সম্পাদকীয়

করের টাকায় কর্পোরেট সেবা

গত জুলাই মাসের শেষার্ধে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সংসদে অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪ রিপোর্ট পেশ করেন। তাতে কনজিউমার ফুড প্রাইস ইনডেক্স (সিএফপিআইI) ভিত্তিক খাদ্য মূল্যস্ফীতির তথ্য ছিল। দেখা যাচ্ছে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে তা ছিল ৩.৮ শতাংশ। সেটাই ২০২৩-এ ৬.৬ এবং ২০২৪-এ আরও বেড়ে ৭.৫ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। সব মিলিয়ে খাবার খরচ গত দু’বছরে ৯৭ শতাংশ বেড়েছে বা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। আর সেই বাজারে গরিব স্কুলপড়ুয়াদের প্রাপ্য মিড ডে মিলের বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে কত? প্রাথমিকের জন্য ৭৪ পয়সা এবং উচ্চ প্রাথমিকের জন্য ১.১২ টাকা। এরপরও কি বুঝতে বাকি থাকে, কেন সবচেয়ে বেশি অপুষ্টির শিকার শিশুর সংখ্যায় ভারত সবসময় এগিয়ে? কেন স্কুলছুট বন্ধ হয় না এবং আটকানো যায় না শিশুদের রুগ্ন শ্রমিক হয়ে ওঠার দুর্ভাগ্য?
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) তথ্য অনুযায়ী, ভারতে গত একদশকে কৃষি ক্ষেত্রে কর্মরত অন্তত ১ লক্ষ ১২ হাজার মানুষ আত্মঘাতী হয়েছেন। প্রকাশিত সর্বশেষ (গত ৪ ডিসেম্বর) তথ্য বলছে, শুধুমাত্র ২০২২ সালেই দেশে আত্মঘাতী কৃষক ও খেতমজুরের সংখ্যা ১১ হাজারের বেশি। সংখ্যাটি ২০২১-এর চেয়ে ৩.৭ শতাংশ এবং ২০২০ সালের চেয়ে ৫.৭ শতাংশ বেশি! ২০২২ সালের পরিসংখ্যানে এই ইঙ্গিতই ছিল যে, প্রতি ঘণ্টায় অন্তত একজন ‘অন্নদাতা’র আত্মহত্যার মতো মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী ভারত! সাম্প্রতিক বছরগুলির মধ্যে, বস্তুত ২০১৯ থেকে কৃষক বা কৃষি শ্রমিকের আত্মহত্যার প্রবণতা ঊর্ধ্বমুখী। কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনাগুলি বিশ্লেষণ করে সমাজতাত্ত্বিকরা বার বার সতর্ক করেছেন যে, এর কারণ অসহনীয় ঋণের বোঝা। এখানেই প্রশ্ন, তাহলে রাষ্ট্রের ভূমিকা কী—শুধু কৃষক পরিবারের সর্বনাশ দেখে যাওয়া কিংবা তাতে অধিক গতিসঞ্চার? সংসদে অর্থমন্ত্রীর ভাষণে যা উঠে আসে তার মধ্যে ‘অমৃততুল্য’ আরও একটি ‘সন্দেশ’ হল: গত ছ’বছরে প্রায় ৪১ হাজার ব্যবসায়িক সংস্থা নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার জন্য আবেদন করেছে। সংখ্যাটি ২,২৩৬ শেষ ছ’মাসে। ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাঙ্করাপসি কোডের (আইবিসি) মাধ্যমে জাতীয় কোম্পানি ল’ ট্রাইব্যুনালে (এনসিএলটি) ৪০,৯৪৩টি আবেদন জমা পড়েছে। ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তি হয়েছে ১,০৬৮টি আবেদনের। উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক কোটি টাকা। এর বেশি তথ্য অর্থমন্ত্রীর কাছে নেই। কোভিডকালে সবচেয়ে বেশি স্টার্ট আপ এবং ছোট ও মাঝারি (এমএসএমই) সংস্থায় লালবাতি জ্বলে গিয়েছিল। মোদি সরকারের দুয়ারে হত্যে দিয়ে, দিনের পর দিন কান্নাকাটি করেও সুরাহা মেলেনি। ফলে স্থায়ী বেকারত্ব মেনে নিয়েছিলেন হাজার হাজার সংস্থার মালিক এবং লক্ষ লক্ষ শ্রমিক-কর্মী।
অথচ মোদি সরকারের দরাজ দিল! এই জমানার প্রথম পাঁচবছরে প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্কঋণ মকুব করা হয়েছিল। পরবর্তী পাঁচবছরেও (২০১৯-২৪) উল্লেখযোগ্য  ফারাক নজরে পড়ল কি? না, এই পর্বেও মকুব করা ব্যাঙ্কঋণের পরিমাণ প্রায় ১০ লক্ষ কোটি টাকা। আর এখানেই প্রশ্ন, লাভের গুড় খেয়ে চলেছে কারা? একটাই উত্তর—‘না খায়ুঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’র মিত্রগণ ছাড়া আবার কে? কেননা, এই খয়রাতির মধ্যে কৃষি এবং সমবায় ঋণ কিছু আছে বটে, তবে তার চেহারা সাগর থেকে এক ঘটি জল সরানোর মতোই নগণ্য! এরপরও বুঝতে বাকি থাকে কি, কেন ভারতে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার ধনী থেকে ধনাঢ্য হয়ে চলেছে? তারা জ্বল জ্বল করে বিশ্বসেরা মিলিয়নেয়ারদের তালিকায়। অন্যদিকে, ভারতের ১৪০ কোটি জনতার নীচের দিকের ৫০ শতাংশের আয় কমেই চলেছে। গরিব নেমে যাচ্ছে দারিদ্র্যসীমার নীচে এবং এই গেরুয়া ভোজবাজির মধ্যিখান থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ‘মধ্যবিত্ত’ নামক জরুরি একটি শ্রেণি। জনগণের করের টাকায় কর্পোরেট সেবার এর চেয়ে নিকৃষ্ট নিদর্শন ভূভারত আর কবে দেখেছে? এর সঙ্গে বন্ড কেলেঙ্কারির আত্মীয়তার সম্পর্ক যদি আমরা খুঁজতে থাকি কোন যুক্তিতে তা খারিজ করবেন মোদি-শাহ-নাড্ডা-নির্মলা? 
10d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কাজকর্মে সুনাম বাড়বে। জ্ঞাতির চক্রান্তে সম্পত্তি সংক্রান্ত ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। উচ্চশিক্ষায় শুভ ফল লাভের...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৮৫ টাকা৮৫.৫৯ টাকা
পাউন্ড১০৬.১০ টাকা১০৯.৮৬ টাকা
ইউরো৮৭.৯১ টাকা৯১.৩০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
8th     December,   2024
দিন পঞ্জিকা