন পেলেন। আমি খুবই খুশি। আশা করি তিনি অবিলম্বেই সাধারণ মানুষের জন্য কাজ শুরু করতে পারবেন। হেমন্ত সোরেনকে স্বাগত জানাই।’
আদালতে সওয়াল জবাব চলাকালীন হেমন্তের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেছিলেন ইডির আইনজীবী এস ভি রাজু। তাঁর বক্তব্য ছিল, মুখ্যমন্ত্রী পদের অপব্যবহার করে রাঁচিতে ৮.৮৬ একরের একটি জমি ‘বেআইনিভাবে’ দখল করেছেন সোরেন। জামিনে ছাড়া পেলে একই ধরনের অপরাধ করতে পারেন অভিযুক্ত। ইডির এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছিল সোরেনের আইনজীবী টিম। এই টিমের সদস্য হিসেবে সওয়াল করেছিলেন প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিবালও।
হেমন্ত মুক্ত হওয়ার পরই প্রশ্ন উঠেছে, এবার কী হবে? চম্পাই সোরেন কি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন নাকি যেমন চলছিল, তেমনই চলবে। জেএমএম সূত্রে খবর, হেমন্ত এবার আগামী বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি নেবেন। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকবেন চম্পাই-ই।