বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যার বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
এক দশক পর ক্যামেরার নেপথ্যে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে কেমন অনুভূতি হচ্ছিল?
দারুণ অনুভূতি। ছবি পরিচালনার মধ্যে বিপুল উত্তেজনা রয়েছে। প্রথমবার যেমন অনুভূতি হয়েছিল, ১০ বছর পর ঠিক একইরকম উত্তেজনা অনুভব করেছি ।
মন্ত্রিত্বের গুরুদায়িত্ব সামলেও মাঝে মধ্যে অভিনয় করছেন। এবার আস্ত একটা ছবি পরিচালনা করে ফেললেন। দু’দিক ব্যালান্স করেন কীভাবে?
খুব যে ব্যালান্স করতে পারছি, তা নয়। থিয়েটার তো পুরোপুরি বন্ধ রেখেছি। কবে আবার থিয়েটার করব জানি না। সময় বের করে কিছু ফিল্মে অভিনয় করেছি। তবে, পরিচালনার ভার যখন কাঁধে নিলাম, তখন সিনেমাতেই পুরোপুরি মনোনিবেশ করেছি। সরকারি বা রাজনৈতিক কাজের ফাঁকে যতটুকু সময় আমার ছিল, পুরোটাই সিনেমাকে দিয়েছি এবং ভবিষ্যতেও তাই দিতে চাই।
বুদ্ধদেব গুহর ‘বাবা হওয়া’ ও ‘স্বামী হওয়া’ গল্প দুটোকে বাছলেন কেন?
এই গল্পগুলো আমার খুব কম বয়সে পড়া। গল্প দুটো কোনওভাবে আমার ভিতরে থেকে গিয়েছিল। আর সেগুলি যেন নতুন করে কথা বলে উঠল। ছবি করার জন্য খুব সহজ-সরল গল্প খুঁজছিলাম। ‘ডিকশনারি’ ছবিতে সহজের মধ্যে দিয়ে কিছু গভীর কথা বলার চেষ্টা করেছি এবং এই গল্প দুটোই ছিল উপযুক্ত।
‘গভীর কথা বলা’র কথা বলছিলেন। ছবিতে দুটো আলাদা গল্পকে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ‘ডিকশনারি’ নামটার মধ্যেও রয়েছে ব্যঞ্জনা, অন্তত ট্রেলার দেখে যা বোঝা যাচ্ছে। আপনি এক সময় নিজে সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন। সেখান থেকেই কি এই অন্য ধরনের উপলব্ধিকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলার প্রেরণা পেলেন?
সাহিত্য এ ক্ষেত্রে মূল অবলম্বন ঠিকই। কিন্তু সাহিত্যের ভাষা আর সিনেমার ভাষা তো এক নয়। সাহিত্য যখন সিনেমা হয়, তখন ট্রান্সক্রিয়েশন হয়। আমার মনে হয়েছিল, এই গল্প দু’টিতে সাহিত্য রস তো আছেই, সেই সঙ্গে এগুলির মধ্যে সিনেমার এলিমেন্টও লুকিয়ে রয়েছে। সেটাই ধরতে চাওয়া হয়েছে ‘ডিকশনারি’তে। এই ছবির চরিত্রগুলি অভিধানের বাইরে বেরিয়ে এসে জীবনের মধ্যে সম্পর্কের অর্থ খোঁজে।
ওঁর দুটো গল্প মিলিয়ে একটা ছবি হচ্ছে শুনে বুদ্ধদেববাবু কিছু বলেছিলেন?
না, উনি কিছু বলেননি। আমি ছবি করার স্বত্ব চেয়েছিলাম, উনি দিয়ে দিয়েছিলেন।
কাস্টিং করতে এসে আবির আর নুসরতের কথা মাথায় এল কীভাবে?
