অতিরিক্ত কর্মের চাপ গ্রহণ করে বেকায়দায় পড়তে পারেন। নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। আয় বাড়বে। ... বিশদ
১৬নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে বেশ কিছুটা দূরে গোটপোতা গ্রাম। শনিবারও সেই গোটপোতা থেকে হেঁটে নিকটবর্তী মঙ্গলদ্বারিতে আসা যাওয়ার সুযোগ ছিল না। প্লাবিত জমির উপর দিয়ে ছুটছে স্পিডবোট। ওই জলযানে চড়ে গ্রামবাসীরা আসা যাওয়া করছেন। চার মাসের শিশুপুত্রকে স্পিডবোটে চাপিয়ে ওই গ্রামের শেখ নুরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী জাতীয় সড়কে এনে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। পাঁশকুড়া ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে এদিন মঙ্গলদ্বারি ও লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের জন্য একটি স্পিডবোট দেওয়া হয়।
এনএইচ-১৬ কর্তৃপক্ষ ট্যাঙ্কারে পানীয় জল ভরে জাতীয় সড়ক বরাবর প্রতিটি জায়গায় দুর্গতদের সরবরাহ করছে। পানীয় জল সংগ্রহ করতে গ্রামের ভিতর থেকে মানুষজন বন্যার জল পেরিয়ে জাতীয় সড়কে আসছেন। এনএইচ কর্তৃপক্ষের ঠিকাকর্মী কার্তিক মাইতি ট্যাঙ্ক থেকে দুর্গতদের পানীয় জল সরবরাহ করেন। কার্তিকবাবু বলেন, ১২হাজার লিটার জল ভরেছি। বিভিন্ন এলাকায় দাঁড়িয়ে জল নেওয়ার জন্য হাঁক দিচ্ছি। মানুষজন খালি ড্রাম, হাঁড়ি, কলসি এনে জল নিচ্ছেন।
পাঁশকুড়া শহরের সাত-আটটি ওয়ার্ড এখনও জলমগ্ন। পাঁশকুড়া স্টেশন বাজারে রাস্তা থেকে নামলেও দু’ধারে ফুটপাতের উপর অনেকটাই জল। পাইকারি সব্জির বাজারে অনেক দোকানের ভিতর কুমড়ো, টমেটো ও অন্যান্য সব্জি মজুত ছিল। বানের জলে সেসব পচে গিয়েছে। তারপর ব্যবসায়ীরা এদিন সেইসব পচা সব্জি বাইরে ভাসিয়ে দেন। দুর্গন্ধে স্টেশন বাজারে নাক চেপে যাতায়াত করতে হচ্ছে। শহরের ৯নম্বর ওয়ার্ড দিয়ে ওইসব পচাগলা সব্জি সমেত জল গড়াচ্ছে। তাতে এলাকা দূষিত হচ্ছে। শহরের আংশিক এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা সচল করা হয়েছে। যদিও গ্রামীণ এলাকা এখনও বিদ্যুৎহীন। শনিবার পাঁশকুড়া থেকে তমলুক বাস পরিষেবা চালু হয়েছে। স্টেশন বাজারে হাঁটুসমান জল থাকায় পাঁশকুড়া স্টেশন সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে চাঁপাডালি হয়ে বাস আসা-যাওয়া করছে।
শুক্রবার থেকেই কংসাবতী নদীতে জল একেবারে কমে গিয়েছে। নদীর চর থেকে জল নেমে গিয়েছে। ভাঙা নদীবাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে পুরোদমে। নদীতে জল কমলেও প্লাবিত এলাকা থেকে জল কমতে সময় লাগছে। সেজন্য দুর্ভোগ বাড়ছে। প্রশাসনিক হিসেব অনুযায়ী, এই বন্যায় পাঁশকুড়ায় প্রায় ৬০হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। শনিবারও ২২টি ত্রাণশিবির খোলা ছিল। -নিজস্ব চিত্র