বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
নেশা তো বিচিত্র বস্তু! কখন যে তা আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে বোঝা মুশকিল। এই যেমন বলিউডের শাহেনশা অমিতাভ বচ্চনের কথাই ধরুন। ঘড়ির নেশায় মত্ত। অপ্রয়োজনেও ঘড়ি কেনেন যখন তখন। অথচ সময় দেখেন মোবাইল ফোনে! আশ্চর্য, তাই না? পুত্র অভিষেক বললেন, ‘মায়ের দেখাদেখি বাবাও এক সময় হাতে দু’টো ঘড়ি পড়তেন। সেটা আমার ছাত্রাবস্থায়। আমি তখন ইউকে-তে থাকতাম। তাই আমার সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতেই এই বিচিত্র শখে পেয়ে বসেছিল বাবাকে। তারপর ‘বুডঢা হোগা তেরা বাপ’ ছবিতে বাবা দু’টো ঘড়ি পরাটাকেই নিজের স্টাইল স্টেটমেন্ট করে ফেললেন। এখন অবশ্য আমি দেশে ফিরে এসেছি। অতএব বাবাও ঘড়ির ক্ষেত্রে দু’টো থেকে একটায় নেমে এসেছেন।’ ঘড়ির ব্যাপারে বিগ বি-র কোনও পক্ষপাত নেই। তিনি এক এক সময় এক এক ব্র্যান্ডের ঘড়ি পরেন। অল্প বয়সে রোলেক্স ভালোবাসতেন। মনে হতো হাতে একখানা রোলেক্স ঘড়ি থাকলেই বুঝি বড়লোকিয়ানা দেখানো যায়। কিন্তু তারপর লঁজিনি ঘড়ির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হলেন। এখন আবার ওই ব্র্যান্ডের প্রতিই তাঁর ঝোঁক বেশি। সিনিয়র বচ্চনের সবচেয়ে পছন্দের লঁজিনি ঘড়িটির দাম ২,৩২,০১৩ টাকা। ঘড়ির ক্ষেত্রে ফেভারিটিজম নেই, তবে দোকানের ক্ষেত্রে আছে। মুম্বইয়ের মোতি মহল রেস্তরাঁর ঠিক পাশে আর্ট অব টাইম ঘড়ির দোকান ছাড়া অন্য কোনও দোকান থেকেই নাকি ঘড়ি কেনেন না অমিতাভ বচ্চন।
কিং খানের ভালোবাসা
তিনি যখন মাত্র টিনএজার, তখনই ট্যাগ হোইয়া ঘড়ির প্রেমে পড়েছিলেন। তিনি বলিউডের বাদশাহ শাহরুখ খান। তাঁর কথায়, ‘আমার যখন বছর পনেরো বয়স তখন সিনেমার হিরোদের হাতে টাইগার উডস লিঙ্ক ঘড়ি দেখতাম আর ভাবতাম, আমার কবে এমন সৌভাগ্য হবে? ঘড়িগুলোর একটা আলাদা স্টাইল রয়েছে। সেই স্টাইলে মুগ্ধ হয়েছিলাম আমি। তবে ঘড়ির দেখনদারিতে যতই মোহিত হই না কেন, তখনও ট্যাগ হোইয়া আর টাইগার উডস যে একই ব্র্যান্ডের নামান্তর তা-ই জানতাম না। ট্যাগ হোইয়া-র সঠিক উচ্চারণও জানা ছিল না। তবু শুধুমাত্র চোখের দেখাতেই ওই ঘড়ি আমায় মুগ্ধ করেছিল।’ এখন অবশ্য ট্যাগ-এর ঘড়ির সঙ্গে টিম করে লিঙ্কন এস শেপের ব্রেসলেটও পরেন কিং খান। ট্যাগ-এর সব ঘড়িই ভালো, তবে তারও মধ্যে শাহরুখ খানের সবচেয়ে পছন্দের ঘড়িটির দাম ৩,৪৩,৫৭৬ টাকা। নায়কের বক্তব্য, কালো ডায়ালের ঘড়িই সবচেয়ে এলিগ্যান্ট। একটা পুরুষালি ব্যাপার আছে কালো রঙের ডায়ালের মধ্যে। ঘড়ির ডায়াল রঙিন হলে নাকি তা ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজ হয়ে যায়। তখন আর ঘড়ির ফর্মাল লুকটা পুরোপুরি থাকে না।
