পড়ে গিয়ে বা পথ দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্তির যোগ থাকায় সতর্ক হন। কর্মে উন্নতি ও সাফল্যের যোগ। ... বিশদ
কথিত আছে, গৌড়ের রাজা তখন দেবপাল। কাঁকসার জঙ্গল ঘেরা ত্রিষষ্টিগড়ের সামন্ত রাজা তখন কর্ণ সেন। তাঁর আশ্রিত সোম ঘোষের পুত্র ছিলেন ইচ্ছাই ঘোষ। তিনি ত্রিষষ্টিগড়ের মধ্যেই আলাদা ঢেকুরগড় স্থাপন করেন এবং নিজেকে স্বাধীন রাজা হিসেবে ঘোষণা করেন। ইছাই ঘোষের এই পদক্ষেপ মেনে নেননি কর্ণ সেন। শুরু হয় যুদ্ধ। ইছাই ঘোষের সাথে যুদ্ধে কর্ণ সেন হেরে যান। জয়ের নিশান হিসেবে সুউচ্চ শিখর দেউল গড়ে তোলেন ইচ্ছাই ঘোষ। এই দেউলের উচ্চতা প্রায় ৮০ ফুট। পুরোটাই ইটের তৈরি। তবে দেউলে কোনও বিগ্রহ নেই। স্থানীয়রা বলেন, সারা বছর অল্প ভিড় হলেও শীতের মরশুমে ভিড় বেড়ে যায়। অজয় নদের পাশে দেউল দেখার পাশাপাশি অনেকেই এখানে পিকনিক করতে ভিড় জমান। কিন্তু দেউলে আগাছা জন্ম নিয়েছে। তা পরিষ্কার করা দরকার। না হলে স্থাপত্যের ক্ষতি হবে। বর্ধমান থেকে দেউল দেখতে এসেছিলেন সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে দেউল এবং সংলগ্ন এলাকায় শ্যামরূপা মন্দিরের নাম রয়েছে। কিন্তু দেউল দেখতে এসে হতাশ হলাম। দেউলের উপরে আগাছার সঙ্গে বট, অশ্বত্থ গাছও হয়েছে। অবিলম্বে সংস্কার করা প্রয়োজন। ইতিহাস শিক্ষক সাহেব মণ্ডল বলেন, দেউলে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার বোর্ড লাগানো রয়েছে। স্থানটি সংরক্ষিত। বোর্ডে লেখা আছে, মধ্য অষ্টাদশ শতকে দেউল তৈরি হয়েছে। তবে অনেকের মতে এটি আরও প্রাচীন। তার কারণ ইছাই ঘোষের রাজত্বকাল তারও আগে ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, দেউলের পাশেই রয়েছে হরিণ ও ময়ূরদের জন্য সংরক্ষিত এলাকা। সেটিও বর্তমানে দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। তবে এলাকার অন্যতম মূল আকর্ষণ দেউলের আগাছা পরিষ্কার করা দরকার। স্থানীয়রা জানান, দেউলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে দেউল পার্ক। সেখানেও বহু মানুষ ভিড় করেন। কিন্তু দেউলের স্থাপত্য যত্নে রাখা না হলে তার প্রভাব পড়বে পর্যটনে। এলাকার ইতিহাস বাঁচাতে ও পর্যটনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সচল করতে দেউলের পরিচর্যা দরকার। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার কালনা সাব সার্কেলের সিনিয়র কনজারভেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট অমিত মালো বলেন, নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। কাজ দ্রুত চালু হবে।-নিজস্ব চিত্র