মঙ্গলবার, 24 জুন 2025
Logo
  • মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

বাংলাদেশে বাড়ছে ৯ ও ৭ এমএম’এর চাহিদা, জোগান দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের অস্ত্র কারবারিরাই, গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য

হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে সক্রিয় বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্টী ও রাজনৈতিক দলগুলির কাছে আগ্নেয়াস্ত্রের চাহিদা বেড়েই চলেছে।

বাংলাদেশে বাড়ছে ৯ ও ৭ এমএম’এর চাহিদা, জোগান দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের অস্ত্র কারবারিরাই, গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে সক্রিয় বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্টী ও রাজনৈতিক দলগুলির কাছে আগ্নেয়াস্ত্রের চাহিদা বেড়েই চলেছে। নাইন ও সেভেন এম এম পিস্তল মজুত করছে সকলেই। তার জোগান দিচ্ছে এপারের অস্ত্র কারবারিরা। মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও নদীয়া সীমান্ত দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র পাচার শুরু হয়েছে বলে খবর পাচ্ছেন গোয়েন্দারা। কারা এই  অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা চালাচ্ছে, তার তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশে হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে একাধিক জঙ্গি গোষ্ঠীর মাথারা। বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় ধরা পড়া অভিযুক্তরা জেল ভেঙে বেরিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গোটা দেশে। সীমান্তের ওপারে এবিটি, হাট, জেএমবি এমনকী লস্করের মতো জঙ্গি সংগঠন শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে নিয়মিত যাতায়াত করছেন আইএসআইয়ের কর্তারা। পাশাপাশি ওদেশে খুন-ডাকাতি সহ বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা একধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। গোয়েন্দারা জানতে পারছেন, এই সমস্ত জঙ্গি সংগঠন ও অপরাধীদের মদত দিচ্ছে সেখানকার রাজনৈতিক দলগুলি। বিদেশে পালিয়ে যাওয়া গ্যাংস্টাররাও ফিরে এসেছে বাংলাদেশে। একদিকে জঙ্গি শিবিরগুলিতে প্রশিক্ষণ, অন্যদিকে নিজেদের প্রতিপক্ষকে খতম করতে আগ্নেয়াস্ত্রের প্রয়োজন পড়ছে বাংলাদেশে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং গ্যাংস্টারদের। দু’পারের অস্ত্র কেনাবেচায় জড়িতদের মোবাইলের ফোনে আড়ি পেতে গোয়েন্দারা জানতে পারছেন, নাইন বা সেভেন এমের অর্ডার আসছে এপারে। প্রতিদিন পাঁচ থেকে দশটি  আগ্নেয়াস্ত্র পাচার হচ্ছে। 
গোয়েন্দাদের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও নদীয়ার সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় অনেকেই আগ্নেয়াস্ত্রের বেআইনি কারবারে জড়িত। তাদের কাছেই মূলত অস্ত্র সরবরাহের বরাত আসছে। এই অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিহারের বিভিন্ন বেআইনি আর্মস তৈরির কারখানার মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র নিয়ে আসা হচ্ছে এই তিন জেলার সীমান্ত লাগোয়া এলাকায়। কুড়ি হাজারের বিক্রি হওয়া নাইন এম এম বা সেভেন এম এম বাংলাদেশে বিক্রি করা হচ্ছে এক লক্ষ টাকায়। ফিনিশিং ও কার্যকরী ক্ষমতা বেশি হলে দাম আরও বেশি পড়ছে। বিপুল পরিমাণ দাম দিয়ে এই আগ্নেয়াস্ত্র কিনছে জঙ্গি গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দলের লোকজন এবং গ্যাংস্টাররা। গোয়েন্দারা জেনেছেন, নদীয়ার হোগলবেড়িয়া, মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি ও মালদহের বৈষ্ণবনগর দিয়ে এই অস্ত্র পাচার করা হচ্ছে। এপারের লোকজনই আর্মস দিয়ে আসছে বাংলাদেশে।  হাওলার মাধ্যমে পেমেন্ট চলে আসছে। সীমান্তে কারা এই অস্ত্র চক্র চালাচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করে এই কারবার আটকানোর জন্য পদক্ষেপ করছেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা। পাশাপাশি এই আগ্নেয়াস্ত্র কিনে এই রাজ্য তথা দেশে কোনও নাশকতার ছক কষা হচ্ছে কি না, সেটাও তাঁদের নজরে।