শচীনের পছন্দ হাতে গোনা যায় না
মাস্টার ব্লাস্টার শচীন তেন্ডুলকর বলেন, ঘড়ি তাঁর এতই প্রিয় যে কারণে অকারণে সবসময় িতনি ঘড়ি কিনতে ভালোবাসেন। আর কেনার সময় মোটেও হিসেব করে কেনেন না। ক’টা ঘড়ি রয়েছে তাঁর কালেকশনে? এমন প্রশ্নে অবাক হন তিনি। বলেন, পছন্দের জিনিস আবার কেউ গোনে না কি! তাই ঘড়ি তাঁর অগুনতি। দু’হাতেও গুনে শেষ করা যাবে না। তা মাস্টার ব্লাস্টারের পছন্দের ঘড়িটি কি? সেটি ওদোমার পিগে রয়্যাল ওক অফশোর কালেকশন। আর দাম? ২৯,৯৯,৮৩৯ টাকা! আরে বাবা, পছন্দের জিনিসের দামেরও হিসেব করা যায় না। শচীনের কথায়, পছন্দের তালিকায় ওদোমার পিগেই প্রথম, তবে একমাত্র নয়। এছাড়াও ফ্র্যাঙ্ক মুলার, রোলেক্স সহ আরও নানা ব্র্যান্ড রয়েছে। মজার কথা হল, এ হেন ব্যক্তিত্বের প্রথম ঘড়িটিই ছিল নকল! শচীন যখন ক্লাস ফোরের ছাত্র তখন একটা নকল ক্যাসিও ঘড়ি উপহার পেয়েছিলেন। সেই সময় কিন্তু এত বাছবিচার ছিল না। প্রথম ঘড়ি পেয়ে আপ্লুত হয়ে গিয়েছিলেন শচীন। তারপর নানা ঘাটের জল বিভিন্ন জায়গায় গড়িয়েছে, শখ-নেশা-পছন্দ সবই বদলেছে একে একে। তাহলে আর ঘড়ির পছন্দ বদলাতে বাধা কোথায়?
ঐশ্বর্যের সাজের অঙ্গ ঘড়ি
বচ্চন পরিবারের বউরানি, ঐশ্বর্য রাই বচ্চন ঘড়ি ভীষণ ভালোবাসেন। ঘড়ি তাঁর সাজের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তিনি বলেন, হাতে একটা ঘড়ি না থাকলে সাজটা কখনও সম্পূর্ণ হয় না। কেমন ঘড়ি পছন্দ করেন অ্যাশ? লঁজিনি তাঁর সবচেয়ে প্রিয়। তিনিই এই ঘড়ির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরও বটে। বললেন যে ব্র্যান্ডের হয়ে প্রচারে নেমেছি, সেই ব্র্যান্ডই যে পছন্দের তালিকায় সেরা হবে, তা তো বটেই। তবে এই ব্র্যান্ডের ঘড়ির আবার অনেক মডেলও তো আছে, তাই সব মডেলের বিচার করলে লঁজিনির দোলসেভিটা কালেকশনের ঘড়িগুলো তাঁকে বেশি আকর্ষণ করে। এই কালেকশনটি নাকি সবচেয়ে এলিগ্যান্ট। অ্যাশের পছন্দের দোলসেভিটা ঘড়িটির দাম অবশ্য প্রকাশ করেননি তিনি। শুধু বলেছেন, বিভিন্ন রেঞ্জে এই ঘড়ি পাওয়া যায়। ১ লক্ষ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত দামের হেরফের হয়।