Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

পথদ্রষ্টা ফালকে
সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়

‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’-এর হাত ধরে পথচলা শুরু হয় প্রথম ভারতীয় পূর্ণাঙ্গ কাহিনীচিত্রের। ভারতীয় জাতীয়তাবাদের সঙ্গেও ফালকের নাম অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। ৭৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে এ দেশের সিনেমার পথদ্রষ্টাকে ফিরে দেখা।

কী করে সিনেমা এল, সেটা পৃথিবীর সব দেশেই একটু গোলমেলে ইতিহাস। কারণ সিনেমা তো শিল্প হিসেবে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়নি, এসেছিল নিতান্ত বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে। সত্যি বলতে কী, প্রথমযুগে শ্রমজীবী তথাকথিত নিম্নবর্গীয় মানুষদের চিত্তহরণের কৌশল ছিল সিনেমা। উনিশ শতকের শেষের দিকে মানে ১৮৯৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ফরাসি দেশে প্রথম চলচ্ছবি এল। লুমিয়ের ভ্রাতৃদ্বয়ের সৌজন্যে যে চলমান ছবি দেখানো হল, আজকের যুগে কাহিনীচিত্র বলতে যা বোঝায় সেই চিত্রমালা কিন্তু সেটা ছিল না। সেখানে কিছু খণ্ডদৃশ্য ছিল। শব্দ ছিল না। মানুষ মোহিত হয়েছিল এটা ভেবেই যে, ছবি চলতে পারছে, কিছু বোঝাতে পারছে। তখন সিনেমা ছিল সার্কাস বা ভানুমতীর খেলার মতো তাৎক্ষণিক মজার বিষয়। ঠিক এই কারণেই অতলান্তিকের ওপারে মার্কিন দুনিয়ায় সিনেমা প্রভূত বিস্তার লাভ করে। কারণ সেই সময় আমেরিকায় শ্রমের সময় নির্দিষ্ট হয়নি। তাই ওখানকার শ্রমজীবী মানুষ সময়মাপা একটা বিনোদনের উপকরণ হিসেবে গ্রহণ করল ছায়াছবিকে। একথা বলার উদ্দেশ্য চলচ্চিত্রকে প্রথম থেকে কেউই সসম্ভ্রমে মেনে নেননি। সে ছিল অনভিজাতদের অপেরা মাত্র। রুশ দেশেও মাক্সিম গোর্কি সিনেমাকে সাদা-কালো রঙের, বাস্তবতাহীন, দূর্লক্ষণ মনে করতেন। এদেশে রবীন্দ্রনাথও প্রথম দিকে সিনেমা সম্বন্ধে সন্দিহান ছিলেন।
ভারতে ছবি কবে এল? ইতিহাস আমাদের বলে, ১৮৯৬ সালের ৭ জুলাই বোম্বে শহরের অধুনালুপ্ত ওয়াটসন হোটেলে লুমিয়ের ভাইদের ছবি দেখানো হয়। ছবির দাম চড়া (তখনকার যুগে এক টাকা) থাকায় কিছু ইংরেজ অফিসার ও উচ্চপদস্থ ভারতীয় ছাড়া সেই অনুষ্ঠান কেউ দেখতে পারেননি। রহস্যজনক কারণে সেই ছবি কলকাতায় আসেনি। এই শহরে ছবি আসতে আরও একটা বছর অপেক্ষা করতে হল। ১৮৯৭ সালের ২০ জানুয়ারি চৌরঙ্গির অধুনালুপ্ত রয়্যাল থিয়েটারে কলকাতায় প্রথম চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। খবরের কাগজের বিজ্ঞাপন থেকে এই তথ্য মেলে। বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই কলকাতায় ছবি তৈরি শুরু হয়ে যায় এবং তা শুরু করেন হীরালাল সেন। সেই ছবিগুলি ছিল দলিলচিত্র বা বিজ্ঞাপনচিত্র। এই রকম কাজ মহারাষ্ট্রে হরিশ্চন্দ্র ভাতভদেকরও করেছিলেন। জুহু সাগরতটের বক্সিংয়ের কিছু ছবি তিনি তুলে ছিলেন। সিনেমাকে কাহিনী হয়ে উঠতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল। সেই অপেক্ষা করার ইতিহাসে আমাদের প্রথম মাইল স্টোন দাদাসাহেব ধুন্দিরাজ ফালকে। এই প্রসঙ্গে একটা বিতর্ক অবশ্যই থাকবে যে, প্রথম ছবি কে তৈরি করেছিলেন? দাদাসাহেব ফালকে না হীরালাল সেন? হীরালাল প্রসঙ্গে আমরা যা তথ্য পাই, তাতে ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদের নাটকগুলি (ভ্রমর, আলিবাবা) যখন কলকাতার ক্লাসিক থিয়েটারে অভিনীত হয়েছিল, তখন ক্যামেরা বসিয়ে এর কিছু অংশ রেকর্ড করেছিলেন তিনি। সেগুলিকে এক অর্থে কাহিনীচিত্র বলা গেলেও যেতে পারে। কিন্তু সেই ছবিগুলি আমাদের হাতে নেই। ১৯১৭ সালে হাতিবাগানে এক বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে সব পুড়ে যায়। এতে বাংলা ছবিরও কপাল পোড়ে। আমাদের হাতে নথি বলতে কিছুই থাকে না। সংবাদপত্রের