কাজকর্মে আকস্মিক বিঘ্ন ও ভোগান্তি। আইনজীবী ও মুদ্রণ, কাগজ ও কৃষিজ পণ্যের ব্যবসায়ীদের শুভদিন। ... বিশদ
এদিন সকালে স্থানীয় মুনাইকান্দরা গ্রামের মহরম খান নামে ওই বৃদ্ধ একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টারে আসেন। সেখানে কয়েকজন যুবক আগে থেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছিল। তাদেরই একজনকে বৃদ্ধ বলেন, ‘আমি অসুস্থ। লেখাপড়াও জানি না। তাই আমার টাকাটা একটু তুলে দেবে?’ তাতে রাজিও হয়ে গিয়েছিল এক যুবক। বৃদ্ধ কাগজে লেখা পিন নম্বরও তাকে দেন। এরপর বৃদ্ধকে এটিএম কাউন্টারের বাইরে দাঁড়াতে বলে ভিতরে ঢোকে যুবক। কিছুক্ষণ পর সে ফিরে এসে ‘কার্ডে টাকা নেই’ বলে চলে যায়।
এর পরেই ছেলের ফোন আসে বৃদ্ধের কাছে। অ্যাকাউন্ট থেকে ২৫ হাজার টাকা তোলার কথা জানান তিনি। ছেলের ফোন পেয়ে দ্রুত কাউন্টারে গিয়ে দেখেন একজন যুবকও নেই সেখানে। এরপর রাস্তাতেই মাথায় হাত দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ততক্ষণে ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়রাও। সকলেই যুবকদের খুঁজতে থাকেন। ততক্ষণে সকলেই নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। অগত্যা বৃদ্ধ ওই ব্যাঙ্কে গিয়ে ঘটনার কথা জানাতেই তাঁর অ্যাকাউন্ট লক করে দেওয়া হয়। পরে বড়ঞা থানায় গিয়ে টাকা হারানোর কথা জানান তিনি। বড়ঞা থানার পুলিস একটি সাধারণ ডায়েরি করে বিষয়টি সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জানানোর কথা বলে।
বৃদ্ধ বলেন, আমি লেখাপড়া জানি না। এর আগেও এভাবেই টাকা তুলেছি। কিন্তু ঠকিনি। ছেলে মুম্বইয়ে মাংসের দোকানে কাজ করে। সেখান থেকে ছেলে ২৫ হাজার টাকা পাঠিয়েছিল। সেই টাকা তোলার জন্য এদিন আমি এসেছিলাম।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত পাঁচমাসে এমন ঘটনা অন্তত চারবার ঘটেছে। এর মধ্যে গতমাসে স্থানীয় মুড্ডা গ্রামের দুই মহিলার এমন ঘটনা ঘটেছে। তাঁদের স্বামীরা কর্মসূত্রে সৌদি আরবে থাকেন। স্বামীর পাঠানো টাকা তুলতে এসে তাঁরাও প্রতারিত হন। তাঁদের মধ্যে এক মহিলা বলেন, আমার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছিল। আমিও এক যুবককে বিশ্বাস করে কার্ড সহ পিন নম্বর দিয়েছিলাম। ফেব্রুয়ারি মাসে কুলি গ্রামের আরসাদ আলি নামে এক ব্যক্তির প্রায় দেড় লক্ষ টাকা গায়েব হয়েছিল। ওই ব্যক্তির কুলি মোড়ে ঝালমুড়ির দোকান রয়েছে। তিনি বলেন, এটিএম কার্ড এক যুবকের হাতে তুলে দেওয়ার পরেই ধাপে ধাপে আমার দেড় লক্ষ টাকা গায়েব হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে ব্যাঙ্ক ও সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।
এবিষয়ে কুলির ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার রামপ্রসাদ মাহাত বলেন, আমরা জনস্বার্থে বারবার প্রচার করেছি যে, এটিএম কার্ড ও নম্বর যাতে কারও হাতে তুলে না দেওয়া হয়। কিন্তু এমন ঘটনা বারবার ঘটায় আমরাও চিন্তিত।
বাসিন্দারা জানান, গত কয়েকমাসে এটিএম কাউন্টারের আশপাশে কয়েকজন যুবক ফাঁদ পেতে অপেক্ষা করে। তাই আমরা পুলিসি তৎপরতার দাবি জানাচ্ছি। বড়ঞা থানার পুলিস জানিয়েছে, এই ঘটনায় পুলিস সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছে। এমনকী সাদা পোশাকেও পুলিস এটিএম জালিয়াত চক্রকে ধরার জন্য তৎপর।