শুরুতে যখন ছবির প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান বা অন্যান্যদের সঙ্গে আলোচনা চলছিল, তখন আমি বলেছিলাম, কিছু থিয়েটারের লোকজন এই ছবিতে অভিনয় করুক। ওঁরা তাতে রাজি হয়ে যান। তবে, ওঁরা চাইছিলেন, ছবির মুখ্য ভূমিকায় এমন কেউ অভিনয় করুক, যাঁদের বিপণন যোগ্যতা আছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আমি ঠিক করি, শুধু স্টার ভ্যালু নয়, সেই সঙ্গে অভিনয়টাও চমৎকার করতে পারবেন, এমন কাউকে নেওয়া উচিত। তখনই আবির আর নুসরতের কথা মনে পড়ে। কারণ, আমার মনে হয়েছিল অশোক আর স্মিতার চরিত্রে ওঁরা ভালো অভিনয়ও করবেন এবং ওঁদের স্টার ভ্যালুও রয়েছে।
থিয়েটারের লোকজনের কথা বলছিলেন। মোশারফ করিমের বাংলা নাটক এপার বাংলাতেও দারুণ জনপ্রিয়...
থিয়েটার থেকে মোশারফ করিম রয়েছেন, অর্ণ মুখোপাধ্যায় রয়েছেন, পৌলমী বসু আছেন এই ছবিতে।
মোশারফ করিমের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল?
অসাধারণ। ওঁর ‘কমলা রকেট’ দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আমি প্রযোজকদের জোর দিয়ে বলেছিলাম, এই চরিত্রটার জন্য মোশারফ করিমকেই চাই। ওঁরা রাজি হন। বাংলাদেশে গিয়ে আমরা ওঁর সঙ্গে চুক্তি করে আসি। এই ছবির ‘ডার্ক হর্স’ অবশ্যই মোশারফ করিম।
আর যখন আপনার স্ত্রী পৌলমী বসুকে এই ছবির একটা চরিত্র অফার করলেন, শুনে ওঁর প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
ও অভিনয় করে, কিন্তু সিনেমা নিয়ে যে আলাদা কোনও উৎসাহ আছে, তেমন নয়। বলেছিলাম, চরিত্রটা পড়ে দেখো। পছন্দ হলে কোরো।
‘ডিকশনারি’ সিনেমা হলে রিলিজ করছে। কিন্তু করোনা অতিমারীতে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে সিনেমা দেখার ধরন বদলে গিয়েছে। এখন ওটিটি-র রমরমা। সিনেমা হলের ভবিষ্যৎ কী মনে হয়?
আমি চাই বাংলা ছবি দেখতে মানুষ হলে যাক। ওটিটি যেমন থাকবে, সিনেমা হলও থাকবে। সিনেমা হলের উন্মাদনা কখনওই কমবে না। কিছুদিন আগেই তো ‘মাস্টার’ নামে একটা তামিল ছবি রিলিজ করল, লোকে হলে গিয়ে হইহই করে দেখল।
বাংলার হল বাঁচানোর জন্য আলাদা কোনও উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এ ব্যাপারে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছেন। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্যও প্রচুর কাজ করেছেন উনি। আমার ধারণা, ভবিষ্যতে আরও কাজ করবেন।
রাজনীতিতে সময় দিতে গিয়ে আপনার অধ্যাপকসত্তা বা শিল্পীসত্তা কোনওভাবে উপেক্ষিত হল বলে মনে হয়?
আমি কোনও কালেই মনে প্রাণে অধ্যাপক হতে চাইনি। হয়ে গিয়েছিলাম। আর রাজনীতি করতে এসে আমার শিল্পীসত্তার কোনও ক্ষতি হয়েছে বলে মনে হয় না। বরং বলব, উল্টোটা। উপকারই হয়েছে।
দলবদল ঘিরে টালিগঞ্জে যা চলছে! শিল্পীরাই তো একে অপরের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষোদ্গার করছেন। একে কীভাবে দেখছেন?
এই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির ঘটনাগুলি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ইন্ডাস্ট্রির পক্ষেও খারাপ লক্ষণ। দলমত নির্বিশেষে সকলকে দায়িত্ববান হতে হবে।
দু’বারের বিধায়ক। দুটো টার্ম রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ২০২১-এর সামনের লড়াইটা কতটা কঠিন মনে হচ্ছে?
কঠিন কি না জানি না। আগে টিকিট পাই, তারপর এসব নিয়ে কথা বলতে পারব।