হ য ব র ল

রঘু ডাকাত
অরিন্দম ঘোষ

অষ্টাদশ শতাব্দীতে বাংলার কুখ্যাত নাম ছিল রঘু ডাকাত। সে ও তার দলবল এতটাই ভয়ানক ছিল যে, তাদের নাম শুনলে থরহরিকম্প হয়ে উঠত থানার দারোগাবাবু থেকে জমিদার সকলেই। তার ভাই ছিল বিধুভূষণ ঘোষ ওরফে বুধো ডাকাত। কখনও দু’জনে মিলে, কখনও একা-একা ডাকাতি করতে বের হতো তারা। শোনা যায়, রঘু ডাকাত এতটাই দুর্ধর্ষ ছিল যে ডাকাতি করতে যাওয়ার আগেই সে চিঠি দিয়ে খবর পাঠিয়ে দিত। তার বাড়ি কোথায় ছিল, সে সম্বন্ধে সঠিকভাবে কিছুই জানা যায় না। ধরা পড়ার ভয়ে নানা স্থানে দলবল নিয়ে আত্মগোপন করে থাকত। যোগেন্দ্রনাথ গুপ্তের লেখা ‘বাংলার ডাকাত’ বইয়ে তার অসীম সাহসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি লিখেছেন, ‘সে ও তাহার দলের লোকেরা রণ-পা করিয়া আবার নির্বিঘ্নে সেই রাত্রিতেই ফিরিয়া আসিত। সেকালে নদীয়া, হুগলি, কলকাতা ও চব্বিশ পরগনার অনেক স্থানই ছিল বনজঙ্গলে ভরা।... রঘু ডাকাত একজন বিখ্যাত লাঠিয়াল দস্যু ছিল। তাহার হাতে সর্বদা একখানা দীর্ঘ লাঠি থাকিত। তাহার দলের ডাকাতেরা লাঠি, তরোয়াল, ঢাল, বল্লম ও সড়কি নিয়া ডাকাতি করিতে ছিল দক্ষ। শিকারি নামে একদল লোক রঘু ডাকাতের দলে ছিল।’
উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসতের নদীভাগ বাজারের কাছে রঘু ডাকাত প্রতিষ্ঠিত ডাকাত কালী মন্দিরটি জরাজীর্ণ অবস্থায় বর্তমানে পড়ে রয়েছে। প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো এই মন্দিরটিকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে একটা সুপ্রাচীন বটগাছ। স্থানীয়  মানুষজনের মতে, দেবীর অলৌকিক মহিমায় সে তার ঝুড়ি বিস্তার করে মন্দিরটিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছে। মন্দিরটিকে সংস্কারের কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ে না। কিন্তু কেন বল তো? এর কারণ, জনশ্রুতি আছে যে, কেউ যখনই এই গাছের ডালপালা কাটতে এসেছে বা মন্দির সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে, তাকেই ভয়ঙ্কর অসুখের কবলে পড়তে হয়েছে।
মন্দিরের মূল ফটকটিও প্রাকৃতিকভাবে বটগাছের ঝুরি দ্বারা সুরক্ষিত। মূল গর্ভগৃহে গাছের ঝুরির নীচেই একখানা বিশাল বেদী। চুন-সুড়কি গাঁথা মন্দিরের ভিতরে প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালানোর জন্য ছোট-ছোট কুলুঙ্গি প্রাচীনত্বের ছাপ বহন করে। কাকতালীয় হলেও সত্যি, মন্দিরের মূল দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে বাঁদিকে গাছের শিকড়ে দেখা যায় হাতের আঙুলের ছাপের মতো এক আকৃতি। আশ্চর্যের বিষয় কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়েই মন্দিরের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি।
যে সময়ে রঘু ডাকাত এই মন্দির তৈরি করে, সেই সময় সমগ্র এলাকা ছিল ঘন জঙ্গলে ঢাকা। সেই কারণে এই মন্দিরকে অনেকে ‘বুনো কালীবাড়ি’ বলে থাকেন। রঘু ডাকাত তার দলবল নিয়ে ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে কালী পুজো করে নরবলি দিয়ে মন্দিরের পাশের পুকুরের জলে ভাসিয়ে দিয়ে যেত। অষ্টধাতুর কালীমূর্তি গড়ে নিষ্ঠা ভরে পুজো করত রঘু। কোনও একদিন ডাকাতি করতে গিয়ে সামন্ত রাজাদের লেঠেল বাহিনীর হাতে সে ধরা পড়ে যায়। এরপর ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে অষ্টধাতুর মূর্তি তরোয়াল দিয়ে ভেঙে ফেলে সে। এরপর সেই ভাঙা মূর্তিরই পুজো করত রঘু। পরবর্তীকালে সেই মূর্তি চুরি হয়ে গেলে বটবৃক্ষকেই পুজো করা শুরু হয়।
8d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উচ্চতর বৃত্তিমূলক শিক্ষা লাভের জন্য নামী স্বদেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পেতে পারেন। অর্থকর্মে উন্নতি...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৬১ টাকা৮৪.৭০ টাকা
পাউন্ড১০৭.৫২ টাকা১১০.৪৫ টাকা
ইউরো৮৯.৯৯ টাকা৯২.৬৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
1st     November,   2024
দিন পঞ্জিকা