পড়ে গিয়ে বা পথ দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্তির যোগ থাকায় সতর্ক হন। কর্মে উন্নতি ও সাফল্যের যোগ। ... বিশদ
চিল্কিগড় রাজবাড়ি বহু ইতিহাসের সাক্ষী। রাজা গোপীনাথ সিংহ মত্তগজ প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে এই রাজবাড়ি স্থাপন করেন। ঝাড়গ্ৰাম শহর থেকে ১৩ কিমি দূরে রাজপ্রাসাদ। প্রধান রাস্তার উপরেই প্রাসাদে প্রবেশের বড় তোরণদ্বার। সামনে বিশাল চত্বর। সেখানে একরত্ন মন্দির, রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও শিবালয়। এতদিন প্রাসাদের ভিতরে বাইরের মানুষের প্রবেশাধিকার ছিল না। অন্দরমহল মুঘল ও রাজস্থানি স্থাপত্য শৈলীতে তৈরি। প্রাসাদে পৃথক জেনানা মহল রয়েছে। অসাধারণ দরবার হল আজও অটুট। এবার রাজবাড়িরগোটা অন্দর মহল উন্মুক্ত। ঘুরে ঘুরে দেখতে পারবেন পর্যটকরা।
রাজবাড়ির হেরিটেজ অতিথিশালায় রাতে থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। অ্যাপায়নে রাজকীয় থালি। জঙ্গলমহলের খাদ্যসংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে ঐতিহ্যবাহী পদও পাওয়া মিলবে। রাজবাড়িতে এসে রুম বুকিং করা যাবে। অনলাইন ব্যবস্থাও রয়েছে। রাজ পরিবারে বর্তমান বংশধর তেজসচন্দ্র দেও ধবলদেব বলেন, ‘আমাদের রাজবাড়ির সঙ্গে বহু ইতিহাস জড়িত। এলাকাটি আগে জঙ্গলমহল বা বড়মহল নামে পরিচিত ছিল। রাজা গোপীনাথ সিংহের কন্যা সুবর্ণমণির সঙ্গে ধলভূমগড়ের রাজা জগন্নাথ সিংহ দেও ধবলদেবের বিয়ে হয়। পরবর্তীতে চিল্কিগড়ের রাজা হন তাঁদের পুত্র কমলাকান্ত দেও ধবলদেব। সেইসময় থেকে এই রাজবাড়ির অন্দরমহলে বাইরের কোনও মানুষের প্রবেশাধিকার ছিল না। রাজবাড়ির ইতিহাসে এই প্রথমবার অন্দরমহলে সাধারণ মানুষ ঢোকার ছাড়পত্র পাচ্ছেন। মূলত পর্যটকদের জন্য এই ব্যবস্থা। চিল্কিগড় হেরিটেজ অতিথিশালায় পর্যটকরা রাতে থাকতে পারবেন। রুমের ভাড়া, ৮০০ , ১০০০ ও ১২০০ টাকা। রাজবাড়ির স্পেশাল থালির সঙ্গে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন খাবারের পদেরও ব্যবস্থা রয়েছে।’রানি পল্লবী সিং দেও ধবলদেব বলেন, ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই জেলাকে পর্যটনস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন। পর্যটনস্থল হিসেবে চিল্কিগড় এতদিন কিছুটা হলেও উপেক্ষিত ছিল। পর্যটকরা রাজবাড়িতে থেকে এই এলাকা এবার ঘুরতে পারবেন।আগে এই সুযোগ ছিল না।’
ঝাড়গ্রাম হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘চিল্কিগড় রাজবাড়ির বর্তমান সদস্যদের এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ইতিমধ্যে অন্যতম পর্যটনস্থল হয়ে উঠেছে। বহু পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। চিল্কিগড়েও এবার পর্যটকদের ভিড় বাড়বে বলে আশা করছি। অন্যান্য রাজবাড়ির সদস্যরাও এই ধরনের উদ্যোগ নিলে জেলার পর্যটন শিল্পের পরিধি আরও বেড়ে যাবে’। চিল্কিগড় বেড়াতে এসেছেন উত্তর ২৪পরগনার গোবরডাঙার বাসিন্দা শান্তনু চক্রবর্তী। তিনি বলছিলেন, ছোটবেলায় ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়ে লেখায় চিল্কিগড় রাজবাড়ির কথা প্রথম জানতে পারি। ঝাড়গ্ৰামের অনান্য পর্যটনস্থলে অনেকবার এসেছি। কিন্তু এখানে আসা হয়নি। চিল্কিগড় রাজবাড়ির হেরিটেজ অতিথিশালায় রাতে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে জেনে এলাম। অরণ্যের ভিতর এমন রাজবাড়িতে থাকার অনুভূতি সত্যি আলাদা। -নিজস্ব চিত্র