নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার ও সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: প্রচারের স্লগ ওভারে যেন ধুন্ধুমার ব্যাটিং। বুধবার উপ নির্বাচন। তার আগে শেষ রবিবার জমজমাট প্রচার হল মাদারিহাট ও সিতাইয়ে।
রবিবার ঝটিকা সফরে দলীয় প্রার্থী জয়প্রকাশ টোপ্পোর সমর্থনে বিন্নাগুড়ি ও গয়েরকাটা বাজারে পদযাত্রা করলেন বহরমপুরের তৃণমূল সাংসদ ও ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন তারকা ইউসুফ পাঠান। বিকেলে বীরপাড়ায় প্রার্থীর সমর্থনে রোড শো করেছেন তিনি। সাংসদের সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী বুলুচিক বরাইক, দলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশচিক বরাইক ও অন্যরা।
হাতের কাছে প্রাক্তন তারকাকে পেয়ে এদিন যুবক, যুবতীদের ভিড় আছড়ে পড়ে। রবিবার চা বাগানে ছুটির দিন হওয়ায় ইউসুফের পদযাত্রায় শামিল হন গয়েরকাটা, হলদিবাড়ি, বিন্নাগুড়ি ও আশপাশের চা বাগানগুলির শ্রমিকরাও।
কর্মসূচি শেষে সাংসদের মন্তব্য, বিজেপি যে উন্নয়ন করে না, এখানে এসে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। আপনারা ভূক্তভোগী। তাই এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে এবার তৃণমূল প্রার্থীকে জিতিয়ে বিধানসভায় পাঠান।
তবে গয়েরকাটা ও বিন্নাগুড়ির পদযাত্রার ভিড়কে টেক্কা দিয়েছে বীরপাড়ার রোড শো। সেই জনজোয়ার দেখে দিনের শেষে তৃণমূল নেতৃত্বের মুখে চওড়া হাসি।
এদিন হুডখোলা জিপে বীরপাড়ার লংকা রোড, সুভাষপল্লি, কলেজপাড়া ও হাসপাতাল পাড়ায় রোড শো করেন ইউসুফ। তাঁর সঙ্গী ছিলেন দলীয় প্রার্থী জয়প্রকাশ টোপ্পো ও জেলা সভাপতি প্রকাশচিক বরাইক। প্রাক্তন ক্রিকেটারকে দেখতে লংকা রোডের দু’পাশের বাড়ির ছাদেও ভিড় করে জনতা।
তবে, প্রচারের শেষদিন, সোমবার সিতাইয়ে ছক্কা হাঁকাতে আসছেন ইউসুফ। তিনি প্রায় ১৫ কিলোমিটার র্যালি করবেন তৃণমূল প্রার্থী সঙ্গীতা রায়ের সমর্থনে।
তার আগে অবশ্য রবিবার দলের সমস্ত নেতা জড়ো হয়েছিলেন সিতাইয়ে। তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ, দলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মনরা ছিলেন প্রচারের পুরোভাগে। জগদীশচন্দ্র বলেন, সোমবার আটিয়াবাড়ি থেকে রাধানগর কলোনি হয়ে গীতালদহ পর্যন্ত র্যালি করবেন ইউসুফ পাঠান। আমরা জনজোয়ারের আশা করছি। নেতাজি বাজার, পুটিমারি-২, ভেটাগুড়ি, মাতালহাট, গীতালদহের বাজার এলাকাগুলিতে স্ট্রিট কর্নারে শামিল হন নেতারা। তৃণমূলের এই ব্যাপক প্রচারের আড়ালে কার্যত চাপা পড়ে যায় বিজেপির কর্মসূচি। এদিন গেরুয়া শিবিরের জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায় ছাড়া তেমন কোনও নেতার দেখা মেলেনি প্রচারে। প্রার্থী অবশ্য সিতাইয়ে প্রচার করেন। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সিতাইয়ে প্রচারে আসবেন বলে জানালেও তাঁরও দেখা মেলেনি।
ফলে এদিন যেন একতরফা প্রচার করল তৃণমূল।
বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায় এ প্রসঙ্গে বলেছেন, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রচারে আসার কথা ছিল। কিন্তু আসেননি। সোমবার আসবেন কি না, কথা বলে জানাব। তবে সিতাইয়ে প্রচারের ছন্দে এদিন কিছুটা তাল কাটে বামফ্রন্টের পথসভায় হামলার অভিযোগ ওঠায়। বামেদের অভিযোগ তৃণমূলের দিকে। তবে তৃণমূল জেলা সভাপতি অভিজিত্ দে ভৌমিক বলেন, এরকম কিছু শুনিনি। যেভাবে আমাদের প্রার্থীর নামে কুরুচিকর কথা বলা হচ্ছে, প্রতিক্রিয়া হলেও হতে পারে।