কর্মরতদের উপার্জন বৃদ্ধি পাবে। শরীর-স্বাস্থ্য ভালোই যাবে। পেশাগত পরিবর্তন ঘটতে পারে। শিল্পী কলাকুশলীদের ক্ষেত্রে শুভ। ... বিশদ
করোনা ভাইরাস। নাম শুনলেই আঁতকে ওঠেন অনেকে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিশ্বজুড়ে মহামারীর ছবি। আমি কিন্তু প্রথম থেকেই করোনা ভাইরাসকে বিন্দুমাত্র ভয় পাইনি। ছোট থেকে জলে-জঙ্গলে বড় হয়েছি। রোদ-বৃষ্টিতে পোড়া আমাদের শরীর। তাই প্রথম থেকেই মনে হয়েছিল, এই ভাইরাসকে অনায়াসে পরাস্ত করা যাবে।
আমরা প্রথম বিশ্বের দেশগুলিকে সবকিছুতেই অনুসরণ করি। কিন্তু, সেই আমেরিকা, রাশিয়ার মতো দেশও আজ করোনায় কাবু! খবরের কাগজ, টিভি, সোশ্যাল মিডিয়া সবেতেই শুধু করোনার খবর। যা ঘটছে তার চেয়ে গুজব ছড়াচ্ছে বেশি। আমি শুধু দেখতাম, বিশ্বে কতজন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠছেন। ভারতে কতজন, আমাদের বাংলায় কতজন সুস্থ হচ্ছেন, সেই পরিসংখ্যান সবসময় মাথায় গেঁথে রাখতাম। তাতে অনেকটা আশ্বস্ত হয়েছি। কারণ, সব পরিসংখ্যানে দেখেছি, আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত্যুর সংখ্যা ঝড়ের গতিতে বাড়লেও সুস্থতার হারই বেশি। তাতে মনের জোর দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছিল।
আমরা জনপ্রতিনিধি। দলের কাজে সারাদিন বহু মানুষের মুখোমুখি হতে হয়। আমাদের দেশে সংক্রমণ শুরু হতেই প্রতিদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলেছি। নিজের অফিস, সহকর্মী, সাধারণ মানুষ সবার সঙ্গেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। জামা-কাপড়ের মতো সারাদিনই মাস্ক পরে থাকতাম। প্যান্টের পকেটে আগে শুধু মোবাইল ফোন থাকত। এখন তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্যানিটাইজার। সারাক্ষণ স্যানিটাইজার নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি।
আমার নিরাপত্তারক্ষী প্রথম আক্রান্ত হলেন। তাঁকে বলেছিলাম, ভয় পেও না। কয়েকদিন বিশ্রাম নাও। ঠিক হয়ে যাবে। তাঁর সঙ্গে একই গাড়িতে ঘুরেছি। সারাক্ষণ একইসঙ্গে থেকেছি। তাই সচেতন নাগরিক হিসেবে আমিও পরীক্ষা করালাম। রিপোর্টও পজিটিভ এল। কিন্তু, আমি সম্পূর্ণ সুস্থই ছিলাম। জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট কোনও কিছুই ছিল না। অর্থাৎ আমি ছিলাম উপসর্গহীন। চিকিৎসকেরা বাড়িতেই হোম আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দিলেন।
আমার যে করোনা হয়েছে, এটা একটিবারের জন্যও ভাবিনি। করোনাকে ভয় পেলে যে কেউ মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাবে। পরিবারের লোকজন উদ্বেগে ছিলেন। তাঁদের বলেছি— কিছু হবে না। তবে, হোম আইসোলেশনে থাকার সময় সাবধানেই থেকেছি। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ওষুধ, লেবুর রস সহ যা যা খেতে বলেছিলেন, খেয়েছি। এক প্রকার বিশ্রামেই সময় কাটিয়েছি। শরীরচর্চা করেছি। বই পড়ে, ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। কখনও আতঙ্কিত হইনি। ভয়ও পাইনি। ১০ দিন পর দ্বিতীয়বার করোনা পরীক্ষা করালাম। রিপোর্ট নেগেটিভ এল।
রাজনীতির ময়দানে লড়াই করেছি বহুবার। প্রতিবার জিতেছি। তাই হয়তো করোনাও আমাকে হারাতে পারেনি। মনের জোর আর বাঁচার ইচ্ছে আমাকে জিতিয়ে দিল।