পাতা থেকে কিছু পরোক্ষ প্রমাণ রয়ে গিয়েছে। সেদিক থেকে দেখলে দাদাসাহেব ফালকের ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’কে প্রথম আখ্যানচিত্র বলার যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। যে বছর রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পেলেন, সে বছরই এই ছবি জনসাধারণের সামনে প্রদর্শিত হয়। এটাকেই ঐতিহাসিকরা মোটামুটি ভারতীয় ছবির প্রদর্শনের জন্মক্ষণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এটাই আমাদের প্রথম কাহিনীচিত্রে পদাতিক হওয়া। এ ক্ষেত্রে আর একটা প্রসঙ্গ চলেই আছে, দাদাসাহেব ফালকে সত্যিই ভারতে প্রথম কাহিনীচিত্র তৈরি করেছিলেন কি না? এ বিষয়েও যথেষ্ট বিতর্কের অবকাশ রয়েছে। কেন না তথ্য আমাদের জানাচ্ছে যে, ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’ মুক্তি পাওয়ার অন্তত এক বছর আগে ১৯১২ সালের ১৮ মে মুক্তি পেয়েছিল শ্রীরামচন্দ্র গোপাল তোরণের তত্ত্বাবধানে তৈরি ২২ মিনিটের ছবি ‘শ্রীপুণ্ডলিক’। অর্থাৎ এই ছবিটিই ভারতের প্রথম চলচ্চিত্র। যদিও মনে করা হয়, এটা একটা নাটকেরই অংশ। অর্থাৎ এর এক বছর পর প্রদর্শিত ফালকের ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’ ভারতের প্রথম পূর্ণাঙ্গ কাহিনীচিত্র। সম্প্রতি ভারতীয় চলচ্চিত্র তথা বাংলার চলচ্চিত্রের জন্মমুহূর্ত নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। তাই দাদাসাহেব ফালকেকে বিচার করতে বসে পুরো প্রসঙ্গের অবতারণা করতেই হল।
রবীন্দ্রনাথের কথা ধার করে বলতে হয়, ‘তুমি কোন প্রলয়ের পথে এলে, সুপ্ত রাতে’— এভাবেই পৃথিবীতে সিনেমার আগমন। এক নতুন শিল্পসভ্যতা চলমান চিত্রমালা সেই ডাকেই সাড়া দিল। ছিল অনেক দাবি, অনেক চাহিদা। জার্মান ভাবুক ওয়াল্টার বেঞ্জামিন বলেছিলেন, ‘ইউরোপে সিনেমা এসে অনেক বন্ধ দরজা ভেঙে দিল। বাস্তবকে চেনার এক নতুন পদ্ধতি আবিষ্কৃত হল। সেখানে ধনী-দরিদ্র, গ্রামবাসী-শহরবাসী সকলের অবাধ অধিকার। সিনেমা প্রথম গণতান্ত্রিক শিল্পমাধ্যম।’ এটা বলতেই হবে যে, দাদাসাহেব ফালকেই আমাদের দেশে প্রথম বুঝেছিলেন সিনেমা গণতান্ত্রিক শিল্প আর এই শিল্পমাধ্যমকে ব্যবহার করতে হবে জনসাধারণের চিত্তবিনোদন আর চেতনার মানোন্নয়নের কাজে।
এবার গল্পটা আর একটু ভালো করে বলা যাক। দাদাসাহেব ছিলেন এক রক্ষণশীল মারাঠি ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল চিত্রকলা দিয়ে। পরবর্তীকালে তিনি নাটকেও কাজ করেন। ১৮৭০ সালের ৩০ এপ্রিল তাঁর জন্ম। পুরো নাম ধুন্দিরাজ গোবিন্দ ফালকে। তাঁকে মানুষ শ্রদ্ধা করে দাদাসাহেব বলত। জে জে স্কুল অব আর্টে পাঠ শেষ করার পর তিনি যখন ভাগ্যানুসন্ধান করছেন, তখন ১৮৮৬ সালে সরস্বতী ওরফে কাকি নামে এক মারাঠিকন্যার সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। এই খবরটা এই কারণেই গুরুত্বপূর্ণ যে, কাকি ফালকের আত্মত্যাগ ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। দাদাসাহেব যখন ছবি করেছিলেন, তখন তাঁর স্ত্রী অর্থ জোগান দিতে নিজের শেষ স্বর্ণালঙ্কারটি পর্যন্ত বিসর্জন দিয়েছিলেন। যেভাবে একজন ব্রাহ্মণ পরিবারের অচলায়তন এই নারী ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন, তা অবিস্মরণীয়।
বোম্বের প্রধান বিচারপতি বাবুরাও পাণ্ডুরঙ্গ সহ অনেকের পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিলেন দাদাসাহেব। কিন্তু কিছুতেই তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না ফোটোগ্রাফির ব্যবসা থেকে সরে অন্য পেশায় কীভাবে যাওয়া যায়! একদিন ছেলে ভাওয়ালচন্দ্রকে নিয়ে রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ ইচ্ছা হল, কী ছিল বিধাতার মনে তিনি একটি বায়োস্কোপ দেখে ফেললেন। ছবি দেখে ছোট্ট ভাওয়াল এতটাই উত্তেজিত ছিল যে, বাড়ি ফিরে মাকে ছবির গল্প