বৃহস্পতিবার, 19 জুন 2025
Logo
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

রাজ্যজুড়ে সংগঠনে বড় বদল তৃণমূলের, সভাপতি পদ থেকে সরলেন কেষ্ট-সুদীপ

ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক একবছর আগে সংগঠনে বড়সড় ঝাঁকুনি দিল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার একলপ্তে জেলা সভাপতি ও জেলা চেয়ারম্যান পদে বিপুল সংখ্যক রদবদল করা হল। 

রাজ্যজুড়ে সংগঠনে বড় বদল তৃণমূলের, সভাপতি পদ থেকে সরলেন কেষ্ট-সুদীপ

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক একবছর আগে সংগঠনে বড়সড় ঝাঁকুনি দিল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার একলপ্তে জেলা সভাপতি ও জেলা চেয়ারম্যান পদে বিপুল সংখ্যক রদবদল করা হল। সাংগঠনিকভাবে ৩৫টি জেলা তৃণমূলের। তার মধ্যে ১১জন জেলা সভাপতি এবং ১২ জন জেলা চেয়ারম্যানকে বদল করা হল। এছাড়া বারাসত ও দার্জিলিংয়ের সাংগঠনিক জেলায় পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করা হয়নি। তবে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে বর্ষীয়ান দুই নেতা অনুব্রত মণ্ডল ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের সাংগঠনিক ক্ষমতা ‘হ্রাস’ হল। সেই জায়গায় কাজ করবে কোর কমিটি।
গতবছর ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসের কর্মসূচির মঞ্চ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল যে, দলের সাংগঠনিক পরিসরে রদবদল হতে চলেছে। তারপর থেকেই এই রদবদলের বিষয় নিয়ে তৃণমূলের অভ্যন্তরে বিস্তর চর্চা, জল্পনা, আলোচনা হয়েছে। খোদ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রদবদলের সুপারিশ করা একটি তালিকা তুলে দেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। তৃণমূল সুপ্রিমো সবদিক খোঁজখবর নিয়ে নেতাদের পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করেই সাংগঠনিক রদবদলে সিলমোহর দিলেন। 
শুক্রবার জোড়াফুল শিবিরের তরফে যে তালিকা সামনে এসেছে, তাতে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে সবচেয়ে বড় খবর, অনুব্রত মণ্ডলকে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া। কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া এবং জেলবন্দি জীবন কাটিয়ে ফিরে আসার পরেও অনুব্রত ছিলেন ‘সভাপতি’ পদে। কিন্তু এদিন থেকে সেই দায়িত্ব আর তাঁকে দেওয়া হল না। সেখানে কাজ করবে নয় সদস্যের কোর কমিটি। তাতে আছেন অভিজিৎ সিংহ (রানা), অনুব্রত মণ্ডল, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশ রায়চৌধুরী, চন্দ্রনাথ সিংহ, কাজল শেখ, সুদীপ্ত ঘোষ, শতাব্দী রায় ও অসিত মাল। রানা জানিয়েছেন, নেত্রীর নির্দেশ শিরোধার্য। দ্রুত কোর কমিটির বৈঠক ডেকে সকলকে সঙ্গে নিয়ে সংগঠন শক্তিশালী করাই মূল লক্ষ্য। 
একইভাবে উত্তর কলকাতায় কোনও ব্যক্তিকে জেলা সভাপতি পদে দায়িত্ব দেয়নি তৃণমূল। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন চেয়ারম্যান পদে। আর আছে ৯ সদস্যের কোর কমিটি। অতীন ঘোষ, জীবন সাহা, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, পরেশ পাল, শশী পাঁজা, সুপ্তি পান্ডে, স্বপন সমাদ্দার, স্বর্ণকমল সাহারা দেখবেন উত্তর কলকাতায় তৃণমূলের সংগঠন। সূত্রের খবর, উত্তর কলকাতায় সাংগঠনিক সমস্যা বারবার সামনে এসেছে। তাই কাউকে এককভাবে সভাপতি পদে দায়িত্ব না দিয়ে কোর কমিটি তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে, দমদম-বারাকপুর সাংগঠনিক জেলায় দীর্ঘদিন ধরে কোনও সভাপতি ছিলেন না। সেখানে সাংসদ পার্থ ভৌমিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে আছেন বর্ষীয়ান নেতা নির্মল ঘোষ। পার্থর বক্তব্য, তৃণমূল সুপ্রিমো ও দলের সেনাপতির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। বারাকপুরে তৃণমূলকে শক্তিশালী করা এবং সুস্থ-সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য। এছাড়া তৃণমূলের রদবদলে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মালদা। সেখানে জেলা চেয়ারপার্সন পদে দায়িত্ব পেয়েছেন চৈতালি সরকার। দুষ্কৃতীদের হাতে নিহত তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারের স্ত্রী চৈতালি। তৃণমূলের পুরনো কর্মী ও দক্ষ সংগঠক ছিলেন দুলাল। এবার চৈতালিকে সংগঠনের কাজে সামনে আনল তৃণমূল। হাওড়া শহর, বহরমপুর, বনগাঁ, আরামবাগ, ঘাটাল, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, পুরুলিয়া, তমলুক, উত্তর দিনাজপুরেও সাংগঠনিক পরিসরে বদল ঘটিয়েছে রাজ্যের শাসক দল।