শুক্রবার, 11 জুলাই 2025
Logo
  • শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

শুধু ভারতের জন্য আকাশসীমা খুলল ইরান, ফিরলেন পড়ুয়ারা, কমছে না যুদ্ধের তীব্রতা

যুদ্ধের অষ্টম দিন। কিন্তু বিরাম নেই আঘাত-প্রত্যাঘাতে। একদিকে ইরান-ইজরায়েল দু’দেশেরই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের হানাদারি। অন্যদিকে রাজনীতি ও কূটনীতির টানাপোড়েন। 

শুধু ভারতের জন্য আকাশসীমা খুলল ইরান, ফিরলেন পড়ুয়ারা, কমছে না যুদ্ধের তীব্রতা

তেল আভিভ, ওয়াশিংটন ও লন্ডন: যুদ্ধের অষ্টম দিন। কিন্তু বিরাম নেই আঘাত-প্রত্যাঘাতে। একদিকে ইরান-ইজরায়েল দু’দেশেরই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের হানাদারি। অন্যদিকে রাজনীতি ও কূটনীতির টানাপোড়েন। উত্তেজনা বাড়ছে। যেদিকে চোখ যায়, শুধুই ধ্বংসের ছবি। দক্ষিণ ইজরায়েলের বিরশেবা শহরের টেকনোলজি পার্কের বহুতল এদিন গুঁড়িয়ে গিয়েছে ইরানের মিসাইলে। জখম বহু। এখানেই শেষ নয়, ইরানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে ক্লাস্টার বোমা ব্যবহারের। ইজরায়েলও আবার পাল্টা ৬০টি যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে ইরানের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালানোর দাবি করেছে। সামরিক পরিকাঠামোর পাশাপাশি তারা নিশানা করেছে ইরানের পরমাণু কেন্দ্রকেই। এতকিছুর মধ্যেও মানবিকতা বেঁচে থাকার ইঙ্গিত কি কোথাও নেই? আছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত মাটিতেই। আতঙ্কিত, সন্ত্রস্ত ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা বাড়ি ফিরতে পারছেন। কারণ, এই পরিস্থিতিতেও ‘বন্ধু’ ইরান পাশে দাঁড়িয়েছে ভারতের। ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য আন্তর্জাতিক আকাশসীমা বন্ধ রেখেছে তেহরান। কিন্তু ‘অপারেশন সিন্ধু’ অস্বীকার করেনি তারা। শুধুমাত্র ভারতের ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদে ফেরার জন্য খুলে দিয়েছে তারা এয়ারস্পেস। ফলে ইরানের বিভিন্ন শহরে আটকে থাকা অন্তত এক হাজার পড়ুয়া বাড়ি ফিরছেন। প্রথম বিমানটি ২৯০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে শুক্রবার রাতেই এসে পৌঁছেছে। বাকিরাও নয়াদিল্লি ফিরে যাবেন আগামী দু’দিনেই। 
যুদ্ধ ভয়াবহ হয়ে ওঠার মধ্যেই অবশ্য ইরান-ইজরায়েলের সংঘাত কূটনৈতিক পথে সমাধানের প্রচেষ্টা গতি পেয়েছে শুক্রবার। পূর্ব ঘোষণা মেনেই ইউরোপের তিন দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় যোগ দিতে এদিন জেনিভায় আসেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। কূটনৈতিক স্তরে সমাধানের জানালা যে খুলেছে, সেই ইঙ্গিত মিলেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যেও। ‘অপারেশন ইরানে’ আমেরিকার সরাসরি যোগ দেওয়ার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি থাকলেও আপাতত দু’সপ্তাহ তাতে লাগাম টেনেছে ওয়াশিংটন। বৃহস্পতিবার রাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়ে দেন, ‘আমেরিকার সেনা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেবে কি না, সেবিষয়ে দু’সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেব।’ অর্থাৎ পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানকে ফের আলোচনার টেবলে ফেরাতে ১৪ দিনের একটা সময়সীমা দিল ওয়াশিংটন। আবার আমেরিকার সাহায্য প্রত্যাশী ইজরায়েলকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষাতেই থাকতে হচ্ছে। কারণ একমাত্র আমেরিকার হাতে থাকা ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা ছাড়া ইরানের আন্ডারগ্রাউন্ড ফোরদো পরমাণু কেন্দ্রে আঘাত হানা ইজরায়েলের অসাধ্য। 
ইউরোপের তিন দেশের বিদেশমন্ত্রী ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের সঙ্গে ইরানের বিদেশমন্ত্রীর বৈঠক শুরুর আগেই হোয়াইট হাউসে অন্য একটি বৈঠকের দিকে নজর ছিল সব মহলের। সেখানে মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও ও বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি। পরে ল্যামি জানান, পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে কথা হয়েছে। এদিকে, জেনিভা যাওয়ার আগে ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি দাবি করেন, তিনি আলোচনা করতে যাচ্ছেন ঠিকই। তবে ইজরায়েল হামলা বন্ধ না করলে আমরিকার সঙ্গে আলোচনা সম্ভব নয়। হোয়াইট হাউসকে উদ্ধৃত করে বিবিসি কিন্তু বলেছে, আমেরিকার দেওয়া ইস্যুতেই জেনিভার বৈঠকে ইরানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছে ইউরোপের নেতৃত্ব। ফলে এক্ষেত্রেও ‘মেঘনাদে’র ভূমিকায় সেই আমেরিকাই। 

রাশিফল