করল এবং বাধ্য করল পরের দিন যাতে আবার তাঁরা বায়োস্কোপ দেখতে যান। এই পরের দিনটিই ছিল ভারতের সিনেমার ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। তখন ডিসেম্বর মাস। বোম্বেতে অবশ্য তেমন ঠান্ডা নেই। সস্ত্রীক ছবি দেখতে গেলেন দাদাসাহেব। ছবির নাম ‘লাইফ অব ক্রাইস্ট’। এই ছবি দেখেই দাদাসাহেবের প্রথম মনে হয়েছিল আমাদের দেশের পুরাণের উপর নির্ভর করে এমন ছবি তৈরি হয় না কেন? আমাদের দেশের দর্শক কেন পাশ্চাত্যমুখী? দাদাসাহেবের মাথায় যখন এইসব সমীকরণ চলছে, তখন কাকি হঠাৎ জিজ্ঞেস করেন, ‘ওঁরা পর্দায় এসব তৈরি করেন কী করে?’ দাদাসাহেবের মুখ দিয়ে হঠাৎ দৈববাণীর মতো নিঃসৃত হল, ‘তুমি আস্তে আস্তে সব জানতে পারবে। আমিই এমন ছবি তৈরি করব।’ এই জবাবে বিস্ময়ে বাকরহিত হয়ে গেলেন কাকি। কিন্তু এটাই ভারতের চলচ্চিত্রের ইতিহাসের মাহেন্দ্রক্ষণ। দাদাসাহেব অনুভব করতে পেরেছিলেন, যিশু খ্রিস্টের জন্ম যদি শিল্পের বিষয় হতে পারে, তাহলে ভারতের পুরাণেরও কোনও কোনও অংশ অবশ্যই ছবির বিষয় হতে পারে। সেদিক থেকে বিশ্লেষণ করলে ভারতীয় ছবি কিন্তু প্রথম থেকেই রাজনৈতিক। মহারাষ্ট্রে বালগঙ্গাধর তিলক হিন্দু পুনরুত্থানের যে চেষ্টা চালিয়েছিলেন, তার সঙ্গে দাদাসাহেব যে কাহিনীটিকে তাঁর প্রথম ছবির জন্য নির্বাচন করেছিলেন, তার কোথায় যেন মিল রয়েছে। অর্থাৎ হিন্দু পুরাণের নায়কদের জাতীয় বীর হিসেবে তুলে ধরা। এমন জাতীয়তাবোধের প্রকাশ বাংলা সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্র, মাইকেল মধুসূদনের রচনাতেও পাওয়া যায়। যেটা বাংলায় কলমের আঁচড়ে হয়েছিল, সেটাই যেন মহারাষ্ট্রে ফালকে ক্যামেরার মাধ্যমে করলেন। জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে শিল্পকলার সেতুবন্ধন। আজও ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’ দেখলে আমরা বুঝতে পারি যে, এই নির্বাক ছবিতে এক ধরনের ভারতীয়ত্ব নির্মাণের জন্যই দাদাসাহেব সক্রিয় ছিলেন। সেই দিক থেকে তাঁকে নেহাত চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে দেখলে চলবে না। তাঁর যথেষ্ট ইতিহাস চেতনা ছিল এবং তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে ভারতীয় চলচ্চিত্রকে সম্পৃক্ত করেছেন।
দাদাসাহেব সংস্কৃত ধ্রুপদী সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। তাঁর বাবা বোম্বের উইলসন কলেজে সংস্কৃত পড়াতেন। দাদাসাহেব বরোদার কলাভবন থেকে ফোটোগ্রাফির শিক্ষা নিয়েছিলেন। ফোটো কেমিক্যাল প্রিন্টিং পদ্ধতি শেখাটা ছবি তৈরির ক্ষেত্রে তাঁর অপরিমিত উপকার করেছে। ১৯১৭ সালে একটি প্রবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘গতিচিত্র করার জন্য যা যা দরকার— চিত্রকলা, তৈলচিত্রের ব্যবহার, ভাস্কর্য, আলোকচিত্র, নাটক, জাদুবিদ্যা সবকিছুই শিখেছিলাম। আমি নিশ্চিত ছিলাম আমি পারব।’ ছবি তৈরি ব্যাপারে কিন্তু ফালকে আত্মীয়স্বজনের সমর্থন পাননি। একমাত্র ব্যতিক্রম সহধর্মিনী। ফালকে নিজের সিদ্ধান্তের প্রতি সন্ন্যাসীর মতো নিষ্ঠাবান ছিলেন। প্রায় একমাস বোম্বের বিভিন্ন প্রদর্শনালয় ঘুরে দেখেন। ছবি দেখে সেগুলি ব্যাখ্যা করতেন মনে মনে। একটা পাঁচ ডলারের সস্তা ক্যামেরায় দিনে প্রায় ২০ ঘণ্টা কাজ করতেন, বিভিন্ন ছবি তুলতেন। প্রায় এক বছর এই সুকঠোর পরিশ্রমে তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙে গেল, দৃষ্টিশক্তি কমে গেল। তিনি উপলব্ধি করতে পারলেন, বিলেতে না গেলে সিনেমা শিক্ষা সম্পন্ন হবে না। তাই ১৯১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি বিলেতযাত্রা করলেন। সেখানে তিনি সেফিল হেপওয়ার্থের ‘এবিসি অব সিনেমাটোগ্রাফি’ বইটি পড়লেন। অর্থাৎ যে গুজব প্রচলিত রয়েছে, ফালকে একজন স্বভাবশিল্পী। তা মোটেও ঠিক নয়। তিনি নিজেকে যথেষ্ট প্রস্তুত করেছিলেন। ‘বায়োস্কোপ’ পত্রিকার সম্পাদক ক্যাবোর্ন সাহেবের পরামর্শে হেপওয়ার্থের কাছ থেকে ছবি তৈরির ছোট কোর্সও করেছিলেন দাদাসাহেব এবং লন্ডন থেকে উইলিয়ামসন ক্যামেরা কিনে ভারতে ফিরে আসেন। এভাবেই সম্পন্ন হয়েছিল ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’ তৈরির ভূমিকা।
