কর্ম, বিদ্যা ক্ষেত্রে উন্নতির যোগ। আয় ব্যয় ক্ষেত্রে সমতার অভাব। স্বাস্থ্য ভালো থাকলেও আঘাতযোগ থাকায় ... বিশদ
উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসতের নদীভাগ বাজারের কাছে রঘু ডাকাত প্রতিষ্ঠিত ডাকাত কালী মন্দিরটি জরাজীর্ণ অবস্থায় বর্তমানে পড়ে রয়েছে। প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো এই মন্দিরটিকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে একটা সুপ্রাচীন বটগাছ। স্থানীয় মানুষজনের মতে, দেবীর অলৌকিক মহিমায় সে তার ঝুড়ি বিস্তার করে মন্দিরটিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছে। মন্দিরটিকে সংস্কারের কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ে না। কিন্তু কেন বল তো? এর কারণ, জনশ্রুতি আছে যে, কেউ যখনই এই গাছের ডালপালা কাটতে এসেছে বা মন্দির সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে, তাকেই ভয়ঙ্কর অসুখের কবলে পড়তে হয়েছে।
মন্দিরের মূল ফটকটিও প্রাকৃতিকভাবে বটগাছের ঝুরি দ্বারা সুরক্ষিত। মূল গর্ভগৃহে গাছের ঝুরির নীচেই একখানা বিশাল বেদী। চুন-সুড়কি গাঁথা মন্দিরের ভিতরে প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালানোর জন্য ছোট-ছোট কুলুঙ্গি প্রাচীনত্বের ছাপ বহন করে। কাকতালীয় হলেও সত্যি, মন্দিরের মূল দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে বাঁদিকে গাছের শিকড়ে দেখা যায় হাতের আঙুলের ছাপের মতো এক আকৃতি। আশ্চর্যের বিষয় কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়েই মন্দিরের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি।
যে সময়ে রঘু ডাকাত এই মন্দির তৈরি করে, সেই সময় সমগ্র এলাকা ছিল ঘন জঙ্গলে ঢাকা। সেই কারণে এই মন্দিরকে অনেকে ‘বুনো কালীবাড়ি’ বলে থাকেন। রঘু ডাকাত তার দলবল নিয়ে ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে কালী পুজো করে নরবলি দিয়ে মন্দিরের পাশের পুকুরের জলে ভাসিয়ে দিয়ে যেত। অষ্টধাতুর কালীমূর্তি গড়ে নিষ্ঠা ভরে পুজো করত রঘু। কোনও একদিন ডাকাতি করতে গিয়ে সামন্ত রাজাদের লেঠেল বাহিনীর হাতে সে ধরা পড়ে যায়। এরপর ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে অষ্টধাতুর মূর্তি তরোয়াল দিয়ে ভেঙে ফেলে সে। এরপর সেই ভাঙা মূর্তিরই পুজো করত রঘু। পরবর্তীকালে সেই মূর্তি চুরি হয়ে গেলে বটবৃক্ষকেই পুজো করা শুরু হয়।