সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: চোপড়ার ছায়া এবার শিলিগুড়িতে। পরকীয়া সম্পকের জড়িত থাকার অভিযোগে এক গৃহবধূকে সালিশি সভায় ডেকে মারধর করার ঘটনা ঘটল। আর তার জেরে অপমানে আত্মঘাতী হন গৃহবধূ। ঘটনাটি শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বক্রাভিটা গ্রামের। এই আত্মহত্যার খবর চাউর হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। ওই গৃহবধূর বিরুদ্ধে যে পরকীয়া সম্পর্কের অভিযোগ আনা হয়েছিল তার ভিত্তিতে আজ, মঙ্গলবার সকালে তল্লাশি চালিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী সহ চারজনকে পুলিস গ্রেপ্তার করেছে বলে সূত্রের খবর। যদিও গ্রেপ্তারের ব্যাপারে পুলিস মুখ খুলতে চাইছে না। জানা গিয়েছে, গ্রামেরই এক যুবকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে ছিল ফুলবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বক্রাভিটার গৃহবধূ সবিতা বর্মন। দিন দশেক আগে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। অনেক খোঁজ করেও তাঁর কোনও হদিশ মেলেনি। এর কয়েকদিন বাদে স্বামীকে ফোন করে তাঁকে উদ্ধার করতে অনুরোধ করেন সবিতা। সেই মতো স্বামী তাপস বর্মন গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। সে সময় পরকীয়ার বিষয়টি সবিতা মেনেও নেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সবকিছু মিটমাটও হয়ে যায়। কিন্তু পাড়ার কিছু স্বঘোষিত ‘মাতব্বর’ মহিলা বিষয়টি মেনে নিতে চাইছিলেন না। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের কাছে অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী শম্ভু রায় গতকাল সোমবার সালিশি সভা বসান। অভিযোগ, সেই সালিশি সভাতেই গৃহবধূকে মারধর করা হয়। এই ঘটনায় অপমানিত হয়ে ওই গৃহবধূ বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। যদিও এব্যাপারে অভিযুক্ত শম্ভু রায় জানান, স্থানীয় কয়েকজন মহিলা চড়-থাপ্পড় মেরেছে। ব্যাপক মারধর করা হয়নি বলেই দাবি তাঁর। ঘটনার পরপরই ওইদিন রাতেই সবিতা আত্মঘাতী হন।  রাতেই মৃত গৃহবধূর পরিবারের তরফে এনজেপি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিস আজ, মঙ্গলবার সকালে এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর শুরু করে। সালিশিসভায় উপস্থিত থাকার অভিযোগে চারজন মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।