বিদ্যায় অস্থির মানসিকতা থাকবে। কর্মপ্রার্থীদের কোনও শুভ যোগাযোগ হতে পারে। রাগ বা জেদের বশে কারও ... বিশদ
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-বর্তমান কম্পিউটার যুগে এটি একটি যুগোপযুগী কোর্স। দেশ বিদেশের বিভিন্ন নামী সংস্থা এই কোর্স পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের নিয়োগ করে থাকে। এই কোর্স করার ভালো প্রতিষ্ঠানগুলি হল-ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিভিন্ন শাখা যেমন আইআইটি, খড়্গপুর, বম্বে, দিল্লি, হায়দরাবাদ, গুয়াহাটি, ভুবনেশ্বর প্রভৃতি, যাদবপুর ইউনিভার্সিটি, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, কল্যাণী গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সহ বিভিন্ন বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।
ভর্তির যোগ্যতা-আইআইটিতে এই বিষয়ে বি-টেক কোর্স করার ক্ষেত্রে প্রার্থীকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি এবং ম্যাথামেটিক্স সহ ১০+২ বা উচ্চমাধ্যমিক বা সমতুল কোর্স পাশ করে থাকতে হয়। উচ্চমাধ্যমিক বা সমতুল কোর্সে অন্তত ৬০ শতাংশ নম্বর পাওয়া চাই। এছাড়া প্রার্থীর অবশ্যই জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেন এবং জয়েন্ট এন্ট্রান্স অ্যাডভান্স-এর স্কোরকার্ড থাকতে হবে। গ্র্যাজুয়েট অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ফর ইঞ্জিনিয়ারিং (গেট) পরীক্ষার মাধ্যমেও অনেক সংস্থা ভর্তি নিয়ে থাকে। কোর্সটি সাধারণ চার বছরের হয়ে থাকে।
ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এটিও একটি জনপ্রিয় কোর্স। টেলিকমিউনিকেশন, মোবাইল পরিষেবা যেভাবে বেড়ে চলেছে সেক্ষেত্রে এই কোর্স করে চাকরি পাওয়ার সুযোগও উত্তরোত্তর বাড়ছে।
এই কোর্স করা যায় বিভিন্ন আইআইটিতে। এছাড়া দিল্লি টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি (ডিটিইউ), পিইসি ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, চণ্ডীগড়, যাদবপুর ইউনিভার্সিটি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি, সহ বিভিন্ন বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকেও।
ভর্তির যোগ্যতা-পূর্বের কোর্সের মতোই।
এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এই কোর্সে মূলত বিমান, হেলিকপ্টার, মহাকাশযানের ডিজাইন তৈরি এবং বিমান ও মহাকাশযান, ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির যে বিজ্ঞান সেই সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীরা জ্ঞান অর্জন করে থাকে। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দুটি শাখা এই কোর্সে মিলেমিশে আছে। সেই শাখা দুটি হল এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অ্যাস্ট্রোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। এই কোর্সটিতে কোনও কলেজ ব্যাচেলর অব টেকনোলজি (বিটেক) এবং কোনও কলেজ ব্যাচেলর অব ইঞ্জিনিয়ারিং (বিই) ডিগ্রি দিয়ে থাকে। এই কোর্সটি এরোস্পেস অথবা এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নামে করানো হয়ে থাকে। মূলত বিভিন্ন আইআইটি, মাদ্রাজ, বম্বে, কানপুর, খড়্গপুর এবং পিইসি ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং ইনস্টিটিউট অব এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, দেরাদুন এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে কোর্সটি করা যেতে পারে।
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অন্যতম শাখা ও তারই একটি স্পেশালাইজেশন কোর্স অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং। মোটরগাড়ি তৈরির পর থেকে আজ পর্যন্ত এই কোর্স করা কর্মীর চাহিদা চাকরির বাজারে যেমন বেড়েছে সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে এর প্রতি ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহও বেড়েছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা-অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক বা বিই কোর্স করার ক্ষেত্রে প্রার্থীকে অবশ্যই বিজ্ঞান শাখায় উচ্চমাধ্যমিক কিংবা সমতুল পরীক্ষায় পাশ করে থাকতে হয়। এর পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাশ করতে হয়। কোর্সটি সাধারণত চার বছরের হয়ে থাকে।
বায়োটেকনোলজি ইঞ্জিনিয়ারিং-অ্যাপ্লায়েড বায়োলজি এবং কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং মিলেমিশে রয়েছে বায়োটেকনোলজি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। এছাড়া এই কোর্সের বিষয়ের মধ্যে রয়েছে মেডিসিন, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, সেল এবং টিস্যু কালচার টেকনোলজি। আসলে বায়োটেকনোলজিতে বিভিন্ন প্রযুক্তি মিশে রয়েছে। এর মধ্যে শুধু বায়োলজি নয়, রয়েছে ম্যাথামেটিক্স, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং।
শিক্ষাগত যোগ্যতা পূর্বের কোর্সগুলির মতো একই।
ইনফরমেশন টেকনোলজি ইঞ্জিনিয়ারিং-ইনফরমেশন টেকনোলজির যুগে এই কোর্সের গুরুত্ব অপরিসীম। এই কোর্সে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তি বা টেকনোলজির মেলবন্ধন ঘটেছে। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ওয়েব বেসড অ্যাপ্লিকেশনস, কন্ট্রোল সিস্টেমস, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মোবাইল কম্পিউটিং প্রভৃতি বিষয় এই কোর্সের মধ্যে রয়েছে। চার বছরের এই বিটেক কোর্সটি আটটি সেমেস্টারে পড়ানো হয়ে থাকে। এই বিষয়ে কিছু কিছু সংস্থা বিই কোর্স করিয়ে থাকে। যেসব কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই কোর্স করা যায় সেগুলি হল- যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি প্রভৃতি।
এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং-আমাদের এই কৃষিপ্রধান দেশে এই কোর্সটির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। এই কোর্স করার ক্ষেত্রে ম্যাথামেটিক্সে দক্ষ হতে হবে। এর পাশাপাশি বায়োলজি, কেমিস্ট্রি এবং ফিজিক্সে এবং ইংরেজিতে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। অর্থাৎ উচ্চমাধ্যমিক বা সমতুলস্তর পর্যন্ত প্রার্থীকে ওই বিষয়গুলিতে ভালো নম্বর পেয়ে পাশ করে থাকতে হবে। কিছু কলেজ এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বি টেক কোর্স করালেও কয়েকটি বি টেক ইন এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং নামে এই কোর্স করিয়ে থাকে।
যেসব কলেজে এই কোর্স করানো হয়ে থাকে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আইআইটি খড়্গপুর, ডঃ জাকির হুসেন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, ইন্দিরা গান্ধী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি।
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং-জাহাজ চালানোর যাবতীয় যন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ এবং তা মেরামত করার দায়িত্ব থাকে একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের উপর। একটি জাহাজে স্টিম টারবাইন, গ্যাস টারবাইন এবং ডিজেল ইঞ্জিন যাই থাক না কেন সেটির নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে কোনও সমস্যা হলে তা দূর করার জন্য দরকার পড়ে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের। চাকরির বাজারে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারেরও চাহিদা রয়েছে। তবে শুধু জাহাজেই নয়, বিদ্যুৎ প্রকল্পেও মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের দরকার পড়ে। আমাদের দেশে খুব কম সংস্থাই মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিই বা বি-টেক ডিগ্রি কোর্স করিয়ে থাকে। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য-ইন্ডিয়ান মেরিটাইন ইউনিভার্সিটি, চেন্নাই ও কলকাতা, ভিইএলএস ইউনিভার্সিটি, চেন্নাই, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এমইআরআই), মুম্বই প্রভৃতি।
ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-বৈদ্যুতিক যন্ত্র তা হেয়ার ড্রায়ার হোক বা জেনারেটর থেকে শুরু করে আধুনিক ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং যাবতীয় বিষয় এর অন্তর্গত। মাইক্রোওয়েব, ট্রানসিস্টর, কম্পিউটার, ফাইবার অপটিকস, স্যাটেলাইট ট্রান্সমিশন সিস্টেম, গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম সবেতেই ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং জড়িয়ে রয়েছে। এই বিষয়েও বিই এবং বি-টেক কোর্স করা যায়। এক্ষেত্রেও বিজ্ঞান শাখায় ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি এবং অবশ্যই ম্যাথামেটিক্স নিয়ে অন্তত ৬০ শতাংশ নম্বর সহ উচ্চমাধ্যমিক বা সমতুল পরীক্ষা পাশ করে থাকতে হয়। এছাড়া জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষাতেও পাশ করে থাকতে হয়। কোনও কোনও সংস্থা নিজস্ব এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি নিয়ে থাকে।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের যেসব ঐতিহ্যবাহী শাখা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। শিল্পায়নের মাধ্যমে মানব সভ্যতার উন্নয়নে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। যেকোনও শিল্প ক্ষেত্রে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজন লাগে। আমাদের দেশের বহু ইনস্টিটিউটে এই বিষয়ে কোর্স করানো হয়ে থাকে। কোর্স চার বছরের।
মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং- বিভিন্নরকম ধাতু ও তার ব্যবহার নিয়েই এই কোর্সটি গড়ে উঠেছে। চাকরির বাজারে কিন্তু এই কোর্সের গুরুত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স নিয়েও বিই এবং বি টেক করার সুযোগ রয়েছে। যে সব কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই কোর্স করা যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইআইইএসটি), শিবপুর, অন্ধ্র ইউনিভার্সিটি কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং, বিআইটি, আইআইটি, বম্বে, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, দুর্গাপুর, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিএইচইউ), বারাণসী প্রভৃতি।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-বিভিন্ন ধরনের কাপড় ও কাপড়ের সুতো তৈরির ক্ষেত্রে যে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ার প্রয়োগ করা হয় সেটিই এই কোর্সের অন্তর্ভুক্ত। বস্ত্রবয়নের সময় ডিজাইন এবং ফাইবার বা সুতোকে নিয়ন্ত্রণ এবং প্রক্রিয়া করা হয়ে থাকে।
উল্লিখিত এই কোর্সগুলি ছাড়াও সিভিল, কেমিক্যাল, সেরামিক, এনভায়রনমেন্ট, ওশন সহ বিভিন্ন রকম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কোর্স রয়েছে। এগুলির ডিগ্রিধারীদেরও চাকরির বাজারে চাহিদা রয়েছে।