আপনার মনে ধর্মভাব জাগ্রত হবে। কর্মপ্রার্থীরা কর্মের সুযোগ পাবেন। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা হবে। অর্থ নিয়ে ... বিশদ
গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসেন। মঙ্গলবার তিনি তৃণমূলনেত্রী হিসেবে বোলপুরে পদযাত্রা করেন। সেকথা সকলেরই জানা। বুধবার ছিল তাঁর ফেরার পালা। আসার দিন কলকাতা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নেমেছিল বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহের পিছনে। কিন্তু ফেরার জন্য হেলিপ্যাডের ব্যবস্থা হয়েছিল সোনাঝুরিতে, আদিবাসী গ্রাম বল্লভপুর ডাঙা ও সরকার ডাঙার পাশে একটি মাঠে। সেই সোনাঝুরিতেই রাস্তার ধারে দাদা-বউদির হোটেল। সেখানে ভাত, ডাল তরকারির পাশাপাশি ঘুগনি, চপ-মুড়িও পাওয়া যায়। সোনাঝুরিতে খোয়াইয়ের হাট দেখে পর্যটকরা ওই হোটেলে দুপুরের খাবার খান। এদিনও তার অন্যথা হয়নি। কিন্তু এদিন ওই হোটেলের জন্য যে বাড়তি চমক অপেক্ষা করে আছে, তা জানতেন না বাবু বাগদি-মেনকা বাগদি।
তখন দুপুর ১টা। মুখ্যমন্ত্রী বল্লভপুর ডাঙায় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে আচকমকা ওই হোটেলে চলে যান। হোটেলের বাইরে একটি টুল পাতা ছিল। সেখানেই পসে পড়েন ‘দিদি’। ততক্ষণে দোকানি চা বসিয়ে দেন। হোটেলের অন্য একটি উনুনে তখন কড়াইয়ে তরকারি রান্না হচ্ছে। তা দেখে বাবুকে মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞাসা করেন, কী তরকারি করছ? মেনকা বাগদি বলেন, বরবটি, আলু, কুমড়ো, বেগুন দিয়ে তরকারি হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলে ওঠেন, ‘তোমরা জানো, আমিও রান্না করতে পারি!’ এরপরই তিনি টুল থেকে উঠে খুন্তি হাতে নিয়ে সব্জি নাড়তে শুরু করেন। রাঁধতে রাঁধতেই বলেন, আঁচ কমাতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী খুন্তি হাতে রান্না করছেন দেখে মেনকাদেবী হতবাক। তিনি বলেন, দিদি, আপনাকে ধন্যবাদ। কিছুক্ষণ রান্নার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জল দাও, হয়ে গিয়েছে। না হলে পুড়ে যাবে। কড়াই ঢাকা দিতে বলেন তিনি। চার-পাঁচটা কাঁচালঙ্কা দিলে স্বাদ আরও বেড়ে যাবে বলে তিনি পরামর্শ দেন। এরপর ওই দোকানে চা খান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি অনুব্রতবাবুকে বলেন, কেষ্ট টাকা দে। অনুব্রতবাবু মেনকার হাতে ৫০০ টাকার একটি নোট দেন। বড় নোট দেখে মেনকা বলেন, এত টাকা লাগবে না। মুখ্যমন্ত্রী তখন বলেন, মিষ্টি খেয়ে নিও। বলেন, তোমার দোকানটা ভালো। ভালো করে চালাও। এরপর চায়ের প্রশংসা করে ধন্যবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পাশের দোকানে গিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়ান। ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে হেলিপ্যাডে চলে যান।
আর তারপর? ‘দিদির হাতে রান্না করা সব্জি আছে। খাবেন তো আসুন’। নাগাড়ে হাঁকতে থাকেন দাদা-বউদির হোটেলের বাবু বাগদি। পর্যটকরাও কৌতূহলী হয়ে ঢুঁ মারতে থাকেন। খোদ মুখ্যমন্ত্রী রান্না করেছেন শুনে পুলিস কর্মীরাও হোটেলের পাশে বেঞ্চে ভাত খেতে বসে পড়েন। দিনের শেষে দাদা-বউদির দুই কর্মকর্তা বাবু আর মেনকা নিজেদের জন্য কিছুটা রেখে বাকি তরকারি বিক্রি করে দেন। বাবু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এর আগেও আমার হোটেলে এসেছেন। জলের জন্য একটি টিউবওয়েল করে দিতে অনুরোধ করেছিলাম। সেটি হয়ে গিয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তৈরি তরকারি বলে তাড়াতাড়ি বিক্রি হয়ে গিয়েছে।