কর্ম, বিদ্যা ক্ষেত্রে উন্নতির যোগ। আয় ব্যয় ক্ষেত্রে সমতার অভাব। স্বাস্থ্য ভালো থাকলেও আঘাতযোগ থাকায় ... বিশদ
পশ্চিমবঙ্গে ভোট নেওয়া হবে ৬টি বিধানসভা আসনের জন্য: কোচবিহার জেলার সিতাই, আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট, উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি ও হাড়োয়া, মেদিনীপুর জেলায় মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়ার তালড্যাংরা। লোকসভার উপনির্বাচন হবে কেরলে ওয়েনাড় এবং মহারাষ্ট্রে নানদেদ আসনে। উপনির্বাচনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বিধানসভা আসন উত্তরপ্রদেশে (৯)। তারপরেই রাজস্থান (৭) ও পশ্চিমবঙ্গ (৬)। এই আসনগুলির মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক দখলে রয়েছে কংগ্রেসের (১৩)। সংখ্যার দিক থেকে পরবর্তী দুটি গুরুত্বপূর্ণ দলের নাম যথাক্রমে বিজেপি (১১) ও তৃণমূল কংগ্রেস (৫)। উল্লেখ্য, বাংলার মোট ৬টি আসনের মধ্যে বিজেপির দখলে আছে মাত্র একটি। এই উপনির্বাচন কোনও রাজ্য সরকারে পরিবর্তন আনবে না, কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য একাধিক রাজ্যে তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক রূপরেখা এঁকে দিতে পারে। অন্যদিকে, হেমন্ত সোরেন গ্রেপ্তার ইস্যুতে ঝাড়খণ্ডে বিজেপি যথেষ্ট বেকায়দায়। আদিবাসী ভোটাররা গেরুয়া শাসক দলের উপর কতটা রুষ্ট তা তাঁরা বুঝিয়ে দিয়েছেন সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে। উনিশের বিধানসভা ভোটে জিতে হেমন্ত মুখ্যমন্ত্রী হন। সেবার জেএমএম মোদি-শাহের পার্টিকে রুখেছিল কংগ্রেস ও আরজেডির সঙ্গে জোট গড়ে। বাড়া ভাতে ফেলা ছাই সরাতে পাঁচবছর যাবৎ বিজেপি কম ফিকির করেনি। এমনকী আর্থিক কেলেঙ্কারির দায় চাপিয়ে গুরুজির ছেলেকে অ্যারেস্ট করিয়েও রাঁচির দখল তাদের অধরা রয়ে গিয়েছে। উল্টে লোকসভা ভোটের রেজাল্ট দিয়ে রেখেছে হিতে বিপরীত কিছু ঘটারই সংকেত! এছাড়া মহারাষ্ট্রের কুর্সি নিয়ে গত পাঁচবছরে বিজেপি যে কুনাট্য মঞ্চস্থ করেছে, তার দৃষ্টান্ত ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাস প্রত্যক্ষ করেছে কমই। বিশেষত বিজেপির চালেই সেখানে শিবসেনা এবং এনসিপির মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের ছত্রখান অবস্থা! এজন্য অংশত ফুঁসছে মারাঠা স্বাভিমান। ক্ষমতা ফিরে পেতে, প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসকে মোদি বিঁধতে চেয়েছেন বিভাজনের তিরে: ওবিসি, আদিবাসী এবং দলিত ঐক্য ও দরদের নামে। সব মিলিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরে রামধাক্কা খাওয়া বিজেপির মনে এখন মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ড নিয়ে শতেক প্ল্যান।
বিজেপির রণকৌশল নিয়ে সাধারণভাবে আপত্তির কিছু নেই। আপত্তি শুধু সেখানেই, যেখানে কেন্দ্রীয় শাসক বা অন্যকোনও রাজনৈতিক শক্তিকে পরোক্ষে বাড়তি ও অন্যায় সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়। এমনটা হলে যুগপৎ অর্থ ও গুরুত্ব হারায় নির্বাচন। নষ্ট হয় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা। বৃহত্তম গণতন্ত্রের গুণমান নিয়ে বিরূপ প্রশ্ন বরাবরের। ভারতকে ‘ইলেক্টোরাল অটোক্রেসি’র ঊর্ধ্বে ওঠার পক্ষেই সওয়াল করে গণতান্ত্রিক দুনিয়া। তাই সদাসতর্ক পদক্ষেপই কাম্য, সেখানে কমিশনের ভূমিকায় সামান্য ত্রুটিও ভারতের গণতন্ত্রকে এগিয়ে দেওয়ার বদলে পিছিয়েই দেবে। বিষয়টি মাথায় রেখেই অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে হবে কমিশনকে, যাতে এই নির্বাচনও সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হতে পারে।