বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
আচমকা অসুস্থ সুমন চট্টোপাধ্যায়ের (কৌশিক সেন) চিকিৎসার অগ্রগতির স্বার্থে তাঁর বর্তমান স্ত্রী মেঘনা মুস্তাফি (জয়া আহসান) ও প্রাক্তন স্ত্রী শুভ্রার (চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়) সাময়িক কাছাকাছি আসার গল্প বেঁধেছেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। এত নির্মমভাবে মেদহীন চিত্রনাট্য সাম্প্রতিক কোনও বাংলা ছবিতে দেখা যায়নি। কাহিনি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনার সম্পূর্ণ দায়িত্বটাই কৌশিক নিজের হাতে রেখেছেন এবং সম্পূর্ণ ছবিতে মূল লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিহীন একটিও অপ্রাসঙ্গিক শট চোখে পড়েনি। ছবিতে কমিক রিলিফের সুবন্দোবস্ত রয়েছে। সেখানে কতটা পাশ করলেন, তা অবশ্য প্রশ্নসাপেক্ষ। তবে শুভ্রার চপল সহকর্মী বিহুর (দামিনী বেণি বসু) ক্যামিও চরিত্রটিও এক ধরনের শিল্পসম্মত বৈপরীত্য সরবরাহ করে।
শুভ্রা শুধুই যে মেঘনাকে স্বামীর চিকিৎসায় সাহায্য করেছেন, তা নয়। মেঘনার একটি মিথ্যাচার এবং সুমনের অতিরিক্ত উদারতার আড়ালে একটি অক্ষমতা লুকিয়ে রাখার সুচতুর প্রয়াসকে মেঘনার সামনেই উন্মোচিত করেছে। শুভ্রার সহায়তার এই দ্বিতীয় স্তরটি মেঘনাকে জীবন-সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করানোর জন্য, নাকি নিছকই প্রতিশোধস্পৃহা জনিত, সেই কৈফিয়ত পরিচালক দেননি। চেতনার গভীরে পৌঁছে জোরালো অভিব্যক্তির প্রতি বিতৃষ্ণা জনিত অনীহাকে সচেতন আন্ডার-অ্যাক্টিংয়ের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন চূর্ণী। সাহায্যপ্রার্থীর বিনম্রতা থেকে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে যাওয়া নারীর উগ্রতা, প্রতিটি দৃশ্যে বিশ্বাসযোগ্য জয়া। গড়পড়তা পুরুষের দুর্বলতা থেকে সংকীর্ণতা সবই সঠিক মাত্রায় উপস্থিত করেছেন কৌশিক সেন। শুধুমাত্র প্রতিক্রিয়া নির্ভর একটি পার্শ্ব চরিত্রে অনবদ্য অম্বরীশ ভট্টাচার্য। গোপী ভগতের সিনেমাটোগ্রাফি ও শুভজিৎ সিংহের সম্পাদনার যুগলবন্দি বেশ উপভোগ্য। অনুপম রায়ের সঙ্গীত ও অমিত চট্টোপাধ্যায়ের নেপথ্য মানানসই।
পরিচালক নিজের অজান্তেই দর্শককে একটি মহার্ঘ উপহার দিয়েছেন। ছোট ছোট সংলাপে নারী হৃদয়ের গোপন পুস্তিকার এক একটি পাতা উন্মোচন, বিভিন্ন টাইম-জোনের দৃশ্যগুলিকে গুলিয়ে দিয়ে এক মেধাবী পাজল গেম নির্মাণ এবং অনবদ্য কিছু জাম্প কাট। এ ছবির ভালো লাগার রেশে ভরিয়ে রাখবে দর্শককে।