কর্মে ও ব্যবসায়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য। কৃষিপন্ন বিক্রেতা ও ডাক্তারদের অর্থকড়ি প্রাপ্তি হবে সর্বাধিক। বন্ধুকে টাকা ... বিশদ
বেহালার ব্রিক ফিল্ড রোডে দোতলা বাড়ি মণীন্দ্রবাবুর। চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন ২০০৪ সালে। আপন বলতে এখন দুই মেয়ে আর এক ছেলে। তিনজনেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ২০০৭ সালে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর মণীন্দ্রবাবুর সাজানো সংসারে শুরু হয় কালবৈশাখী। বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ছেলের। তারপর দু’বারের ডিভোর্সি, বয়োজ্যেষ্ঠ এক মহিলাকে বিয়ে করে ছেলে। শুরু হয় দুঃসময়। ছেলে ও বউমার মাত্রাছাড়া অত্যাচার সহ্যের বাঁধ ভেঙে দেয় মণীন্দ্রবাবুর।
প্রথমে নতুন বউমাকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও একটা সময় আর ধৈর্য রাখতে পারেননি এই বৃদ্ধ। খাওয়া-পরা কার্যত শিকেয় উঠেছিল। শেষমেশ ভারতীয় ফৌজদারি আইনের একাধিক ধারায় তিনি মামলা ঠোকেন ছেলে ও বউমার বিরুদ্ধে। চেয়েছিলেন খোরপোশ। অন্যদিকে, বউমাও ছাড়ার পাত্র নন, তিনিও শ্বশুরের বিরুদ্ধে পাল্টা বধূ নির্যাতনের অভিযোগ আনেন। শেষ অবধি শুভানুধ্যায়ী ও আত্মীয়দের মধ্যস্থতায় সেই মামলাগুলি প্রত্যাহৃত হয়। কিছুটা আপস-মীমাংসা করেই চলতে থাকে জীবন। এরমধ্যেই ২০২০ সালে করোনায় আক্রান্ত হন মণীন্দ্রবাবু। প্রথমে এক বেসরকারি হাসপাতাল ও পরে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। হাসপাতালে ছিলেন টানা ২২ দিন। তাঁর অভিযোগ, বেসরকারি হাসপাতালে ৩ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা বিল হলেও ছেলে-বউমা তাঁর কাছ থেকে ১১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আলমারির তালা ভেঙে নগদ টাকা ও দামি জিনিসপত্র লোপাট করে দিয়েছে তারা। এখন তাদের নামে বাড়ি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে, অত্যাচারও করছে।
প্রথম শুনানিতে বৃদ্ধ আদালতকে বলেন, ব্যাঙ্কে চাকরি করে ছেলে। তার আলাদা থাকার সামর্থ্য আছে। এখনই ওদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হোক। আদালত সেই মতো হরিদেবপুর থানাকে বলে ছেলে-বউমাকে পত্রপাঠ বিদায় করে দিতে। পরের শুনানির দিন বৃদ্ধ
এসে বলেন, ছেলে-বউমা তো গিয়েছে, কিন্তু নাতি ও তিনটি
কুকুরকে রেখে গিয়েছে তারা। নাতিকে দেখভাল করবে কে, আর কুকুরদেরই বা খেতে দেবে কে? আদালত ফের নির্দেশ দিয়ে বলে, তিনদিনের মধ্যে সন্তান ও কুকুরদের সরিয়ে নিতে
হবে মণীন্দ্রবাবুর ছেলেকে। ফাঁকা বাড়িতে এখন বৃদ্ধ একা। তাই চাইছেন জীবনের বাকি দিনগুলি সঙ্গিনীকে নিয়ে সুখে কাটাতে।