উকিল ও ডাক্তারদের কর্মব্যস্ততা বাড়বে। পত্নী/পতির স্বাস্থ্য আকস্মিক ভোগাতে পারে। মানসিক অস্থিরভাব। ... বিশদ
স্থিরতা ও ধৈর্য। একাগ্রতার মূল মন্ত্রই এই দুই তারে বাঁধা। তবে আধুনিক কালে এই মনঃসংযোগের ঠিকানা পাওয়া দুষ্কর। সোশ্যাল মিডিয়ার হাতছানি থেকে নিত্য জীবনের নানা টুকিটাকি ভাবনা— বিভ্রান্ত করে আমাদের। এর খেসারত সবচেয়ে বেশি দিতে হয় ছাত্রাবস্থায়। শুধু মন দিয়ে অঙ্কটা কষতে পারছে না বলে খাতায় থেকে যাচ্ছে ‘সিলি মিসটেক’, কোথাও আবার বারবার পড়িয়ে দেওয়া বিষয় ভুলে যাচ্ছে বাড়ির খুদে সদস্যটি। নম্বরে পড়ছে তারই ছাপ।
অমনোযোগী হওয়ার নেপথ্যে শুধুই ছাত্র-ছাত্রীদের দোষ দিতে নারাজ শিক্ষককুল। তাঁদের মতে, আধুনিক গ্যাজেটস, সব কাজে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের বাড়াবাড়ি, অসময়ে শিক্ষার্থীদের হাতেও স্মার্টফোন পৌঁছে যাওয়া সবকিছুর সমষ্টি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তৈরি হওয়া অস্থিরতা। বহির্জগতের সঙ্গে যোগাযোগে তাদের জগতের পরিসর বেড়েছে ঠিকই কিন্তু বাড়ির পরিসর হয়েছে ছোট। তার উপর রয়েছে ছোট পরিবারের প্রভাব। মন খুলে কথা বলতে পারার মতো পরিজনের সংখ্যাও কম। বাবা-মা কর্মব্যস্ত। বাড়ি ফিরে হয় মোবাইল নয়তো ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়ছেন। ভাই-বোন নেই। ঠাকুরমা-দাদু নেই। শিশু ও কিশোর মনের দোসর হয়ে ওঠার মতো কেউ নেই। ভাঙা মন ও দ্বিধাগ্রস্ত এক মানসিকতা নিয়ে দিন কাটায় শিশুরা। সুতরাং যাবতীয় গল্প, আলোচনা সবই সোশ্যাল সাইটে। এর সঙ্গেই গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকে গেমিংয়ের নেশা। আজকাল শিশুরাও কোডিং জানে, গেমিংয়ের নানা কঠিন ফর্মুলা মুখস্থ বলে দেয়। কিন্তু সেই শিশুই দেখা যাচ্ছে সহজ অঙ্ক ভুল করছে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘মনোযোগ বৃদ্ধি ও একাগ্রতার ক্ষেত্র অনেকটাই পারিবারিক বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। সন্তানকে যত শান্তি ও সুন্দর শৈশব দেবেন, যে কোনও কাজে তার মনোনিবেশ তত বেশি হবে। সন্তানের বয়স ১৬ পেরলে তার বন্ধু হয়ে ওঠার কথা আমরা বলি বটে, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, ষোলোটা বছর ধরে একাকিত্বের মোড়কে জীবন কাটিয়ে ফেলা কিশোর বাবা-মাকে হঠাৎ বন্ধু হয়ে ওঠার চেষ্টা করতে দেখলে তখন আর তাঁদের অতটা বিশ্বাস করে না। আগেই বাড়ি ও পরিবার সম্পর্কে তার মনে নেতিবাচক ধারণা মজুত হয়ে যায়। তাই বন্ধু হতে হবে প্রথম থেকে। তবে বাবা-মায়ের প্রতি সম্ভ্রম যেন চলে না যায়। ওকে মন খুলে কথা বলতে দেওয়ার পরিসর দিতে হবে। মনের ভিতর চলা নানা প্রশ্ন ও দ্বিধা যাতে ও ভাগ করে নিতে পারে অভিভাবকদের সঙ্গে।’ বিশেষ করে ১৬-১৮ বছর বয়সি কিশোরদের নানা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিতে হয়। একাগ্রতা, মনোযোগ দুই-ই তাদের কেরিয়ারে বেশি প্রয়োজন হয়। এসময় তাদের নানা প্রত্যাশার চাপও পূরণ করতে হয়। তাই শিশুকাল থেকেই মনোযোগ বাড়ানোর পদ্ধতি জানতে হবে।