যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
মোদির স্বচ্ছ ভারত অভিযানের প্রশংসা করছিলেন দেহরি-অন-সোনের বাসিন্দা রোশন পাণ্ডে। তাঁর কথায়, কারাকাট লোকসভা আসনের এই তল্লাটের অবস্থায় আমূল বদল হয়েছে। সৌজন্যে স্বচ্ছ ভারত অভিযান। মহিলাদের এখন আর সন্ধ্যা নামার অপেক্ষায় থাকতে হয় না। শৌচাগার বানিয়ে প্রতিটি ঘরকে গর্বিত করেছেন মোদিজি।
তবে এসব সত্ত্বেও বিহারের এই আসনে জাত-পাতের সমীকরণ যে কত বড় ফ্যাক্টর, তা পরিষ্কার নগেন্দ্র মাহাতর কথায়। তিনি ওবরার গিরা গ্রামের সব্জি চাষি। নগেন্দ্রর কথায়, বিয়ে ও নির্বাচন, দুই ক্ষেত্রেই মানুষ সমানভাবে জাতপাতের দিকটি বিবেচনা করে। ২০১৪ সালে উপেন্দ্র কুশওয়ার জয়ের পিছনে বড় ভূমিকা ছিল কৈরিদের। এবারও তাঁরা কুশওয়াকে সমর্থন করছেন। এনডিএ শিবির ছেড়ে তিনি মহাজোট শিবিরে যোগ দেওয়া সত্ত্বেও।
কারাকাট লোকসভা আসনে এবার এনডিএ ও মহাজোট শিবিরের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। দুই শিবির থেকে কৈরি প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। কারাকাটের প্রায় ৯ শতাংশ ভোটার কৈরি। বর্তমান সাংসদ রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টির (আরএলএসপি) প্রধান উপেন্দ্র কুশওয়া গতবার এনডিএ প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলেন। এবার তিনি বিহারের মহাজোট শিবিরে। এখানে কুশওয়ার সঙ্গে সরাসরি লড়াই হচ্ছে এনডিএ শিবিরের জেডিইউ প্রার্থী মহাবলী সিংয়ের। ২০১৪ সালে আরজেডির কান্তি সিংকে প্রায় ১ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছিলেন কুশওয়া। সেবার এই আসন থেকে তৃতীয় হয়েছিলেন এবারের এনডিএ প্রার্থী মহাবলী সিং।
গোহ গ্রামের প্রান্তিক কৃষক ননীকান্ত মাহাতও জাত-পাতের সমীকরণের কথা বলছিলেন। তাঁর মতে, কারাকাট আসনে এবার মহাজোটের পাল্লা ভারী। ছ’টির মধ্যে পাঁচটি বিধানসভা ক্ষেত্রেই এগিয়ে মহাজোট শিবির। ভোটের চাবিকাঠি কৈরিদের হাতে। এই জাত-পাতের সমীকরণ নিয়েই তীব্র বিতর্ক চলছিল নোখার একটি বাজারের এক চায়ের দোকানে। বাজারে মুদির দোকান চালান অভয় শাহ। তিনি বলছিলেন, উপেন্দ্র কুশওয়াকে হারানো এনডিএ শিবিরের কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। কারণ তাঁর পাশে রয়েছেন যাদব, মুসলিম ও কৈরিরা। যাঁরা সম্মিলিতভাবে কারাকাটের ৩৫ শতাংশ ভোটার। ভাগ্য সহায় না থাকলে জেডিইউ প্রার্থীর মুখে হাসি ফোটা মুশকিল।
নবিনগর বিধানসভা ক্ষেত্রের বারুন বাজারে গ্রিল তৈরির কারখানা চালান সত্যেন্দ্র বিশ্বকর্মা। তাঁর বক্তব্য, জিতনরাম মাঝি ও মুকেশ সাহনিও এবার মহাজোট শিবিরে থাকায় ভুঁইয়া ও মল্লাদের সমর্থনও উপেন্দ্র কুশওয়ার দিকে থাকবে। কিন্তু এবারের নতুন ভোটার মণীশকান্ত সিংয়ের গলায় আবার অন্য সুর। তাঁর যুক্তি, কারাকাট থেকে জিতবেন এনডিএ প্রার্থীই। কুশওয়া এমনিতে ভালো নেতা। কারাকাটে নিয়মিতও এসেছেনও। কিন্তু এবারের ভোট অন্যরকম। এবার জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুতে ভোট হচ্ছে। স্থানীয় ইস্যুগুলি গুরুত্বহীন। দেশের মর্যাদা তুলে ধরার লক্ষ্যে এবার আমরা মোদিজিকে ভোট দিচ্ছি।
তবে বিজেপি নেতারা জাতীয়তাবাদের যে প্রচার চালাচ্ছেন, তাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিক্রমপুরের কৃষকরা। দাওয়াথ এলাকার প্রান্তিক কৃষক বিজয় মিশ্র বলছিলেন, ফসলের যথাযথ দাম পাওয়ার আশায় আমরা বিজেপিকে সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু প্রতিশ্রুতিই সার। কেন্দ্র ও রাজ্য, দুই জায়গাতেই এনডিএ সরকার থাকা সত্ত্বেও চাষিরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না। আমরা এখন ‘ন্যায়’ চাইছি।