সম্পাদকীয়

মোদির নয়া গ্যারান্টি

পিএফের আওতাভুক্ত কয়েক লক্ষ প্রবীণ অবসরপ্রাপ্ত কর্মী বর্ধিত হারে পেনশন গ্রহণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। এজন্য ইপিএফও’র দাবিমতো মোটা অঙ্কের টাকাও যথাস্থানে জমা করেছেন তাঁরা। অথচ ঘোষিত পেনশন প্রদানের প্রক্রিয়া বন্ধ হয়েছে কোনোরকম ঘোষণা ছাড়াই। মোদি সরকারের সিদ্ধান্তে এই সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া বন্ধও করে দিয়েছে ইপিএফও। এমনকী তাদের এই মারাত্মক ত্রুটির কারণে যাঁরা দেরিতে পেনশন পাবেন, প্রাপ্য সুদটুকুও তাঁদের দেওয়া হবে না। এটাই কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত। সম্প্রতি তথ্যের অধিকার (আরটিআই) আইনে উত্থাপিত এক প্রশ্নের জবাবে একথাই সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইপিএফও। কিন্তু সরকার ভেবে দেখছে না, নাগরিকের কাছে কোনও খাতে একটি টাকাও তার পাওনা থাকলে তার জন্য কী পদক্ষেপ করা হতো। প্রথমত, নোটিসের পর নোটিস পাঠিয়ে ব্যতিব্যস্ত, এমনকী আতঙ্কগ্রস্ত করে তোলা হতো। অতঃপর চড়া হারে সুদসহ সেই প্রাপ্য মেটানোর জন্যই জারি হতো রাজকীয় ফরমান। সরকারের এই হুকুম অমান্যে আর্থিক জরিমানাসহ অন্য শাস্তিরও মুখে পড়তে হতে পারে হতভাগ্য নাগরিককে। কিন্তু সরকারের ক্ষেত্রে, মানে এই কড়া আইন যার তৈরি ও যে তা প্রয়োগ করে অহরহ, তার বেলা সাত খুন মাফ!  
বর্ধিত হারে পেনশনের জন্য কেন্দ্রের কাছে ইতিমধ্যেই সাড়ে ১৭ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার জনকেও ওই পেনশন দিয়ে উঠতে পারেনি করিৎকর্মা জনদরদি সরকার। শীর্ষ আদালতের নির্দেশমতোই, আগ্রহী ব্যক্তিদের তরফে ইপিএফও’তে থোক টাকা জমা করার কথা ছিল। বর্ধিত হারে পেনশন পেতে দেরি হলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে সেই টাকার সুদ দিতে হবে সরকারকে। কয়েক লক্ষ আবেদনকারী ওই শর্তেই বিপুল অর্থ জমা করেছেন। আর ঠিক তারপরই মুখে স্পিকটি নট ইপিএফও! এরই মধ্যে আরটিআই করে এই সংক্রান্ত জবাব দাবি করেন হিমাচল প্রদেশের এক ব্যক্তি। অজয় কাপুর নামে ওই নাগরিকের বক্তব্য ছিল, ‘২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে পেনশন বকেয়া। এদিকে ২০২২ সালের নভেম্বরে সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী নির্দিষ্ট অঙ্কের পেনশন পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইপিএফও তা এখনও দেয়নি।’ তাই আরটিআই মারফত প্রশ্নকর্তার জিজ্ঞাসা ছিল, ‘এক্ষেত্রে ইপিএফও কি বকেয়া সুদ দেবে?’ জবাবে শ্রমমন্ত্রকের অধীন সংস্থাটি স্পষ্ট করেছে, ‘ইপিএস সংশ্লিষ্ট কোনও বকেয়ার উপর ইপিএফওর তরফে সুদ দেওয়ার নিয়ম নেই!’ অজয় কাপুরের আরও প্রশ্ন ছিল, ‘এখন যে পেনশন পাচ্ছি, সেটি আকাঙ্ক্ষিত বর্ধিত হারে রূপান্তরিত হবে কবে?’ জবাবে সংশ্লিষ্ট সকল শ্রমিক-কর্মচারীকে যার পর নাই হতাশই করেছে ইপিএফও। তাদের বক্তব্য, ইপিএফও’র কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে তাঁকে বর্ধিত হারে পেনশন দেওয়ার পরিস্থিতি নেই। প্রশাসনিক কাজকর্ম যেটুকু এগিয়েছে, তাতে এটুকুই জানানো সম্ভব। 
আরটিআইয়ের এই জবাবে স্বভাবতই গোটা প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাই বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ল বইকি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেও বর্ধিত হারে পেনশন নিয়ে দপ্তরের অন্দরে যে অস্বচ্ছতার পাহাড় জমেছে, সেটাই প্রকারান্তরে সরকারিভাবেই জানানো হল না কি? স্বভাবতই ইপিএস-৯৫-এর আওতাভুক্ত পেনশনভোগীদের সংগঠন ন্যাশনাল অ্যাজিটেশন কমিটি এতে তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেছে। সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি তপন দত্তের বক্তব্য, বর্ধিত পেনশনের ব্যাপারে সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে তাঁদের সংশয় গোড়া থেকেই ছিল। এখন সুদ নিয়ে ওঠা প্রাসঙ্গিক প্রশ্নেও তাঁরা সহমত পোষণ করেন। বর্ধিত হারে পেনশনের জন্য কেন্দ্রের দাবিমতোই মোটা টাকা জমা করেছেন আগ্রহী প্রবীণরা। তাহলে যতদিন না সেই পেনশন মেলে ততদিনের জন্য কিংবা যাঁদের আবেদন ফালতু অজুহাতে খারিজ করা হচ্ছে তাঁরা কেন জমা ও আটক টাকার উপর ন্যায্য সুদ পাবেন না? শেষ জীবনের যাবতীয় সঞ্চয়, যা ফিক্সড ডিপোজিট বা অন্য কোনোভাবে সুরক্ষিত ছিল সেসব ভেঙেই তো সরকারের চাহিদা মিটিয়েছেন তাঁরা। দিল্লিতে এক অদ্ভুত সরকার গদিয়ান, তারা সামাজিক সুরক্ষার ধার ধারে না। যুব শ্রেণিকে পাইকারি হারে বেকার রেখেছে। শ্রমিককে এবং কৃষককে বঞ্চিত করেছে যথাক্রমে ন্যূনতম মজুরি এবং এমএসপি থেকে। সরকারি মদতে ধনী-গরিব এবং পুরুষ-নারীর বৈষম্য ক্রমবর্ধমান। প্রবীণ নাগরিকদের শেষদিনগুলি বা মৃত্যুও সুখের হবে না, এবার মিলল তারও ‘মোদি কি গ্যারান্টি’। তারপরেও এই সরকার কোন মুখে ‘আচ্ছে দিন’, ‘অমৃতকাল’ আনার বুলি আওড়ায়!
11d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কর্মস্থলে আকস্মিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। দুপুরের পর থেকে জটিলতা মুক্তি ও কর্মে উন্নতি। ভ্রমণ...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৮৫ টাকা৮৫.৫৯ টাকা
পাউন্ড১০৬.১০ টাকা১০৯.৮৬ টাকা
ইউরো৮৭.৯১ টাকা৯১.৩০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা