কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
২০১৬ সালে করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সতেরো হাজার ভোটে জয়ী হন মহুয়া মৈত্র। এবার তিনি কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। সামনেই করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। লোকসভার রেজাল্ট প্রকাশিত হওয়ার পরেই করিমপুরকে টার্গেট করেছে গেরুয়া শিবির। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে করিমপুর-১ ব্লকে ভালো ফল করেছিল বিজেপি। লোকসভা নির্বাচনেও সেই ধারা অব্যাহত। করিমপুর-১ ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি লিড নিয়েছে ৫০ হাজার। আর তৃণমূল পেয়েছে ৪০ হাজার। করিমপুর-২ ব্লক এলাকা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। এই ব্লকের ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ৩৯ হাজার। বিজেপি পেয়েছে মাত্র সতেরো হাজার। এখানেই বিজেপি পিছিয়ে গিয়েছে।
গত লোকসভা নির্বাচনে করিমপুর বিধানসভায় তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ৮৭ হাজার ৫১৩টি। বিজেপি পেয়েছে ৭৩ হাজার ১৭৩টি। ১৪ হাজার ৩৪০টি ভোটে জয় এসেছে শাসক দলের। ২০১৬ সালে তৃণমূল ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এবার তা কমে হয়েছে ৪৩ শতাংশ। অর্থাৎ তিন শতাংশ ভোট কমে গিয়েছে। অন্যদিকে, ২০১৬ সালে বিজেপির ভোট ছিল ১২ শতাংশ। তা বেড়ে হয়েছে ৩৫ শতাংশ। বিজেপির ভোট ১২ থেকে এক ধাক্কায় ৩৫ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে।
ভোট কমার পিছনে শাসক দলের একাংশের ব্যাখ্যা, বিজেপি মেরুকরণের রাজনীতি করেছে। সংখ্যাগুরুরা ঢেলে ভোট দিয়েছেন পদ্ম ছাপে। বামেদের ভোট গিয়েছে মোদির দলে। তাছাড়া, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বহু এলাকায় সাধারণ ভোটাররা নিজের ভোট নিজে দিতে পারেননি। গণনার ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা ছিল না। সাধারণ ভোটাররা বিমুখ হয়েছেন।
তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামী বুধবার মহুয়া মৈত্র দলের নেতা কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ওই দিনই উপনির্বাচনের রণকৌশল চূড়ান্ত হবে। করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে মহুয়া মৈত্র কোনও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ব্যক্তিকে প্রার্থী করতে চাইছেন। স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, এলাকা থেকেই কাউকে প্রার্থী করা হোক। বহিরাগত প্রার্থী হলে বিজেপির সঙ্গে টক্কর দেওয়াটা সহজ হবে না। তবে প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে এখনও কারও নাম ঠিক হয়নি। তৃণমূলের করিমপুর-১ ব্লক সভাপতি তরুণ সাহা বলেন, বুধবার উপনির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটি বৈঠক হবে। তাতে উপস্থিত থাকবেন কৃষ্ণনগরের সাংগঠনিক সভাপতি মহুয়াদেবী। উপনির্বাচনে আমরা কী কী ইস্যু নিয়ে নির্বাচনের ময়দানে নামব, তা ওইদিনই ঠিক করা হবে।
এদিকে, লোকসভা নির্বাচনের রেজাল্ট ঘোষণার পরেই করিমপুর নিয়ে বিজেপি কোমর বেঁধে নেমেছে। গেরুয়া শিবির বুথ ও অঞ্চল কমিটি নিয়ে বৈঠক শুরু করে দিয়েছে। বিজেপির তরফেও প্রার্থী হিসেবে কারও নাম উঠে আসেনি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সংখ্যাগুরু অধ্যুষিত করিমপুর-১ ব্লক এলাকা থেকে অধিক ভোটের লিড নেওয়ার টার্গেট নিয়েছে বিজেপি। আটটি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সংখ্যাগুরুদের ঝেড়ে ভোট পেলেই জয় নিশ্চিত বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা। তাঁরা বলেন, করিমপুর মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ফলে লোকসভা নির্বাচনে এবার তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বিধানসভার উপনির্বাচনে এই ‘ত্রুটি’ থাকবে না। ফলে করিমপুরে ঘাসফুল শুকিয়ে যাবে। বিজেপির নদীয়া(উত্তর) জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, করিমপুরে আমাদের জয় এবার কেউ আটকাতে পারবে না। তৃণমূল হয়তো সংখ্যালঘু তোষণের তাস খেলবে। কিন্তু তাতেও ওদের ভরাডুবি হবে।