সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধাবিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
বুধবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশ জলমগ্ন হওয়ার পাশপাশি হুগলি, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ কয়েকটি জেলায় জনজীবন কিছুটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বেশ কিছু এলাকা জলমগ্নও হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর, দ্বারকেশ্বরে নদীর জলের তোড়ে অস্থায়ী রাস্তা ও বাঁশের সাঁকো ভেঙে যায়। অতি বৃষ্টির জেরে পুরুলিয়ায় জয়চণ্ডী পাহাড়ে ধস নেমেছে। ভারী বর্ষণে দামোদর, অজয়, দ্বারকেশ্বর, দ্বারকা, রূপনারায়ণ, ময়ূরাক্ষী সহ বিভিন্ন নদনদীতে জলস্তর বেড়েছে। কোনও কোনও নদীর জলস্তর ছুঁয়েছে বিপদসীমাও।
আলিপুর আবহাওয়া অফিসে এদিন সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৪৪ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। গত মাসে ঘূর্ণিঝড় যশ আছড়ে পড়ার পর ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় ৮৯ মিমি বৃষ্টি হয়েছিল। এদিন রাজ্যের মধ্যে সবথেকে বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে (১৭৮.৬ মিমি)। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, জুন মাসে কলকাতায় এর থেকে বেশি বৃষ্টিপাতের নজির আছে। সেটা ২০১৮ সালে। ওই বছর ২৬ জুন শহরে বৃষ্টি হয়েছিল ১৬২ মিমি। ২০১১ সালের ১৮ জুন বৃষ্টি হয়েছিল ১৫৫ মিমি। জুন মাসে একদিনে সর্বকালীন রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছিল ১৯০৮ সালে (৩০৩ মিমি)। বৃষ্টি ও মেঘলা আকাশের জন্য কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (২৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এদিন স্বাভাবিকের থেকে ৮ ডিগ্রি কম ছিল।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যেপাধ্যায় জানিয়েছেন, শুক্রবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ জেলার কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলাতেও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার মুর্শিদাবাদ, বীরভূম সহ উত্তরবঙ্গের হিমালয় সংলগ্ন জেলার কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। রবিবার থেকে সামগ্রিকভাবে রাজ্যে বৃষ্টির মাত্রা কমবে।
কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় বুধবার রাত থেকে বেশি মাত্রায় বৃষ্টি হওয়ার কারণ কি? আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা জি সি দাস জানিয়েছেন, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত তো আছেই। তার সঙ্গে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখার উপস্থিতি ও বায়ুমণ্ডলের চাপের তারতম্যর জন্য বঙ্গোপসাগরের দিকে থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকে মেঘ সৃষ্টি করেছে। বুধবার রাতে বঙ্গোপসাগরের দিক থেকে মেঘের সমাবেশ শুরু হওয়ার পর বৃষ্টি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সারাদিন তার জের চলেছে। বিশেষজ্ঞদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ, বুধ-বৃহস্পতিবার রাজ্যের যে সব জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে, সেখানে শুক্রবার ভারী থেকে অতি ভারী মাত্রায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গতকাল রাত থেকে কলকাতায় তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। বহু জায়গায় জল জমেছে। আবার বান আসতে পারে। জেলাশাসকদের বলছি, সবাই প্রস্তুত থাকুন।