নিজস্ব প্রতিনিধি, বাতানল (আরামবাগ): চাটাইয়ে বসে দাবি দাওয়া শুনলেন জেলাশাসক সহ গোটা প্রশাসন। বাংলার বাড়ি থেকে বার্ধক্য ভাতা, এমনকী খাল সংস্কারের প্রসঙ্গও উঠেছে। উঠেছে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের স্কুল ইউনিফর্মের মান নিয়ে প্রশ্নও। বৃহস্পতিবার আরামবাগের বাতানলে ‘পাড়ায় বৈঠক’ কর্মসূচিতে যোগ দেন হুগলির জেলাশাসক মুক্তা আর্য। তাঁর সঙ্গে জেলা প্রশাসনের সব দপ্তরের আধিকারিকরাও হাজির হন। সঙ্গে ছিলেন হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা, আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিশির সরকার সহ অন্যান্যরা। জেলাশাসক সেখানে বলেন, আপনাদের সবার সুখের দুঃখের কথা শুনতে এসেছি। আপনারা নিজেদের দাবি দাওয়া জানাতে পারেন। এরপরই সেখানে জড়ো হওয়া বহু বাসিন্দা বাংলার বাড়ি প্রকল্পে আবাসের দাবি জানাতে থাকেন। অনেকেরই অভিযোগ, তালিকায় নাম ছিল, সমীক্ষাও হয়। কিন্তু পরে আর বরাদ্দ আসেনি। জেলাশাসক তাঁদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, রাজ্যে আরও ১৬ লক্ষ আবাস হবে। সেই সময়ে যাতে তাঁদের জন্য চেষ্টা করা হবে। এরজন্য পাড়া বৈঠকেই উপভোক্তাদের নাম ও ফোন নম্বর লেখানোর পরামর্শ দেন। সেখানে আরেক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, এলাকায় দু’ বছর আগে জল প্রকল্প হয়েছে। কিন্তু তিনটি মৌজায় জল যাচ্ছে না। সেই ব্যাপারে অবশ্য পিএইচই-র এক আধিকারিক বলেন, বেঙ্গা, ষষ্ঠীপুর, চক হাজিতে কাজ চলছে। এপ্রিল মাস নাগাদ অতিরিক্ত টিউবওয়েল বসিয়ে সমস্যার সমাধান হবে। এক বাসিন্দা বলেন, তেলুয়ার দক্ষিণ পাড়ায় পাইপ পাতার জন্য রাস্তা কাটা হয়েছে। সেটিও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয় প্রশাসন। এলাকার বাসিন্দারা কয়েকটি রাস্তা নিয়ে সমস্যার কথাও বলেন। এক বাসিন্দা বলেন, মইগ্রাম থেকে আদম বাঁধ পর্যন্ত খাল সংস্কার প্রয়োজন। বন্যার সময় ফসলের ক্ষতি হয়। সেই বিষয়ে সেচদপ্তরের এক কর্তা বলেন, সার্ভের কাজ করে ডিপিআর পাঠানো আছে। অনুমোদন মিললে কাজ শুরু হবে। এক মহিলা অভিযোগ করেন, বাতানলের সুকান্ত পল্লিতে রাইস মিলের জল গিয়ে খালে পড়ছে। তার ফলে মশা, মাছি ও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাড়িতে টেকা যাচ্ছে না। জেলাশাসক সেই ব্যাপারে সমাধানের আশ্বাস দেন। 
এরপর নারায়ণপুর বকুলতলা থেকে আদমবাঁধ পর্যন্ত রাস্তা নিয়ে সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়। সহ সভাধিপতি বলেন, রাস্তা নির্মাণের তদারকি করতে একটা টিম তৈরি হচ্ছে। বেঙ্গা এলাকায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সমস্যা রয়েছে। রান্নাঘর নেই। তাই সেখানে ঘরের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়। এদিন পাড়া বৈঠকে এসেছিলেন ৮২ বছরের রবীন্দ্রনাথ মেদ্দা। তিনি বলেন, আমি এখনও বার্ধক্য ভাতা পাইনি। তাঁর মতো আরও অনেকেই বার্ধক্য ভাতা নিয়ে অভিযোগ করেন। প্রশাসনের কর্তারা বলেন, দুয়ারে সরকারে গিয়ে নতুন করে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করুন। ভালিয়া গ্রামের কাশীনাথ সরকার বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের যে ইউনিফর্ম দেওয়া হয়েছে, তা নিম্নমানের। কোথাও অভিযোগ জানিয়ে লাভ হয়নি। তাই জেলাশাসককে বললাম। তিনি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।