দেশে ফিরে ছবি করবেন, কিন্তু টাকা পাবেন কোথায়? মসিহা হয়ে দেখা দিলেন কাকি। যাবতীয় গয়না আর সম্পত্তি বন্ধক দেওয়া হল। সেই টাকায় শুরু হল ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’। এ প্রসঙ্গে বলতে পারি, সত্যজিৎ রায়ও স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে প্রথমে ‘পথের পাঁচালি’র কাজ শুরু করেছিলেন। ১৯২৮ সালে ইন্ডিয়ান সিনেমাটোগ্রাফ কমিটিকে ফালকে এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’র জন্য আলোকচিত্র তোলা, অভিনয় শেখানো, চিত্রনাট্য লেখা সব কাজই তাঁকে করতে হয়েছিল। কারণ সেই সময় ভারতবর্ষে সিনেমা বিষয়ে তেমন কেউ কিছু জানতেন না। এই ছবির অভিনেতা-অভিনেত্রী নির্বাচনেও অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়েছে তাঁকে। মনে রাখতে হবে তখনও সিনেমা নিতান্ত নিম্নবর্গীয় ও তুচ্ছ বিষয়। প্রথম শ্রেণীর কোনও নট-নটীকে পাননি। তৃতীয় শ্রেণীর বাতিল নাট্যকর্মীদের দিয়ে তিনি অভিনয় করিয়েছিলেন। অগত্যা কোনও মহিলাকে না পেয়ে বাধ্য হয়ে এই ছবির শৈব্যার চরিত্রে বোম্বের এক রেস্তরাঁর সুদর্শন তরুণ সালুঙ্কেকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে গল্পটা বেশ মজার। ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’র অভিনেতা-অভিনেত্রীর খোঁজে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। জনৈক দত্তরায় দামোদর ওরফে দাদাসাহেব দাভকেকে নায়কের চরিত্রে পাওয়া গেল। কিন্তু রাজকুমার রোহিতাশ্ব চরিত্রের জন্য কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এর দু’টো কারণ— প্রথমত, তখনকার কোনও মা-বাবা’ই চাইতেন না ছেলে অভিনয় করুক। দ্বিতীয়ত, এই ছবির গল্প অনুযায়ী এই চরিত্রটির মৃত্যু হবে। তাই কুসংস্কারের জন্য কেউই রোহিতাশ্বের চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি ছিলেন না। অবশেষে দৃঢ়চেতা ফালকে এই চরিত্রে নিজের ছেলে ভাওয়ালচন্দ্রকে কাস্ট করলেন। কিন্তু মূল সমস্যা হল কী করে তিনি তারামতী অর্থাৎ যাকে আমরা শৈব্যা নামে চিনি, সেই চরিত্রে অভিনেত্রী পাবেন! তাঁর বিজ্ঞাপনের প্রত্যুত্তরে চারজন গণিকা হাজির হলেন। তাঁদের দেখে দাদাসাহেব ফের বিজ্ঞাপন দিলেন ‘একমাত্র সুদর্শনা মহিলারাই কাম্য’। এর উত্তরে এক ধনীর ‘রক্ষিতা’ সম্মত হলেন। কিন্তু শেষে তিনিও বেঁকে বসলেন। পরে আরও দুই বারাঙ্গনা এলেন। তবে, তাঁরাও শেষরক্ষা করলেন না। তাঁদের ধারণা ছিল, দেহ বিক্রি করা যায়, আত্মা বিক্রি করা যায় না। আর সিনেমায় অভিনয় আত্মা বিক্রিরই নামান্তর। অতঃপর নিরুপায় হয়ে পুরুষকেই মহিলা সাজিয়ে অভিনয় করানো হল। ১৯১২ সালে দাদর মেইন রোডে তৈরি হল ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’র সেট। শ্যুটিং হল। ১৯১৩ সালের এপ্রিল মাসে বোম্বের অলিম্পিয়া ছবিঘরে প্রথম প্রদর্শিত হল ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’— ৩ হাজার ৭০০ ফুট লম্বা রিলের ভারতের প্রথম পূর্ণাঙ্গ কাহিনীচিত্র। কয়েক সপ্তাহ পরে এই শহরের করোনেশন থিয়েটারে সর্বসাধারণের জন্য মুক্তি পায় ফালকের ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’। চলেছিল টানা ২৩ দিন। ফালকের টার্গেট অডিয়েন্স মোটেও এ দেশের ধনী লোকজন বা ঔপনিবেশিক অফিসারকুল ছিল না। তাঁর লক্ষ্য ছিল শহরের সাধারণ মানুষ— যাঁদের সেই সময় বোম্বাই শহরের ‘চারআনাওয়ালা’ শ্রেণী বলা হতো। তাঁরা সাদরে গ্রহণ করলেন ফালকের সৃষ্টিকে।
