বৃহস্পতিবার, 19 জুন 2025
Logo
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

বাম আমলেও স্ট্যান্ডিং অর্ডার জারি না হওয়ায় বকেয়া ডিএ-র বিপুল বোঝা

 রাজ্য সরকারি কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দেওয়ার স্থায়ী নির্দেশনামা (স্ট্যান্ডিং অর্ডার) থাকলে সরকারের উপর বকেয়া ডিএ’র বিপুল বোঝা চাপত না। 

বাম আমলেও স্ট্যান্ডিং অর্ডার জারি না হওয়ায় বকেয়া ডিএ-র বিপুল বোঝা

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্য সরকারি কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দেওয়ার স্থায়ী নির্দেশনামা (স্ট্যান্ডিং অর্ডার) থাকলে সরকারের উপর বকেয়া ডিএ’র বিপুল বোঝা চাপত না। দেশের বহু রাজ্যে অনেকবছর ধরেই ডিএ’র জন্য স্থায়ী নির্দেশনামা কার্যকর রয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় সরকার বর্ধিত ডিএ ঘোষণা করার সঙ্গে ওইসব রাজ্যে সরকারি কর্মী একই হারে ডিএ পেয়ে যান। পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট টানা ৩৪ বছর ক্ষমতাসীন ছিল। তাদের আমলে কর্মী সংগঠনগুলির তরফে ডিএ’র স্ট্যান্ডিং অর্ডার দেওয়ার দাবি উঠেছিল একাধিকবার। কিন্তু বাম সরকার তা মানেনি। ফলে বকেয়া ডিএ জমে থাকার প্রবণতা চলছে সেই যুগ থেকেই। ২০১১ সালে পরিবর্তনের সময় রাজ্য সরকারি কর্মীরা কেন্দ্রীয় হারের তুলনায় ১৬ শতাংশ ডিএ কম পাচ্ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যে বকেয়া ডিএ এখন রাজ্য সরকারকে মেটাতে হবে তার মধ্যে বাম জমানারও অংশ আছে। 
পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী যে ডিএ সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য ছিল তার বকেয়ার ২৫ শতাংশ আপাতত মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করা হয়। আসলে কেন্দ্রীয় কর্মীদের মতো হলে ওই সুপারিশ কার্যকর হওয়ার কথা ছিল ২০০৬-এর জানুয়ারিতে। কিন্তু রাজ্য ২০০৯-এর এপ্রিল থেকে পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বর্ধিত হারে বেতন দেওয়া শুরু করে। তার আগে প্রায় একবছরের অর্থাৎ ২০০৮-এর এপ্রিল থেকে বর্ধিত বেতনের অংশ পরবর্তীকালে তিন কিস্তিতে দেওয়া হয়। 
ওইসময়ে রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠনের সক্রিয় নেতা মনোজ চক্রবর্তী জানান, ডিএ’র স্থায়ী নির্দেশনামা জারি করার দাবি সিপিএমের মুখ্যমন্ত্রীরা মানেনি।  বামেদের শেষলগ্নে পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করার পরই এই ব্যবস্থা চালু করা নিয়ে প্রশাসনের শীর্ষ মহলে ভাবনাচিন্তা হয়। কিন্তু বাম সরকার যদি ফের ক্ষমতায় ফেরে! সেই সম্ভাব্য আর্থিক চাপবৃদ্ধির ঝুঁকি বাম সরকার নেয়নি। জারি হয়নি স্থায়ী নির্দেশনামা। তৃণমূল সরকারও কাজটি করেনি। 
এদিকে বকেয়া ডিএ’র টাকা কর্মীদের পিএফ তহবিলে জমা দেওয়া হবে কি না তা নিয়েও আলোচনা করছেন কর্মীরা। ১৯৯৬ নাগাদ চতুর্থ বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করার সময় বর্ধিত ডিএ’র বকেয়ার একাংশ পিএফে জমা পড়েছিল। সেই টাকা তোলার উপর একটা নির্দিষ্ট সময় জুড়ে ছিল বিধিনিষেধ। এটা করলে বকেয়া ডিএ’র টাকা প্রদানের বিষয়টি সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এদিকে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েক জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ হাতে পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবদিক বিবেচনা করেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। এই রাজ্য সরকার কর্মচারী বিরোধী নয়।