ফিরদৌস হাসান, শ্রীনগর: কাজিগুন্দ। কাশ্মীরের প্রথম স্টেশন। কমলা ও ধূসর রঙের বিশেষ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পাহাড়ের কোল থেকে উঁকি দিতেই চারপাশে উচ্ছ্বাস। নয়াদিল্লি থেকে কাশ্মীর পৌঁছল এই ট্রেন। ভৌগোলিক প্রতিকুলতা ও আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনাকে হারিয়ে শনিবার ট্রায়াল রান শেষ করল বন্দে ভারত। কঠোর পরিশ্রম ও প্রযুক্তির কাঁধে চেপে অসাধ্য সাধন ভারতীয় রেলের। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা যুক্ত নয়া ডিজাইনের এই ট্রেন শুক্রবার বেলা ৩টে ২০ মিনিটে দিল্লির শাকুর বস্তি রেল স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। সেদিনই পৌঁছয় জম্ম তাওয়াই স্টেশনে। রাতে কাটরা স্টেশনে থামার পর শনিবার পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে শ্রীনগর পৌঁছেছে এই ট্রেন। তাতেই তৈরি হল নয়া ইতিহাস। কারণ,  বিশ্বের প্রথম কেবল রেল ব্রিজ আনজি খাদ ব্রিজ ও রেল সেতু চন্দ্রভাগা নদীর উপর আর্চ ব্রিজ পেরিয়ে শ্রীনগর স্টেশন ছুঁয়েছে এই বন্দে ভারত।  
নর্দার্ন রেলওয়ের চিফ এরিয়া ম্যানেজার (শ্রীনগর) শাকিব ইউসুফ জানিয়েছেন, জম্মু  ও কাশ্মীরকে দেশের অন্যান্য প্রান্তের সঙ্গে যুক্ত করতে এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। সূত্রের খবর, কাটরা থেকে এই ট্রেনের সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী মাসে দিল্লি বিধানসভা ভোট মিটলেই ওই অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। এই প্রকল্পে খরচ পড়েছে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা। জম্মু ও কাশ্মীরের জটিল ভৌগোলিক অবস্থান ও আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে এই ট্রেনে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে অ্যাডভান্সড হিটিং সিস্টেম। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মতে, উপত্যকার প্রবল ঠান্ডায় জল হিমাঙ্কের অনেক নীচে চলে যায়। এরফলে পাইপ ও বায়ো টয়লেট ট্যাঙ্কে সমস্যা দেখা দিতে পারে। সে সমস্যা মেটাতে সাহায্য করবে অ্যাডভান্সড হিটিং সিস্টেম। এছাড়া, শীতকালে প্রতিকূল আবহাওয়ায় কারণে রেল লাইন দেখতেও চালককে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে। সেজন্য উইন্ডশেডেও আধুনিক প্রযুক্তি যোগ করা হয়েছে। এতে আবহাওয়া যতই খারাপ হোক না কেন, চালকের দেখতে কোনও সমস্যা না হয়। 
এদিক ভিন রাজ্য থেকে আসা বহু পর্যটকও শ্রীনগর স্টেশনে ভিড় করেছিল। ট্রায়াল রান সফল হওয়ায় তাঁরাও খুব খুশি। বাংলার এক পর্যটক সুমিত বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিমানে জম্মু ও কাশ্মীরে আসার খরচ অনেক। বন্দে ভারত চালু হয়ে গেলে যাত্রীদের বিশেষ উপকার হবে।