শুধুমাত্র ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’ নয় তারপর যে ছবিগুলি ফালকে তৈরি করেছিলেন ‘মোহিনী ভষ্মাসুর’, ‘সত্যবান সাবিত্রী’, ‘লঙ্কাদহন’, ‘শ্রীকৃষ্ণজন্ম’, ‘কালীয়ামর্দন’ সেগুলিও ছিল ভারতীয় পুরাণ অবলম্বনে নির্মিত। এগুলিই ভারতের জাতীয় সিনেমার ভিত্তিভূমি তৈরি করে। হরিশ্চন্দ্রের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে ফালকে নাসিকে চলে যান এবং সেখানে সিনিক ব্যাকড্রপ দেওয়া স্টুডিও তৈরি করেন। স্টুডিও ছিল পরিবারের মতো। সকল কর্মীর খাওয়া-দাওয়ার প্রতি নজর দিতেন কাকি নিজে। এমনকী, সেই সময়ে স্টুডিওর নিজস্ব ডাক্তারও ছিল। তাই বলা যায়, ফালকে স্টুডিও নয়, যেন সিনেমা পরিবার গঠন করেছিলেন। ১৯১৪ সালে ফের ইংল্যান্ডে যান তিনি। সেখানকার কয়েকটি স্টুডিও দাদাসাহেবকে লোভনীয় অর্থের বিনিময়ে কাজ করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ফালকে সেইসব হাতছানি উপেক্ষা করে মাতৃভূমিতে ফিরে এসেছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জেরে ফালকের ব্যবসার পতন শুরু হয়। নিজের মেয়ে মন্দাকিনীকে অর্ধেক পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ‘কালীয়ামর্দন’ ছবিতে অভিনয় করিয়েছিলেন। এক অর্থে ভারতের অন্যতম প্রথম অভিনেত্রী দাদাসাহেব ফালকের নিজেরই মেয়ে। সে যুগের সমস্ত সামাজিক বাধা উপেক্ষা করে কাকি ফালকে ‘লাইফ অব স্যরিয়াল’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। এই পতিব্রতা মহিলা জানতেন তাঁর স্বামী অন্ধকার স্বদেশের বুকে এক আলোকবর্তিকা। ফালকের সুদিন ফিরে আসে ‘লঙ্কা দহন’ ছবিতে। এই ছবিটি এত টাকা আয় করেছিল যে, বিভিন্ন হল থেকে গোরুর গাড়ি করে টাকা পুলিসি প্রহরায় বোম্বে শহরে আনা হতো। আবার জনঅভিনন্দন পেলেন ফালকে। ১৯১৭ সালে ফালকে ফিল্ম কোম্পানিকে হিন্দুস্তান ফিল্ম কোম্পানির সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। এই সংযুক্তির ফসল ‘শ্রীকৃষ্ণ জন্ম’। ভারতের প্রথম ব্লকবাস্টার ছবি। তখন পূর্বভারতে ম্যাডান কোম্পানি যেমন একটা স্তম্ভ হয়ে উঠছে, তেমনই পশ্চিম ভারতে ফালকে একটা স্তম্ভ হয়ে উঠলেন। তাঁর দেখানো পথেই পরবর্তীকালে গড়ে উঠেছিল ‘নিউ থিয়েটারস’, ‘বোম্বে টকিজ’-এর মতো প্রতিষ্ঠান।
দুর্ভাগ্যের বিষয়, ২০টি ফিচার ফিল্ম ও ১৭টি শর্টফিল্ম করার পরও ফালকের শেষ জীবন কেটেছিল খুবই কষ্টে। সিনেমার জন্য তিনি কপর্দকশূন্য হয়ে পড়েন। তিনি ‘গঙ্গাবতরণ’ নামে একটি সবাক ছবিও তৈরি করেছিলেন, কিন্তু সেটি বক্সঅফিসে ব্যর্থ হয়। অবশ্য, সেই ছবিতে ফালকের প্রতিভার আর কিছু অবশিষ্ট ছিল না। কৌতুকের ব্যাপার, ১৯৩৯ সালে বোম্বেতে আয়োজিত ভারতীয় চলচ্চিত্রের রজত জয়ন্তী উৎসবে ফালকেকে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল এবং তাঁকে এ দেশে চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের জন্য একটি মানিব্যাগ দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। পরের বছর অর্থাৎ ’৪০ সালে ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের আমন্ত্রণে কলকাতাতেও এসেছিলেন দাদাসাহেব। তখন সিনেমা পত্রিকা ‘দীপালি’ তাঁকে সংবর্ধনা জানিয়েছিল।
তাঁর ছবি বানানোর শেষ আবেদনপত্র প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় তিনি মর্মান্তিক আঘাত পান। কিছুদিনের মধ্যেই ১৯৪৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ভগ্নহৃদয়ে প্রয়াত হন ‘ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনক’ দাদাসাহেব ফালকে। শুধু ভারতীয় সিনেমাই নয়, ভারতীয় জাতীয়তাবাদের সঙ্গে এই নাম অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। তাই ফালকের নাম ইতিহাসে উৎকীর্ণ থাকবে।
* লেখক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফিল্ম স্টাডিজ’ বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও সাংস্কৃতিক ভাষ্যকার

ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
গ্রাফিক্স: সোমনাথ পাল
সহযোগিতায়: উজ্জ্বল দাস 
16th  February, 2020
চারুলতার অন্দরমহল

‘আশ্বিনের ‘পরিচয়’ খুলে দেখলুম রুদ্রমশাই আবার আমার পিছনে লেগেছেন।... রুদ্রমশাই সাহিত্য বোঝেন কিনা জানি না; সিনেমা তিনি একেবারেই বোঝেন না। শুধু বোঝেন না নয়; বোঝালেও বোঝেন না।’ পরিচয় পত্রিকায় সত্যজিৎ রায়-অশোক রুদ্রের এই চাপানউতোরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ‘চারুলতা’।
বিশদ

21st  April, 2024
বিদেশে এখনও আমি ‘চারুলতা’

কতদিন হয়ে গেল। এখনও বিদেশে গেলে প্রায় কেউই আমাকে মাধবী বলে ডাকেন না। কী বলে ডাকে, জানেন? ‘চারুলতা।’ শুধু বিদেশে নয়, দেশের অনেক জায়গাতেও। আজ থেকে ৬০ বছর আগেকার কথা। তখন সবে ‘মহানগর’ ছবির শ্যুটিং শেষ হচ্ছে।
বিশদ

21st  April, 2024
অমলকে দেওয়া চারুর খাতাটা বাবা বাড়িতে বসেই ডিজাইন করেছিলেন

তখন আমার বয়স খুবই কম। ১৯৬৪ সালে ‘চারুলতা’ হয়েছিল। আমার বয়স তখন ১১ বছর। তাই স্মৃতি যে খুব একটা টাটকা, এমনটাও নয়। বাড়িতে ‘চারুলতা’ নিয়ে বাবাকে খুবই পরিশ্রম করতে দেখেছি।
বিশদ

21st  April, 2024
আমরি বাংলা ভাষা
অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায়

