সৌম্যজিৎ সাহা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কোনও প্রার্থীকে পছন্দ না হলে নোটায় ভোট দেওয়া যায়। ২০১৩ সালে এই ব্যবস্থা করেছিল নির্বাচন কমিশন। একটি ইভিএম মেশিনে সবার শেষে থাকে নোটা (নান অফ দ্য অ্যাভব বা উপরের কেউ নয়) অপশনটি। এই লোকসভা ভোটে যাদবপুর আসনটিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে নোটা। জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র এই অপশনটির জন্য পৃথক ইভিএমের প্রয়োজন হচ্ছে জেলা প্রশাসনের। কারণ ইভিএমে ১৬টি বাটন (বোতাম) থাকে। তাতে ১৫ জন প্রার্থী ও নোটার স্থান রয়েছে। প্রার্থী সংখ্যা তার বেশি হয়ে গেলে দ্বিতীয় ইভিএমের প্রয়োজন পড়ে। যাদবপুরের ক্ষেত্রে ঠিক তেমনটাই হয়েছে। এখানে মোট প্রার্থী সংখ্যা ১৬। তাঁদের প্রত্যেকের নাম একটি ইভিএমে নথিবদ্ধ করা হয়ে গিয়েছে। তাই নোটার জন্য দরকার পড়েছে আলাদা ইভিএমের। অর্থাৎ যে সংখ্যক ইভিএম গোটা লোকসভা ভোটের জন্য প্রয়োজন হচ্ছে তার দ্বিগুণ মেশিন লাগছে এই অপশনে ভোট দেওয়ার জন্য। দাবি, এর ফলে জেলা প্রশাসনের চিন্তা ও দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছে। কারণ প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী ইভিএম আনা হয়েছিল এই কেন্দ্রের জন্য। কিন্তু মনোনয়ন শেষে প্রার্থী সংখ্যা যা দাঁড়িয়েছে তাতে আরও ভোটযন্ত্র আনাতে হয়েছে। এতে খরচ বেড়েছে। ভোট কর্মীদের অতিরিক্ত ইভিএম বহন করে নিয়ে যাওয়ার ঝক্কি তৈরি হয়েছে। স্ট্রংরুমে রাখার ক্ষেত্রেও জায়গার সমস্যা দেখা দিয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রশাসন ঠিক করেছে, বাড়তি ইভিএম একটার উপর একটা রাখা হবে। আর যে বুথগুলিতে ভোটগ্রহণ হবে সেখানে দু’টি ইভিএম পাশাপাশি রেখে ভোট কক্ষ তৈরি করার মতো জায়গা হচ্ছে কি না সেটাও পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে মোট বুথের সংখ্যা ২২১৭। এই সংখ্যক ভোটযন্ত্র লাগছিলই। কিন্তু নোটার জন্য এবার এর দ্বিগুণ ইভিএম লাগবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, মনোনয়নের পর দেখা গিয়েছিল মোট প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ১৮। তারপর দু’জন নাম প্রত্যাহার করেন। তাতে আমাদের কোনও লাভ হয়নি। আর একজন যদি নাম তুলতেন বা তাঁর মনোনয়ন কোনওরকমে বাতিল হতো সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ইভিএমের প্রয়োজনীয়তা থাকত না।
এর পাশাপাশি কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রেও দ্বিতীয় ইভিএম লাগছে। এখানে প্রার্থীর সংখ্যা ১৭। তার ফলে ১৬ জনের নাম থাকবে একটি ইভিএমে এবং এক প্রার্থীর নাম ও নোটা অপশন থাকবে দ্বিতীয় ইভিএমে। এই লোকসভা কেন্দ্রেও নির্বাচনী আধিকারিকদের বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রসঙ্গত এর আগেও রাজ্যের দু’টি লোকসভা কেন্দ্রে দু’টি করে ইভিএমের প্রয়োজন হয়েছিল। তার একটি, মালদা দক্ষিণ। অপরটি রায়গঞ্জ। এই দু’টি কেন্দ্রে যথাক্রমে ১৭ এবং ২০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।