পড়ে গিয়ে বা পথ দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্তির যোগ থাকায় সতর্ক হন। কর্মে উন্নতি ও সাফল্যের যোগ। ... বিশদ
মোদি সরকারের এই অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট যথেষ্ট উদ্বেগজনক। সেখানে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে যে সমস্যাটি, তা হল গুদামের অভাব। গুদাম থেকে রেশন দোকানে খাদ্যবস্তু পৌঁছনোর ক্ষেত্রেই নষ্ট হচ্ছে টন টন চাল-গম। আর তার পরিমাণ চমকে ওঠার মতো। খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের দাবি, গত সাড়ে পাঁচ বছরে (২০১৯-২০ থেকে চলতি অর্থবর্ষের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) নষ্ট হয়েছে ৬.২১ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য। এক জায়গা থেকে অন্যত্র স্থানান্তরের সময়ই তা নষ্ট হয়েছে। ফলে জলে গিয়েছে ১,৮২৩ কোটি টাকা।
যে দেশের প্রায় ১৯ কোটি মানুষ অপুষ্টির শিকার, সেখানে এভাবে খাদ্যশস্য নষ্ট হবে কেন? স্বাভাবিকভাবেই উঠেছে এই প্রশ্ন। সরকারি রিপোর্টেই বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত সংখ্যক গুদাম তৈরিতে ব্যর্থ ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এফসিআই)। কৃষকদের থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহের পর তা মজুত রাখার জন্য গোটা দেশে গুদাম রয়েছে ২,১৮১টি। এর মধ্যে এফসিআইয়ের নিজস্ব গুদাম মাত্র ৫৭০টি। বাকি ১,৬১১টিই ভাড়া নেওয়া।
মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন মসৃণভাবে চালানোর লক্ষ্যে পর্যাপ্ত গুদাম তৈরিই করতে পারেনি মোদি সরকার। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ৫০,১০০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য রাখার উপযুক্ত গুদাম তৈরির টার্গেট ছিল এফসিআইয়ের। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে কত? মাত্র ১,৭৬০ মেট্রিক টন রাখার গুদাম। চলতি অর্থবর্ষে ফের টার্গেট বাড়িয়েছে কেন্দ্র। ব্যবস্থা করতে হবে ৫৮ হাজার ৫৪০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য রাখার। কিন্তু সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কাজ হয়েছে ‘জিরো’!
স্থানান্তরের সময় খাদ্যশস্য নষ্ট হওয়া কিছুতেই আটকাতে পারছে না কেন্দ্র। তার ফল পরোক্ষে ভুগতে হচ্ছে রেশন গ্রাহককে। অনেক সময়ই কম পরিমাণ খাদ্যশস্য মেলার অভিযোগ দিন দিন বাড়ছে। ‘হ্যান্ডেলিং লস’ পূরণ করতে কুইন্টাল প্রতি এক কেজি করে খাদ্যশস্য কেন্দ্রের কাছে ভর্তুকি হিসেবে চেয়েছিলেন রেশন দোকানদাররা। চাওয়া হয়েছিল নিশ্চিত উপার্জন, বাড়তি কমিশন। কিছুই মেলেনি পায়নি। তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি সৌগত রায়ের প্রশ্নের জবাবে সরকার সম্প্রতি সংসদে জানিয়েছে, এসব দেওয়া হবে না। অথচ প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা বজায় রাখতে রেশন দোকানদাররাই ভরসা। তারা ঝাঁপ বন্ধ করলে কিন্তু মোদির ফ্রি খাদ্যশস্য দেওয়ার প্রচারও বন্ধ হয়ে যাবে।
নিজেদের প্রাপ্য না মেলায় আগামী ৭ জানুয়ারি দিল্লিতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের স্ট্র্যাটেজি বৈঠক ডাকা
হয়েছে। সারা ভারতের রেশন দোকানদার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু সেকথা জানিয়েছেন। গত ৬ ডিসেম্বর নীতি আয়োগের এক বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিব রবিশঙ্কর জানিয়েছেন, মাত্র ১১.৭ শতাংশ রেশন দোকানদার প্রতি মাসে কোনও রকমে ১০ হাজার টাকা উপার্জন করেন। ফলে তাঁরা বেঁকে বসলে ৮০ কোটি মানুষও পাবে না খাদ্যশস্য। মোদি সরকারের গাফিলতিতে অব্যবস্থা চরমে!