কর্মে ও ব্যবসায়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য। কৃষিপন্ন বিক্রেতা ও ডাক্তারদের অর্থকড়ি প্রাপ্তি হবে সর্বাধিক। বন্ধুকে টাকা ... বিশদ
একেই নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দর বর্তমানে আকাশ ছুঁয়েছে। তার মধ্যে বেশি দাম দিয়ে ভেজাল মেশানো পণ্য নিয়ে জেলাবাসী বাড়ি ফিরছেন। ওইসব সামগ্রী দিয়ে রান্না করা খাবার খেয়ে অনেকেই নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বেশিরভাগই পেটের রোগে ভুগছেন। অনেকের চর্মরোগও হচ্ছে। একেই মালদহের জলে আর্সেনিক ও আয়রনের আধিক্য রয়েছে। তার উপর ভেজাল খাবার খেয়ে জেলাবাসীর কার্যত নাভিশ্বাস উঠছে। বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ করার দাবি উঠেছে। প্রয়োজনে এলাকা ভিত্তিক ভেজালের কারবারের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর দাবিও জানিয়েছেন জেলাবাসী। মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) বলেন, ভেজালযুক্ত খাবার বিক্রির বিরুদ্ধে আমরা ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছি। এ ব্যাপারে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের ফুড সেফটি বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা দু’জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। ভেজাল সামগ্রী বাজারজাত করা বা বিক্রি কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট তথ্য বা অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় অভিযান চালানো হবে। ভেজাল কারবারে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, জেলার কিছু গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন পণ্যে ভেজাল মেশানো হয়। চাঁচল এলাকা থেকে আমার কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ এসেছিল। ওই ধরনের সামগ্রী বিক্রি না করার জন্য আমরা ব্যবসায়ীদের বলেছি। তারপরও কেউ বিক্রি করলে আমরা দায়িত্ব নেব না। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে। আমরা ওই ধরনের ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াব না। উল্লেখ্য, রাজ্যের অন্যান্য জেলার তুলনায় মালদহে বিভিন্ন সামগ্রীর দাম বেশ চড়া। অবশ্য কিছু পণ্য সস্তাতেও পাওয়া যায়। জেলার সিংহভাগ বাসিন্দা পরিচিত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেই পণ্য কেনেন। তবে গ্রাম থেকে শহরে এসে সামগ্রী কেনার ক্ষেত্রে সেই পরিচিতি থাকে না। তখন সরল বিশ্বাসেই ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে সামগ্রী ও অর্থে বিনিময় হয়। মালদহ জালনোট পাচারের জেলা হিসাবে চিহ্নিত। ফলে টাকার আদান প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ সতর্ক থাকেন। তবে মুদি বা অন্য দোকানে সামগ্রী কেনার সময় সেই সতর্কতা চোখে পড়ে না। সেই সুযোগে ব্যবসায়ীদের একাংশ ভেজাল সামগ্রী বিক্রি করেন বলে অভিযোগ। এদিকে, হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল এলাকায় মাঝেমধ্যেই বেআইনি কারখানায় পুলিস অভিযান চালায়। এর আগে চাঁচল-২ ব্লকের কাণ্ডারণ এলাকায় গুঁড়ো হলুদ, জিরে এবং ভোজ্য তেলে ভেজাল মেশানো হচ্ছিল। সেখানকার একটি কারখানায় একাধিক নামকরা ব্রান্ডের লেভেল সাঁটিয়ে সর্ষের তেল পাইকারি হারে বিক্রি করা হচ্ছিল। ওই তেলে ঝাঁঝ আনতে রাসায়নিক মেশানো হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। ওই ধরনের রাসায়নিক শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। ওই তেল পরে বাজারে খুচরো দরে বিভিন্ন দোকানে ক্রেতাদের মধ্যে বিক্রি করা হয়। হরিশচন্দ্রপুর-১ ব্লক এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ভেজাল হলুদের কারবার রমরমিয়ে চলে বলে অভিযোগ। করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের সময় গোপন ডেরায় সবচেয়ে বেশি ভেজাল মেশানো খাদ্যসামগ্রী তৈরি করা হয়েছিল বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। এ ব্যাপারে লাগাতার পুলিসি অভিযানের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।