গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ আগমনের সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরেই সাহিত্যচর্চা করে আসছেন তাপসবাবু। ইতিমধ্যেই হরিরামপুর থানার ওই এএসআই ছোট গল্প লিখে পাঠকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। আগামী বইমেলায় তাঁর লেখা যে বইটি প্রকাশ পেতে চলেছে তাতেও ফুটে উঠেছে আদতে এক পুলিস কর্মীর কথাই। একজন পুলিস কর্মী কিভাবে একজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক হয়ে উঠলেন, সেই কাহিনী ফুটে উঠেছে তাপসবাবুর কলমে। বই প্রকাশের আগেই তাঁর সঙ্গে কর্মরত এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের অকালমৃত্যু হওয়ায় বই বিক্রির সমস্ত টাকা তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাপসবাবু। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মৃত সেই সিভিক ভলান্টিয়ারের পরিবার তাপসবাবুর কাছে কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছে। একজন সহকর্মীর মৃত্যুতে এভাবে তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর এই প্রচেষ্টা যথেষ্ট প্রশংসনীয় বলে মনে করছেন পুলিসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
হরিরামপুর থানায় কর্মরত এএসআই তাপস মণ্ডল বলেন, আমি ডিউটির সময়ে দায়িত্ব সামলাই। তারপর অবসর সময় ছোট গল্প লিখতাম। তবে আমার কখনও কোনও বড় উপন্যাস লেখার সাহস হয়নি। আমার সহকর্মী সিভিক ভলান্টিয়ার আকবর আলি আমাকে নানাভাবে উৎসাহিত করত। প্রথমে এই কাহিনী লিখে আমার সহকর্মী আকবরকে শুনিয়েছিলাম। তখন সে তার ভালো লাগার কথাও আমাকে জানিয়েছিল। গত ৩১ ডিসেম্বর আমারা একসঙ্গে ডিউটি করেছিলাম। সেদিন আকবর আমাকে বলেছিল, প্রকাশ পাওয়ার পর আমি যেন তাকে বইটি পডতে দিই। তারপর হঠাৎ রাতে ব্রেনস্টোক করে তার মৃত্যু হয়। আমি আকবর আলির বাবার সঙ্গে দেখা করে এসেছি। একটি মাত্র ছেলেকে হারিয়ে তিনি মর্মাহত। হতদরিদ্র পরিবার। তাই তাঁদের পাশে দাঁড়াতে আমি ঠিক করেছি, কলকাতা বইমেলাতে যত বই বিক্রি হবে, সব টাকা ওই পরিবারের হাতে তুলে দেব।
জেলা আইবি ইন্সপেক্টর পবিত্র বর্মন বলেন, আমাদের এক এএসআই তাপস মণ্ডল বই লিখেছেন। কলকাতার বই মেলায় সেই বই প্রকাশিত হবে। বই বিক্রির সম্পূর্ণ টাকা মৃত সিভিক ভলান্টিয়ারেরর পরিবারকে দেবেন বলে তিনি আমাদের জানিয়েছেন। একটি মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন তাপসবাবু। পুলিস কর্মীদের যে মানবিক মুখ রয়েছে, এটা তার জ্বলন্ত উদাহরণ।
হরিরামপুর থানার এএস আই তাপস মণ্ডলের লেখা বই বিক্রির টাকা পাওয়ার আশায় বুক বাঁধছেন হরিরামপুর সৈয়দপুরের হতদরিদ্র ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের পরিবার। একমাত্র ছেলের মৃত্যু হওয়ায় এখন সেই পরিবারে রোজগারের কেউ নেই বলে জানা গিয়েছে। দায়িত্ববান পুলিস কর্মী ও সাহিত্যিক হওয়ার পাশাপাশি তাপসবাবুর মানবিক ভূমিকারও প্রশংসা করেছেন সকলে।