সংবাদদাতা, নাগরাকাটা: বুধবার ঘড়ির কাঁটায় সকাল ১১টা। পাতা তোলার সময় একঘেয়ামি কাটাতে গুনগুন করে গান গাইছিলেন চা শ্রমিক সাকো খেরিয়া। মন ছিল কাজেই। পাতা তোলার জন্য এক পা করে এগতে এগতে কখন যে ঘুমন্ত চিতাবাঘের পেটে পা দিয়ে ফেলেছেন, তা আর খেয়াল করেননি। পাথর ভেবে পা রাখা বস্তুটি নড়েচড়ে উঠতেই মহিলা শ্রমিকের চক্ষু চড়কগাছ। চিতাবাঘের পা দেওয়ার খেসারত দিতে হল তাঁকে। মুহূর্তের মধ্যে চা শ্রমিকের উপর হামলে পড়ে চিতাবাঘটি। সেই হামলায় ক্ষতবিক্ষত হন সাকো। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সাকো খেরিয়ার মুখ ও মাথা মিলিয়ে ৩২টি সেলাই পড়ে। বুধবার সকালে নাগরাকাটার বামনডাঙা চা বাগানে এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। বর্তমানে ওই মহিলা শ্রমিক উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। সুলকাপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার শচীন চৌধুরী বলেন, চিতাবাঘের আক্রমণে এক মহিলা গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁর মুখে ও মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে। আমরা তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করেছি। ডায়না ও গোরুমারা জঙ্গল ঘেরা বামনডাঙা চা বাগানে সারাবছর চিতাবাঘ ও হাতির উপদ্রব লেগে থাকে। গত ছ’মাসে এনিয়ে ১২ জন জখম হলেন। ফলে আতঙ্ক নিয়ে কাজ করতে হয় চা শ্রমিকদের। সাকো খেরিয়ার সহকর্মী বিরসো খেরিয়া বলেন, সাকো ভুল করে ঘুমিয়ে থাকা চিতাবাঘের পেটে পা দিয়ে ফেলেন। এরপরই চিতাবাঘটি তাঁর উপর হামলা চালায়।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। এ ঘটনার পর চা শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বনদপ্তরের টহলদারির দাবি উঠেছে। খুনিয়ার রেঞ্জার সজলকুমার দে বলেন, চিতবাঘের হামলায় জখম মহিলা চা শ্রমিকের চিকিৎসার ব্যয়ভার বনদপ্তর বহন করছে। এলাকায় টহল বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বামনডাঙা চা বাগানের ম্যানেজার অমিতাভ বিশ্বাস বলেন, আমাদের ডাকে বনকর্মীরা এসেছিলেন। আমরা খাঁচা পাতার আবেদন জানিয়েছি।