রোজকার মতো প্রাতঃভ্রমণ সেরে চায়ের দোকানে এসে বসলেন চণ্ডীবাবু। কাগজের দিকে হাত বাড়াতে যাচ্ছিলেন। আর মধ্যেই আমাকে দেখে বলে উঠলেন—
গুড মর্নিং স্যর, হ্যাপি বেঙ্গলি নিউ ইয়ার। বিশদ

14th  April, 2024
রহস্যময় গম্ভীরা

পুরীর গম্ভীরায় জীবনের শেষ আঠারোটা বছর কাটিয়েছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব। অন্তর্ধানের আগে মহাপ্রভু অন্তিমবারের মতো বের হয়েছিলেন সেখান থেকেই। সেই গম্ভীরা ঘুরে ইতিহাস-রহস্যের অনুসন্ধান করলেন অনিরুদ্ধ সরকার। বিশদ

07th  April, 2024
জিপিও ২৫০

বুধবারের দুপুরবেলা। দোল-হোলি পর্বের টানা ছুটি কাটিয়ে এবার ছন্দে ফেরার পালা। কিন্তু একটু বড় ছুটি পেলেই মানুষের মতো শহরটাকেও জড়িয়ে ধরে আলস্য। অফিস-কাছারি খুলতেই আড়মোড়া ভাঙছে শহর। রাস্তাঘাটে অবশ্য তেমন ভিড় নেই। বিশদ

31st  March, 2024
অন্ধকূপেই ডাকঘরের জন্ম

শহরের বুক থেকে ইংরেজদের পুরনো কেল্লার সীমানা মুছে গিয়েছে কবেই। ফিকে হয়ে এসেছে নবাব সিরাজদ্দৌলার কলকাতা আক্রমণ, প্রথম যুদ্ধজয় এবং অন্ধকূপ হত্যার স্মৃতি। এমনটাই যে হবে, আগেই অনুমান করতে পেরেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও ইংরেজরা।
বিশদ

31st  March, 2024
নানা রঙের দোল

বারসানায় এখন পা-টুকু নিশ্চিন্তে রাখার জো নেই! দেহাতি, দক্ষিণ ভারতীয়, বাঙালি, বিদেশি কে নেই সেই বিখ্যাত ভিড়ে। প্রায় সবার মাথায় রংবেরঙের পাগড়ি। কারও হাতে আবির, তো কারও ক্যামেরা। একসপ্তাহ ধরে চলছে রঙখেলা। হোলি... লাঠমার।
বিশদ

24th  March, 2024
 ‘যত মত তত পথ’
পূর্বা সেনগুপ্ত

দক্ষিণেশ্বরের দেবালয়। বিরাট বারান্দার এক কোণের ঘরে বসে ভক্তসঙ্গে ধর্মপ্রসঙ্গ করছেন শ্রীরামকৃষ্ণ। দেবালয়ের পাঁচ টাকা মাইনের পুরোহিত হলে কি হবে...মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রাণী রাসমণি থেকে তাঁর জামাই মথুরবাবু, সকলেই তাঁকে সমীহ করে চলেন। বিশদ

17th  March, 2024
ওপেনহাইমার ও যুদ্ধবাণিজ্য

কয়েক ঘণ্টার মাত্র অপেক্ষা। লস এঞ্জেলসের আলো ঝলমলে ডলবি থিয়েটারে শুরু হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফিল্মি শোবিজ—অস্কার। এবারের অস্কার হুজুগে সারা পৃথিবীর সংবাদ শিরোনামে ‘ওপেনহাইমার’। ক্রিস্টোফার নোলানের এই সিনেমার সঙ্গেই অতীতকে ফিরে দেখলেন মৃন্ময় চন্দ।
বিশদ

10th  March, 2024
এলিট ইতিহাস
কলহার মুখোপাধ্যায়

সে নিজেই একটা ইতিহাস! তবু বেলা না যেতে খেলা তব গেল ঘুচে। তখন নাইট ক্লাব, হুক্কা বার, হ্যাং আউট, শপিং মলের কথা শোনালে মানুষ ভাবতো তামাশা করছে।
বিশদ

03rd  March, 2024
স্বেচ্ছামৃত্যু
 

গ্রিক ভাষায় ‘ইউ’ মানে ভালো আর ‘থ্যানেটোজ’ মানে মৃত্যু। দুইয়ে মিলে ইউথ্যানেশিয়া বা স্বেচ্ছামৃত্যু। গত বছর ভারতে আইনসিদ্ধ হয় প্যাসিভ ইউথ্যানেশিয়া। আইনত বৈধ হলেও, সেই পদক্ষেপকে ঘিরে দানা বাঁধছে সংশয়। স্বেচ্ছামৃত্যুর ইতিবৃত্ত খতিয়ে দেখলেন মৃন্ময় চন্দ
বিশদ

