ব্যবসার গতি ও বেচাকেনার সঙ্গে লাভও বাড়বে। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। শত্রু সংখ্যা বাড়বে। ... বিশদ
কালীঘাট মেট্রো থেকে মিনিট সাতেকের হাঁটা পথ। শীর্ণকায় গোপাল ব্যানার্জী লেনের শেষ মাথায় পুরনো কাঠের দরজা স্বাগত জানাতে তৈরি। চুন, সুরকির দেওয়াল, কড়ি-বরগা। টানা লাল মেঝের বারান্দা ঘিরেই সারি সারি ঘর। দেওয়ালে রবীন্দ্রনাথ, নেতাজি, শরৎ চন্দ্রর পাশেই মোহন বাগানের অমর একাদশের ছবি। শিবদাস, অভিলাষদের গলায় টাটকা ফুলের মালা। মেজোকত্তার ঘরে আলো আঁধারি আর প্রাচীন পালঙ্কের মাঝে যেন এক টুকরো মোহন বাগান। শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের নানা স্মারকে ঠাসা আলমারি। মোহন বাগানের দুর্মূল্য স্যুভেনির, ঘড়ি, পেন স্ট্যান্ড, জার্সি, টুপি, ডাকটিকিট, পেয়ালা। পরম মমতায় সাজিয়ে রেখেছেন তাঁরা। প্রবীণ সোমেশ্বর মোদকের স্মৃতিচারণ, ‘সেবার ক্লাবের শতবর্ষ। হরিদ্বার থেকে জলের কলস এল গঙ্গার ঘাটে। সেই কলসি মাথায় নিয়ে তাঁবুতে এলেন চুনী গোস্বামী, গুরবক্স সিং, ধীরেন দে’রা। বিশাল মিছিলে আমিও হেঁটেছিলাম তাঁদের সঙ্গে। মোহন বাগানই আমাদের যৌবনের উপবন। শেষ বয়সের বারাণসী।’
সোমবার বড়ঘরে একসঙ্গে ম্যাচ দেখছেন সবাই। জয়ের পর রাতেই লুচি, মাংসের এলাহি আয়োজন। পরদিন মাস্ট গলদা চিংড়ির মালাইকারি। মঙ্গলবার সকালে কালীঘাট বাজার থেকে বড় সাইজের চিংড়ি পাঠিয়েছেন চেনা বিক্রেতা। হাসি মুখে জয়ন্ত মোদক জানালেন, ‘বুঝলেন দাদা, চিরকাল রেলায় আছে, থাকবে মোহন বাগান।’
শরিকি বাড়ি। অন্নপ্রাশান হোক বা বিয়ের কার্ডে শুধুই সবুজ-মেরুন রং। এমনকী, অশৌচের সময় কেউ প্রিয় ক্লাবে পা রাখেন না। বাড়ির আড্ডায় ঘুরে ফিরে সেই মান্নাবাবু (শৈলেন), ভটজাযদের (সুব্রত) কথা। বারপুজো হোক বা শিল্ড জয়ের ২৯ জুলাই, প্রাণের ক্লাবে ঢুঁ না মারলে জীবন বৃথা। মোহন বাগানই ওদের বেঁচে থাকার অক্সিজেন। জীবনের রং সবুজ-মেরুন। প্রজন্মের পর প্রজন্ম একই মন্ত্রে বিশ্বাস করে, বলে ওঠে-‘জয় মোহন বাগান।’