25th  February, 2024
আ’মরি বাংলা ভাষা

আসছে আরও একটা একুশে ফেব্রুয়ারি। হোয়াটসঅ্যাপ যুগে ক্রমে গুরুত্ব হারাচ্ছে দিনটি। তবুও বাংলা ভাষা বেঁচে আছে। থাকবেও। অসম ও বাংলাদেশ ঘুরে এসে লিখেছেন সুখেন বিশ্বাস। বিশদ

18th  February, 2024
সরস্বত্যৈ নমো নমঃ
কৌশিক মজুমদার

আমাদের নয়ের দশকের মফস্বলে উত্তেজনার খোরাক বলতে খুব বেশি কিছু ছিল না। বিশেষ করে আমরা যারা সেকালে ছাত্র ছিলাম, তাদের জন্য। মাস্টারমশাই আর অভিভাবকদের গণ ছাতাপেটাইয়ের ফাঁকে বুধবার সন্ধ্যায় টিভিতে চিত্রহার আর রবিবার সকালের রঙ্গোলিতে কিছু বস্তাপচা গান বাদে গোটা হপ্তাটাই কৃষিকথার আসর আর ‘খবর পড়ছি দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়’-এর মতো নেহাত নিরেস ছিল। বিশদ

11th  February, 2024
একনজরে
বুধবার রাতে নদীয়ার কালীগঞ্জের বল্লভপাড়ায় দু’টি বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হল। বাইকের গতি এতটাই বেশি ছিল যে এক যুবক ছিটকে একটি টোটোর কাচ ভেঙে ঢুকে যান। ...

ভোট মরশুমে চোখ রাঙাচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত গরম। আজ, শুক্রবার, লোকসভার দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। বৃহস্পতিবার আগামী পাঁচদিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক এবং উত্তরপ্রদেশের ...

মতুয়া ঠাকুরবাড়ির মন্দিরের তালাভাঙা এবং মারধর সংক্রান্ত মামলায় শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর পরিবারকে রক্ষাকবচ দিল হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতে নির্দেশ, তাঁদের বিরুদ্ধে আপাতত কোনও কঠোর পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিস। ...

কথা ছিল বাড়ি ফিরে পাকা বাড়ি দেওয়ার। সেই স্বপ্ন নিয়ে আর ফেরা হল না। কফিনবন্দি হয়ে ফিরছে পরিযায়ী কিশোর শ্রমিক। কর্মরত অবস্থায় বহুতল ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮৪- উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার ও সুরবাহার বাদক ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁর জন্ম
১৮৯৭- বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক নীতীন বসুর জন্ম
১৯২০- ভারতীয় গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজনের মৃত্যু
১৯২৪- সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যালের জন্ম 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.৫০ টাকা ৮৪.৯৩ টাকা
পাউন্ড ১০১.৪৭ টাকা ১০৫.৯২ টাকা
ইউরো ৮৭.১৪ টাকা ৯১.১৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭২,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৩,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,৪৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮১,৪৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮১,৫৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া ৬/১৩ দিবা ৭/৪৭। অনুরাধা নক্ষত্র ৫৮/৪০ রাত্রি ৩/৪০। সূর্যোদয় ৫/১১/৩০, সূর্যাস্ত ৫/৫৭/২৪। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৪ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৪ গতে ১০/১৮ মধ্যে পুনঃ ১২/৫১ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/১৫ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/৫৭ মধ্যে পুনঃ ২/৫৭ গতে ৩/৪১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ৩/৪১ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৪ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
১৩ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪। দ্বিতীয়া দিবা ৬/২৮। অনুরাধা নক্ষত্র রাত্রি ২/২৬। সূর্যোদয় ৫/১২, সূর্যাস্ত ৫/৫৯। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ৭/৩৮ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/১৫ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৪/২০ গতে ৫/৫৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩২ গতে ৯/০ মধ্যে ও ২/৫০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ৩/৩৪ গতে ৫/১১ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৭ গতে ১০/১১ মধ্যে। 
১৬ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: ৭১ রানে আউট সুনীল নারিন, কেকেআর ১৪৩/১ (১০.৫ ওভার) (বিপক্ষ পাঞ্জাব)

08:34:15 PM

আইপিএল: ২৭ বলে হাফসেঞ্চুরি ফিলিপ সল্টের, কেকেআর ১১৮/০ (৯ ওভার) (বিপক্ষ পাঞ্জাব)

08:33:07 PM

আইপিএল: ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরি সুনীল নারিনের, কেকেআর ৯৪/০ (৭.৪ ওভার) (বিপক্ষ পাঞ্জাব)

08:26:11 PM

আইপিএল: কেকেআর ৭০/০ (৫ ওভার) (বিপক্ষ পাঞ্জাব)

08:10:43 PM

আইপিএল: কেকেআর ৭/০ (১ ওভার)(বিপক্ষ পাঞ্জাব)

07:47:09 PM

আইপিএল: চোটের কারণে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে খেলছেন না কেকেআরের মিচেল স্টার্ক

07:28:29 PM